আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনায় বর্তমানে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই মরশুম বদলের জেরে প্রকট হচ্ছে নানা ধরনের রোগ। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে একটি অন্যতম প্রধান রোগ হল হাঁপানি বা অ্যাজমা। এটি শ্বাসজনিত একটি ক্রনিক রোগ। আসলে সারা বছর বিভিন্ন ধরনের অ্যালোর্জেন আমাদের শরীরের সংস্পর্শে আসে যেমন বসন্তকালে পরাগ রেণু আবার প্রখর গরমে ধুলো বালি। এগুলির সংস্পর্শে এসেই ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফলে শ্বাস জনিত রোগ এই অ্যাজমা বা হাঁপানির প্রকট হয়।
অ্যাজমা বা হাঁপানির প্রাথমিক লক্ষণগুলি
বেশিরভাগ মানুষই এই রোগ বুঝতেই পারেন না। অথচ তাঁদের শরীরে বাসা বেঁধে ফেলে হাঁপানি। শ্বাস নিতে কষ্ট হলে অনেকেই মনে করেন সাধারণ শ্বাসকষ্ট এবং এড়িয়ে যান। যদি হটাৎ হটাৎ করে আপনার শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাহলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক হন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ফুসফুসে অক্সিজেন ঠিকমতো না পৌঁছালে এই ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। যেহেতু অক্সিজেনের প্রদাহ কমে যায় তাই শ্বাস - প্রশ্বাস নেওয়ার সময় সাঁসাঁ করে আওয়াজ হয়।
অতিরিক্ত কাশি হওয়া হাঁপানির অন্যতম প্রধান লক্ষণ। শীতকালে কুয়াশার কারণে অনেকের কাশি শুরু হয় আবার গরমে ধুলো বালির কারণেও অনেক সময় কাশি হয়। যদি কাশি দীর্ঘদিন স্থায়ী হয় সেক্ষেত্রে আপনাকে সজাগ হতে হবে। এই লক্ষণ গুলি দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুনঃ বুঝুন শিশুমনের গতিপ্রকৃতি! সঠিকভাবে বেড়ে উঠছে তো আপনার খুদে?
আরও একটি লক্ষণ হল শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে চাপ অনুভব করা। বুক ফুলে ওঠে অথবা বাতাস বেরিয়ে যায় ফলে বুকের মধ্যে টান বাড়ে। শারীরিক অস্বস্তি অনুভব হয়।
ইনহেলেশন থেরাপি
এই রোগটির হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ যেহেতু আবহাওয়ার পরিবর্তন তাই সেক্ষেত্রে আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে অনেক সতর্ক থাকতে হবে। ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। পাশাপাশি এই রোগ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম প্রধান অস্ত্র হল ইনহেলেশন থেরাপি। তাই ডাক্তারের পরামর্শ মত ইনহেলার ব্যবহার করুন। অনেকেই মনে করেন এই রোগ ওষুধের মাধ্যমে সেরে যাওয়া সম্ভব কিন্তু ইনহেলার এই রোগকে জব্দ করার মোক্ষম অস্ত্র। কারণ ইনহেলারের মাধ্যমে ওষুধ সরাসরি ফুসফুসে যেতে পারে। তবে কখন আপনার ইনহেলার প্রয়োজন এবং কখন ওষুধ সেক্ষেত্রে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করেই সিদ্ধান্ত নিন।
আরও পড়ুনঃ ত্বকের ভেতর চলে বেড়াচ্ছে পোকা! উঠে এল রোমহর্ষক ছবি, আঁতকে উঠেছে ডাক্তারও
হোমিওপ্যাথির কিছু ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন
অনেকেই আছেন যারা অ্যালোপ্যাথি ওষুধ ব্যবহার করতে পছন্দ করেননা। তাই তাদের জন্য কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধের সন্ধান রইল।
Baccilinum- হাঁপানির দাপট প্রধানত রাতে বেশি বাড়ে। তাই রাতে যাতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা না হয় সেক্ষেত্রে এই ওষুধ ব্যাবহার করতে পারেন। সমস্যা হীন নিদ্রার জন্য এই ওষুধের তুলনা নেই।
Aconite- হাঁপানির সময় যাঁদের প্রবল কাশি হয় তাঁরা এই ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও বুকে চাপ অনুভব, বুকে টান ইত্যাদির ক্ষেত্রেও এই ওষুধ ভীষণভাবে কার্যকরী। তবে যে কোনও ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুনঃ আপেলে রয়েছে মৃত্যুফাঁদ! গবেষণায় উঠে এল অবিশ্বাস্য তথ্য, জেনে নিন
Asthma Diet
এটি এমন একটি রোগ যা নির্মূল করা একেবারেই সম্ভব নয়। তবে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই আপনাকে আপনার নিয়মিত খাবারের রুটিনের দিকেও একটু খেয়াল রাখতে হবে। শরীরের ওজন যাতে না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রচুর শাকসবজি, ফল খেতে হবে। খাবারের পাত থেকে বাদ দিন সালফেট। সালফেট চিংড়ি, আচারে বেশি থাকে তাই এড়িয়ে চলুন। ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম খেতে পারেন।