আমরা অনেকেই ডুমুরের ফুল না দেখলেও ডুমুর ফল ঠিকই দেখেছি। বিশেষত গ্রামে যাদের বাড়ি তারা প্রত্যেকেই এই ফল দেখে থাকবে। ডুমুর খাবার হিসেবে অনেক জায়গাতেই পরিচিত। প্রথমেই বলে রাখি ডুমুর খুবই উচ্চমানের ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এই উদ্ভিদটি সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও চাষ আবাদের অভাবে ধীরে ধীরে কমে আসছে। এই উদ্ভিদের সঠিক ভাবে যত্ন নিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ডুমুর বিভিন্ন সবজির সঙ্গে মিলিয়ে ডুমুরভাজি করে খাওয়া যায় এছাড়া ছোট মাছের সঙ্গে আলু দিয়ে ডুমুরের ঝোলও রাঁধা হয়।
ডুমুরের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে, ভারতে যে প্রজাতি গুলি দেখা যায় সেগুলি হল ইন্ডিয়ান রোক, এলিফ্যান্ট ইয়ার, কৃষ্ণা, ওয়েপিং ফিগ, হোয়াইট ফিগ, ইত্যাদি। বিদেশী বাজারে এই ফলের চাহিদা ব্যাপক। কারন এই ফল কাঁচা, পাকা ও শুকনো বিক্রি হয়। তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, উত্তর প্রদেশের বেশ কিছু অঞ্চলে এই ফলের চাষ করা হয়। তবে ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে এই ভেষজ চাষের প্রাধান্য দেখা দিচ্ছে।
ডুমুর চাষের উপযুক্ত পরিবেশ ও চাষের পদ্ধতিঃ
ডুমুর প্রায় সারাবছরই হয়ে থাকে। দুই ভাগ বেলে ও দোআঁশ মাটি এবং একভাগ গোবর সার, কুড়ি থেকে চল্লিশ গ্রাম এসএসপি সার, পটাশ দুইশো গ্রাম একত্রে মিশিয়ে সঠিকভাবে মাটি তৈরি করতে হবে। মাটি যখন খুব ঝুরঝুরে হবে তখন বীজ বপন করা উচিত। এমন জায়গায় রোপণ করতে হবে যেখানে যথেষ্ট পরিমাণে সূর্যালোক প্রবেশ করে। সাধারণত এটি দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ফল ধারনে উপযোগী হয়। গ্রীষ্মের শেষে বা শরতের শুরুতে এর ফল ধারন শুরু হয়। চারা রোপণের প্রথম দিকে জল কম পরিমানে দিতে হবে। এবং যত গাছের আকার বৃদ্ধি পাবে ততই জলের পরিমানও বাড়াতে হবে। তবে হ্যাঁ গাছের গোঁড়ায় জল জমতে দেওয়া চলবে না। মনে রাখবেন ডুমুর গাছ সাধারণত কাটিং পদ্ধতিতে ভাল হয়।
ডুমুর চাষে আয়:
ডুমুর গাছের সবটাই ব্যবহার যোগ্য। যেমন ধরুন ছোটো ছোটো ডাল পালা হিন্দু ধর্মের পুজর কাজে ব্যবহার করা হয়। তাই শহরতলীর মানুষেরা অর্থ খরচ করে কেনেন। আবার যারা ডুমুরের চারা তৈরি করে বিক্রি করেন। তাঁরা পাইকারি মূল্য প্রায় ৫২০ টাকা এবং খুচরো মূল্য হিসেবে প্রায় ৭০০ টাকার মতো আয় করে থাকেন। বাজারে এক কেজি ডুমুর বিক্রি হয় ১০০ টাকায়। ডুমুর গাছে পোকামাকড়ের আক্রমন অনেকটাই কম। এক একর জায়গায় ডুমুর চাষ করলে চাষের খরচ বাদে লাভ হবে প্রায় তিন লক্ষ টাকা। সুতরাং ডুমুর চাষে আয়ের মুখ দেখেন চাষিরা।