যে কোনও মহিলার জীবনে ঋতুস্রাব যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি মেনোপজও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মেনোপজ এমন একটি অবস্থা যখন কোনও মহিলার মধ্যে মাসিক চক্রের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এটি মাসিক চক্রের শেষ পর্যায়।
কোন বয়সে মেনোপজ হয়?
সাধারণত, একজন মহিলার মাসিক চক্রের বন্ধর সময়কাল ৪৫-৫০ বছর। যদি কোনো মহিলার ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায় এবং ১২ মাস ধরে কোনও মাসিক চক্র না হয়ে থাকে তবে এটি ধরে নেওয়া যেতে পারে যে তিনি মেনোপজ পর্যায়ে প্রবেশ করেছেন। কিছু মহিলা ৪০ বছর বয়স থেকে প্রাক-মেনোপজের লক্ষণগুলি দেখাতে শুরু করেন। কিন্তু প্রত্যেক নারীর মেনোপজের সময়কাল আলাদা আলাদা হয়।
মাসিক চক্র বন্ধ হওয়ার তিনটি পর্যায়
মনোপজের তিনটি পর্যায় হয়। এই তিনটি ধাপের মধ্যে দিয়ে একজন নারী মনোপজের পর্যায় পৌঁছন। প্রথম ধাপটি হল, প্রিমেনোপজ, দ্বিতীয়টি হল- মেনোপজ এবং তৃতীয় – পোস্টমেনোপজ।
আরও পড়ুনঃহৃদরোগীদের জন্য টিপস: গ্রীষ্মে অনুসরণ করুন এই 5টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস
মেনোপজ শুরু হওয়ার তিন থেকে পাঁচ বছর আগে, মহিলাদের শরীরে প্রিমেনোপজের একটি অবস্থা তৈরি হয়। এই অবস্থাটি ১০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এবং ধীরে ধীরে এই পর্যায় থেকে একজন নারী মেনোপজ অর্থাৎ মাসিক থামার পর্যায়ে প্রবেশ করে। এর পরে মেনোপজ-পরবর্তী অবস্থা তৈরি হয়। বেশিরভাগ মহিলা মেনোপজ এবং প্রিমেনোপজের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন না।
মেনোপজের লক্ষণ
হঠাৎ জ্বর।
যোনিতে পরিবর্তন হতে পারে ।
রাতে বেশি ঘাম হওয়া।
ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
মানসিক পরিবর্তন হতে পারে।
মাসিক চক্রে অনিয়ম দেখা যায়। বেশি রক্তক্ষরণ হওয়া।
ক্লান্তি এবং দুর্বলতার পাশাপাশি, জয়েন্টগুলি এবং হাড়গুলিতে ব্যথা অনুভব করা।
অনিয়মিত পিরিয়ড।
অনিয়মিত পিরিয়ড বলতে আমরা অত্যধিক বেশি বা কম দু’ ধরনের স্রাবকেই বোঝাচ্ছি। কারও কারও মাসে একাধিকবার ব্লিডিং শুরু হয়ে যায়, কারও খুব কম ব্লিডিং হয়। কারও ক্ষেত্রে আবার তিন-চার মাস দেখাই মেলে না পিরিয়ডের। টানা 12 মাস ঋতুস্রাব না হলে বুঝতে হবে যে আপনার ঋতুবন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে পিরিয়ড না হলে একবার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন এবং প্রেগন্যান্সি টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি গর্ভবতী নন। অতিরিক্ত রক্তপাত হলে কিন্তু শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে, তাই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন নিয়মিত।
মনোপজের সময় কি কি করবেন?
মনোপজের সময় মহিলাদের শরিরে অনেক রকমের পরিবর্তন দেখা দেয়। নানা রকমের সমস্যা তৈরি হয়।তাই মনোপজের সময় মহিলাদের শরিরের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।এই সময় মহিলাদের যেসব বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে সেগুলি নিচে দেওয়া হল।
৪০ বছর বয়সের পরে, ডাক্তারের কাছে মেনোপজ সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জানতে হবে।এবং সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভস তৈরি করতে হবে এবং তেলযুক্ত, মশলাদার খাবার, ক্যাফিন, ধূমপান, অ্যালকোহল এড়িয়ে চলতে হবে।
আরও পড়ুনঃ বিকেলে ঘুমালে কি হয় জানেন ?
মেনোপজের সময় নানা রকম শারিরিক সমস্যা হতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর ডায়েটের পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা ও যোগাভ্যাসের অভ্যাস আপনাকে সুস্থ রাখতে পারে।
মনোপজের কারণে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে, ডাক্তারের সাথে কথা বলতে পারেন। কিন্তু নিজে থেকে কোনো ওষুধ খাবেন না। ডাক্তারের সাথে কথা বলেই যেকোন ওষুধ খাওয়া উচিৎ।