ডায়াবেটিস, আজ ভারতবর্ষ সহ সমগ্র বিশ্ব এই অসংক্রমক মারণরোগের সাথে ভীষণভাবে পরিচিত। এই শতাব্দীকে ডায়াবেটিস এর শতাব্দী বললে কিছু ভুল বলা হবে না।বর্তমান বিশ্বের প্রায় ৯.৩ % মানুষ এই রোগের কবলে। ডায়াবেটিস এ ভারতবর্ষ বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে ।এই দেশ বর্তমানে ৭৭ মিলিয়ন ডায়াবেটিস রোগীর আবাস্থল।ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন এর রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি ৬ জন ডায়াবেটিস রোগীর ১ জন ভারতীয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই বহুল চর্চিত ডায়াবেটিস আসলে কি ?
ডায়াবেটিস হল রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধিকারী একটি শরীরনাশি মারণরোগ, যা আমাদের দেহের ইমিউন সিস্টেমকে সম্পূর্ণ রূপে নষ্ট করে দেয়, ফলে দেহ তার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।সাধারণত ডায়াবেটিস দুই প্রকার , টাইপ I ও টাইপ II , এর মধ্যে ৯০% ডায়াবেটিসই টাইপ II প্রকৃতির হয়ে থাকে এবং বাকি ১০% ডায়াবেটিস টাইপ I প্রকৃতির।
আরও পড়ুনঃ শাক - সবজি সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ : এক অপচয় রোধী পন্থা
ডায়াবেটিসের লক্ষনগুলো কি কি ?
এখন এই ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে শরীরে ডায়াবেটিস এর উপস্থিতির লক্ষণগুলো জানা আবশ্যিক। আসুন জেনে নেওয়া যাক শরীরে ডায়াবেটিস এর মাত্রা বেড়ে গেলে কি কি উপসর্গ প্রকাশ পায় -
১.খাবার নিয়ন্ত্রণ /ব্যায়াম না করেই দেহের ওজন হুট করে অনেকটা কমে যেতে পারে।
২.শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে গেলে অতিরিক্ত চিনি দেহ থেকে বের করে দেওয়ার জন্য কিডনির ওপর চাপ পড়ে তাই ঘন ঘন প্রস্রাব পায়।
৩.শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে বা ছড়ে গেলে তা সহজে শুকোতে চায় না।
৪.হাত ও পা এর আঙ্গুল এমন কি পুরো হাত অবশ বোধ হতে পারে এবং এ সময় খুব অল্প পরিশ্রমেই শরীর হাঁপিয়ে ওঠে।
৫.প্রস্রাব এর মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর জল বেরিয়ে যাওয়ায় ঘন ঘন জল তেষ্টা পায়।
৬.শরীরে সুগারের মাত্রা অনেক বেড়ে গেলে দৃষ্টিশক্তি ঘোলাটে হয়ে যাওয়ার সম্যসা দেখা দেয়।
আরও পড়ুনঃ সকালে খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার ৫টি আশ্চর্যজনক উপকারিতা জানেন ?
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের শর্ত
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের প্রধান শর্ত হল ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ। ডায়াবেটিস রোগীর খাবার অবশ্যই কম স্নেহ ও কার্বোহাইড্রেট যুক্ত এবং ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়া উচিত।ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় থাকা শশা-কুমড়ো গোত্রভুক্ত সব্জি যেমন লাউ, চালকুমড়ো, শসা, পটোল, চিচিঙ্গা, উচ্ছে, মিষ্টিকুমড়ো, ঝিঙে, তেলাকুচে, স্কোয়াশ, কাঁকরোল, তরমুজ,খরমুজ ইত্যাদির একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে । এতে প্রচুর পরিমান জল, খনিজ (পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম), ভিটামিন ও ফাইবার থাকে এবং শর্করা ও স্নেহ পদার্থের পরিমান যথেষ্ট কম হওয়ায় এগুলো ডিয়াবেটিস রোগীর জন্য ভীষণভাবে উপাদেয়।