কৃষিজাগরন ডেস্কঃ অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ওজন বেড়ে যাওয়া, মুখে লোমের আধিক্য, ত্বকে ব্রণর উপদ্রপ— এই উপসর্গগুলি মোটামুটি সকলেরই চেনা।সমিক্ষায় দেখা গেছে প্রতি ১০ জনের মধ্যে এক জন মহিলাই এই রোগে আক্রান্ত । এর পোশাকি নাম পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম বা পিসিওএস।
পিসিওএস-এ আক্রান্ত বেশিরভাগ মহিলাদের মধ্যে উচ্চ মাপের আন্ড্রোজেন অথবা পুরুষ হরমোনগুলির উপস্থিতি থাকে। এই রোগের বেশিরভাগ বাইরের ও ভেতরের সমস্যাগুলি আন্ড্রোজেন বৃদ্ধিজনিত সমস্যার সঙ্গে জড়িত৷ জিনগত এবং পরিবেশগত কারণের মিলিত প্রভাবে পিসিওএস হতে দেখা যায়।
পলি কথার অর্থ অনেক সুতরাং পলিসিস্টিক মানে হল অনেকগুলো সিস্ট। পিসিওএসের প্রধান বৈশিষ্ট্যই হল জরায়ু থেকে ডিম নির্গত না হওয়া। তার পরিবর্তে যা ঘটে তা হল ডিমের চারপাশে তরল জমে সেগুলো সিস্টে পরিণত হয়।
আরও পড়ুনঃ পুষ্টিতে ভরপুর ডুমুর! জেনে নিন এর ঔষধি গুণাগুণ
পিসিওএস-এর লক্ষণ কি কি ?
পিসিওডি লক্ষণ গুলি প্রথমে খুবই শান্ত অবস্থায় থাকে। খুবই সাধারণ লক্ষণ গুলি হল:
এর প্রাথমিক লক্ষন হল ওজন ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়া অথবা ব্যাপক হারে ওজন হ্রাস পাওয়া । এর সাথে ত্বকে ব্রণ উৎপাত বাড়তে থাকে।এছাড়া অন্য একটি লক্ষণ দেখা যায় তাহল সমগ্র শরীরে অতিরিক্ত চুল সৃষ্টি হয় যেগুলি কোন মহিলা সুলভ বৈশিষ্ট্য নয়।মুখে ঘন এবং কালো চুল এবং কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে পেটে ,বুকে এবং পিঠে অস্বাভাবিক ভাবে অতিরিক্ত চুল সৃষ্টি হয়। এর সাথে সাথে মাথার চুল পাতলা হয়ে আসা এই রোগের অন্যতম একটি লক্ষণ।সাধারনত পিসিওডি যুক্ত মহিলাদের বছরে নয় বারের থেকে কম পিরিয়ডস হয়। কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে কোন পিরিয়ডস নাও হতে পারে।
সতর্কতা
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা হলে ও অতিরিক্ত মোটা হলেই সতর্ক হোক ৷ এখন কম খেলাধুলা, শারীরিক পরিশ্রম ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের জন্য কমবয়সিদের মধ্যে মোটা হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে৷ তাই নির্ধারিত সময়ে পিরিয়ড না হলে, অথবা দু’-তিন মাস ধরে না হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে নিন। বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) বেড়ে গেলেই সাবধান হোন৷ আপনি ওবেসিটি আক্রান্ত কি না কিংবা পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে ভুগছেন কি না তা আন্দাজ করতে পারবেন নিজেই৷
আরও পড়ুনঃ Benefits of Radish: মুলো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো! শীতের মরশুমে মুলো খাওয়ার ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন
চেক করে নিন বিএমআই: মোট ওজন (কিলোগ্রাম)/ উচ্চতা২ (মিটার) = বিএমআই৷ বিএমআই ১৮.৫-র কম = স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন, ১৮.৫-২৪.৯ = স্বাভাবিক ওজন, ২৫-২৯.৯ = অতিরিক্ত ওজন (সতর্ক হতে হবে), ৩০-এর বেশি = ওবেসিটি আক্রান্ত।
নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ঋতুস্রাব হলে সেটাকে শরীরের ভাল লক্ষণ হিসাবেই বিবেচনা করা হয়। আর এই নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধান বলতে ২৮ দিনের সময়সীমাকে বোঝানো হয়। আগের ঋতুস্রাবের সময়সীমা থেকে যদি পরের ঋতুস্রাব ২৮ দিনের আগে বা পরে হয় তাহলে তাকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলা হয়ে যাবে। বেশির ভাগ মহিলাদের এই ২৮ দিনটা কখনও ২৬ দিন আবার কখন ৩০ দিনের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে। এই বিষয়টিকেও স্বাভাবিক হিসাবেই মনে করা হয়। কিন্তু যদি ২৮ দিনের বদলে ৬০ দিন কিংবা ১৪ দিনের ব্যবধানে পরবর্তী ঋতুস্রাব হয়, সমস্যা তখনই শুরু হয়।