দুপুরে খাওয়ার পর একটু ভাত ঘুম না দিলে ঠিক বাঙালী বলে মনে হয়না। কিন্তু আপনি কি জানেন বিকেলে কতটা ঘুমালে শরীর ও মন যে চাঙা হয়। গবেষকদের মতে, বিকেলের ঘুম শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপকার করে। ২০১৯ সালে পিয়ার-রিভিউড জার্নাল হার্টে প্রকাশিত গবেষণায় বিকেলের ঘুম ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমার মধ্যে যোগসূত্র পাওয়া গেছে।
আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিকেলের ঘুম স্মৃতিশক্তি ও শিখন ক্ষমতা বাড়ায়, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এবং মেজাজ ভালো রাখে।
বিকেলে কতক্ষণ ঘুমানো উচিত?
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া আরভিনের কগনিটিভ নিউরোসায়েন্টিস্ট ডা. সারা মেডনিক বলেন, ‘এমনকি বিকেলে ৫ মিনিটের ঘুমও যথেষ্ট উপকারী।’ তিনি এই ধরনের ন্যাপ নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন তা নয়, তবে হাতে পর্যাপ্ত সময় না থাকলে এটা থেকেও উপকৃত হতে পারবেন। গবেষণায় দেখা গেছে, পাঁচ মিনিটের ন্যাপেও স্মৃতিশক্তি বাড়ে এবং ঘুমের ভাব কমে। কর্মব্যস্ততার কারণে সময় খুবই অপ্রতুল হলে অন্তত ৫-১০ মিনিটের জন্য ঘুমিয়ে নিতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ
ডা. মেডনিকের মতে, ২০ থেকে ৩০ মিনিট ঘুম হলো সুন্দর একটা সময়। শরীর ও মনকে সম্পূর্ণ শিথিল করতে এতটুকু সময়ই যথেষ্ট। এতে শরীর-মনের সতেজতা বাড়ে ও চাপ কমে। ডা. মেডনিক বলেন, ‘বিকেলে ২০-৩০ মিনিটের জন্য ঘুমানোর আরেকটি আরেকটি উপকারিতা হলো, স্মৃতি সুসংহত হতে থাকে।’
বিকেলে ৬০ মিনিটের ঘুমে জাদুকরী কিছু ঘটে থাকে। ডা. মেডনিক বলেন, ‘ ৬০ মিনিটের ঘুমটা গভীর হয়ে থাকে। এসময় শরীর টিস্যু মেরামত করে, রোগপ্রতিরোধ তন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ায় এবং শক্তিভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে নেয়। ২০১৯ সালে ইয়েল জার্নাল অব বায়োলজি অ্যান্ড মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণা মতে, গভীর ঘুম স্মৃতিভাণ্ডারে তথ্য বাড়ায় এবং অন্যান্য জ্ঞানীয় কার্যক্রমের উন্নয়ন ঘটায়।
আরও পড়ুনঃ
ডা. মেডনিকের মতে, সম্ভব হলে ৯০ মিনিটের ন্যাপ নেয়াই সবচেয়ে ভালো। ঘুমচক্রের গড় দৈর্ঘ্য ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। তাই বিকেলে ৯০ মিনিটের ঘুমকে পরিপূর্ণ ন্যাপ বিবেচনা করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, পরিপূর্ণ ন্যাপ নিলে শারীরিক কর্মদক্ষতা যেমন বাড়ে তেমনি মানসিক অবস্থারও উন্নতি হয়।
বিকেলে ৯০ মিনিটের বেশি ঘুমানো উচিত নয়। জার্নাল অব আমেরিকান জিরিয়াট্রিকস সোসাইটিতে প্রকাশিত গবেষণা মতে- ৯০ মিনিটের বেশি ন্যাপ নিলে রাতের ঘুমচক্র বিনষ্ট হতে পারে, মস্তিষ্কের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে এবং স্মৃতিধারণ ক্ষমতা কমে যেতে পারে।