Botanical Name: Ipomoea aquatica
Family: Convolvulaceae
Common name: কলমী, River spinach, Swamp cabbage, Chinese spinach, Water morning glory
আমেরিকা তে এটি "obnoxious weed" অর্থাৎ কিনা বিরক্তিকর আগাছা। আসলে "সাহেব" রা হয়তো এর গুনাগুন ই জানে না। বা এটা যে খাওয়া যায় ও পুষ্টি উপাদানে ভরপুর তাও হয়তো জানেন না। কি ভাগ্যিস ভারতে এখনো আগাছা নয়। এক ই গণ (Genus) এর অনেক আলাদা প্রজাতি আগাছা হিসেবে বিবেচিত হলেও এটি নয় কিন্তু।
বাড়ির ছাদ বাগানে কলমি শাকের গাছ অনায়াসেই করতে পারেন। বাজার থেকে কিনে আনা শাকের ডাটার গিঁট থেকে শিকড় ছাড়ে। সেই শিকড় সুদ্ধ ডাটা মাটিতে লাগালে সুন্দর গাছ জন্মায় (আড়াআড়ি বসানোই বাঞ্ছনীয়, এতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়)। আবার বীজ থেকেও লাগানো যায়। দুটো পদ্ধতিতেই কলমি শাকের গাছ করা যায়।
পুষ্টিগুন:
১) কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে বলে এ শাক হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের কলমি শাক খাওয়ালে তাদের আর বাজারের প্রচলিত চটকদার ফুড সাপ্লিমেন্টের দরকার হয় না।
২) কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'সি'। এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে।
৩) কলমি শাক বসন্ত রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
৪) পর্যাপ্ত পরিমানে লৌহ থাকায় এই শাক রক্ত শূন্যতার রোগীদের জন্য দারুণ উপকারি।
৫) জন্মের পর শিশু মায়ের বুকের দুধ না পেলে মাকে কলমি শাক রান্না করে খাওয়ালে শিশু পর্যাপ্ত পরিমানে দুধ পাবে। বাচ্চারা যদি মায়ের দুধ কম পায় সেইক্ষেত্রে কলমী শাক ছোট মাছ দিয়ে রান্না করে খেলে মায়ের দুধ বাড়বে এবং তখন বাচ্চা দুধ পাবে।
৬) যদি কারো ফোড়া ওঠে তাহলে এই কলমী পাতা তুলে একটু আদাসহ বেটে ফোড়ার চারপাশে লেপে দিয়ে মাঝখানে খালি রাখতে হবে। তিন দিন এইভাবে লেপে দিলে ফোড়া গলে যাবে এবং পুঁজ বেরিয়ে শুকিয়ে যাবে।
৭) রাত কানা রোগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই কলমী শাক কয়েক সপ্তাহ প্রতিদিন একবেলা ভাজি রান্না করে খেলে রাত কানা রোগ ভালো হয়।
৮) নিয়মিত কলমি শাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কোষ্ঠ কাঠিন্য বা হলে কলমী শাক তুলে ছিঁচে এক পোয়া পরিমাণ রস করে আখের গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল এক সপ্তাহ খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।
৯) নিয়মিত কলমি শাক খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কলমি শাকের সঙ্গে আখের গুড় মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল এক সপ্তাহ খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। আমাশয় হলেও এ শরবত কাজ করে।
১০) যাদের মাঝে মাঝে বিনা কারণে মাথাব্যথা করার সমস্যা আছে তারা কলমি শাক খেলে উপকার পাবেন।
১১) অনিদ্রা দূরীকরণেও কলমি শাক খেতে পারেন।
১২) মাথার খুশকি দুর করতেও কলমি শাক কার্যকরী ভূমিকা রাখে। (সংগৃহীত)
আরো অনেক গুনসমৃদ্ধ এই কলমি। তাই আর দেরী নয়, অবহেলাও নয়। খুব সহজেই বাড়িতে করে ফেলুন কলমীর চাষ।
বাজার থেকে না কিনে নিজেদের বাগানজাত কলমির স্বাদ ও গুনাগুন দুটোই বেশি।
পুষ্টিকর খাবার খান, সুস্থ থাকুন।