কৃষিজাগরন ডেস্কঃ পলিসিস্টিক ওভারি ডিজিজ বা 'পিসিওডি' হল এক মহিলাদের ডিম্বাশয় জনিত একটি রোগ। সাধারণত একটি বয়স অতিক্রম করার পর সব মেয়েরই ডিম্বাশয় থেকে প্রতি মাসেই ডিম নির্গত হয়। পিসিওডি-র ক্ষেত্রে এই ডিম নির্গত হওয়ার নিয়মটি নির্দিষ্ট রীতি মেনে হয় না। এক সময় সেই ডিমগুলোই জমে সিস্টের আকার নেয়।একেই বলে পিসিওডি।
আরও পড়ুুনঃ সকালে এই খাবারগুলি সেবনে বাড়ছে ক্যান্সারের প্রবনতা
পিসিওডি কেন হয়
পিসিওডি-র কোন সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি। পিসিওএস রোগীদের ডিম্বাশয় অতিরিক্ত পরিমাণে এন্ড্রোজেন অথবা পুরুষ সেক্স হরমোন প্রস্তুত করে যেগুলি ডিম্বানু সৃষ্টিতে ভারসাম্য বিনষ্ট করে। জিনগত কারন মহিলাদের পিসিওডি -র কারণের মুখ্য ফ্যাক্টর হিসেবে বিচার করা হয়।
পিসিওডি এর লক্ষণ
-
ওজন বৃদ্ধি এবং ওজন হ্রাস।
-
ব্রণ বেরিয়ে আসা।
-
সমগ্র শরীরে অতিরিক্ত চুল সৃষ্টি হওয়া যেগুলি কোন মহিলা সুলভ বৈশিষ্ট্য নয়। মুখে ঘন এবং কালো চুল এবং কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে পেটে ,বুকে এবং পিঠে অস্বাভাবিক ভাবে অতিরিক্ত চুল সৃষ্টি হয়।
-
মাথায় চুল পাতলা হয়ে আসা।
-
অনিয়মিত মাসিক চক্র দেখা যায়। সাধারনত পিসিওডি যুক্ত মহিলারা বছরে নয় বারের থেকে কম পিরিয়ডস অনুভব করে। কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে কোন পিরিয়ডস নাও দেখা যেতে পারে, অন্যদিকে
-
বিষন্নতা লক্ষ্য করা যায়।
এই রোগের কারণে ৫০ শতাংশ মেয়েরা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। মেদ বেড়ে যায় সহজেই, শরীরে লোম বেশি দেখা যায়, মাথায় চুল উঠে টাক পড়ে যাওয়ার প্রবণতাও বাড়ে। পাশাপাশি চোখে পড়ে খুব বেশি মাত্রায় সিস্টের সমস্যা।
পিসিওডি ডায়েট চার্ট
এই রোগে কিছু খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হয় | তার জন্য একটা সঠিক ডায়েট মেনে চলা খুব জরুরি | পিসিওএস বা পিসিও়ডি থাকলে খাওয়া-দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। ওজন নিয়ন্ত্রণ হলে ঋতুস্রাবও ধীরে ধীরে নিয়মিত হয়ে যাবে এবং এই সমস্যা অনেকটা কমে যাবে। কোন ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা ভাল তার একটা স্পষ্ট ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি |
আরও পড়ুনঃ শীতেকালে বাড়তে পারে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি?কারণ জানলে চমকে যাবেন
পিসিওএস থাকলে হাই ফাইবার, লো-কার্ব ডায়েট মেনে চলতে হবে। মানে ভাত-রুটির মতো কার্বোহাইড্রেট কম খেয়ে শাক-সব্জি, ডাল এগুলো বেশি করে খাওয়া প্রয়োজন। তবে তাতেও কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। যেমন মাটির তলার সব্জি যেমন আলু, শাঁকালু, গাজর, বিট একটু কম খাওয়াই ভাল। ফলের মধ্যে আম, কলা, লিচু আর আঙুর বাদে যে কোনও ফল খাওয়া যেতে পারে। কারণ, এই ৪টে ফলে কার্বোহাড্রেট বেশি, তাই না খাওয়া বেশি ভালো |
কি কি খাবেন?
১) হাই ফাইবার যুক্ত সব্জি যেমন ফুলকপি, ব্রকোলি, লেটুস পাতা, কুমড়ো, বিন ইত্যাদি খেতে হবে |
২) রেড মিটের বদলে চিকেন খেতে হবে। ডিম্ মাঝে মাঝে খাওয়া যেতে পারে | মাছ খাওয়া খুবই ভালো | ডাল খেতে হবে। নানা রকম বীজ খাওয়া যেতে পারে যেমন ফ্ল্যাক্স সিড, কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখীর বীজ ইত্যাদি।
৩) আটা-ময়দার বদলে রাগি, জোয়ার, বাজরার মতো শস্যগুলো খাওয়া যেতে পারে। তবে দুবেলা ভাত-রুটি কম করে শব্জি বা স্যালাড খাওয়া বেশি উপযোগী |