কাঁঠাল, বর্তমান সময়ে সহজলভ্য একটি ফল৷ কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে (এঁচোড়) খাওয়া হয়, আর পাকা অবস্থায় কাঁঠালের কোয়া খাওয়া হয়৷ একটি কাঁঠাল থেকে প্রচুর কোয়া পাওয়া যায়৷ দিনে দু তিনটি কোয়া আমাদের শরীরে একদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিনের চাহিদা মেটায়৷
কাঁঠালের বৈজ্ঞানিক নাম- Artocarpus heterophyllus. ভারতে যে সব প্রজাতির কাঁঠাল চাষ হয় সেগুলি মূলত গালা ও খাজা এই দুই ভাগে বিভক্ত৷ এছাড়া রয়েছে, পদ্মরাজ, রুদ্রাক্ষি, রসখাজা, সিঙ্গাপুর, গোলাপগন্ধা, সিলোন, বারোমাসী, চম্পাগন্ধা প্রভৃতি৷ গলা কাঁঠালে সাধারণত খোসার গায়ে কাঁটাগুলো খুব একটা চ্যাপ্টা হয় না এবং এটি পাকার পর একটু লালচে-হলুদ বর্ণের হয়। খাজা কাঁঠাল অপেক্ষাকৃত কম রসালো এবং এর খোসার রঙ পাকার পরও সবুজ বর্ণের থাকে৷ খাজা কাঁঠালের গায়ের কাঁটাগুলো চ্যাপ্টা, মসৃণ এবং বড় হয়।
এই কাঁঠাল প্রচুর গুণে সমৃদ্ধ৷ শরীরকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে এর জুড়ি মেলা ভার৷ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এছাড়া এতে থাকা বিভিন্ন উপাদান ক্যান্সারকে দূরে রাখতে সাহায্য করে৷ এই কাঁঠাল মধুমেহ রোগীদের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়৷ এছাড়া এতে থাকা ভিটামিন কবি ডায়াবেটিসের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়৷ তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তবেই এই ফল খাওয়া উচিত৷
বিভিন্ন গবেষণার দাবি অনুযায়ী, কাঁঠালে বিদ্যমান ভিটামিন সি, বি ৬, হার্টকে রক্ষা করার পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে৷ এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়৷
এর পাশাপাশি পরিপাকে সাহায্য এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও কাঁঠাল অবদান রয়েছে৷ ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে শরীরের জন্য বেশি করে প্রয়োজনীয়৷
এছাড়া ভিটামিন সি, এ, এই দুটিই আমাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে৷ আর এক্ষেত্রে তাই কাঁঠাল খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷ আলসার রুখতে কাঁঠালে বিদ্যমান ফাইবার প্রয়োজনীয়৷ সর্দি-কাশি, জ্বরের মতো সাধারণ নানা রোগকে প্রতিহত করে এই ফল৷ সেই সঙ্গে ত্বককে বলিরেখার হাত থেকেও কিছুটা রক্ষা করে৷
কাঁঠালে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের জোর বাড়ায়৷ অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকিও হ্রাস করে৷ রক্তাল্পতা ঠিক করতেও সাহায্য করে এই ফল৷ তবে মনে রাখবেন, বেশি পরিমাণ কাঁঠাল বদহজমের কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে৷ তাই পরিমিত পরিমাণেই এটি খাওয়া উচিত৷
বর্ষা চ্যাটার্জি