জলবায়ুর পরিবর্তন, বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা, তুষারপাতের স্বল্পতার কারণে হিমাচল প্রদেশে আপেলের উৎপাদন এবছর বিগত বছরগুলির তুলনায় অনেক কম হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। এই আশংকার জেরে সমস্ত দেশের পাইকারি ও খুচরা কারবারিরা কাশ্মীরের আপেলের জন্য বিশেষ চাহিদা সৃষ্টি করে রেখেছে এবং যাতে এই আপেল সময়মত পাওয়া যায় সেই জন্য বিশেষ সংরক্ষণের বন্দোবস্তো করেছে। মধ্যস্ত কারবারিদের কালোবাজারি ঠেকানোর জন্য আদানি এ্যাগ্র গ্রুপ, কন্সর, রিলায়েন্স ফ্রেস, মাদার ডেয়ারি, এবং বিগ বাস্কেট এরা সমস্ত আপেল সংরক্ষণের দায়িত্ব নিতে চেয়েছে।
কলকাতার ITC কোম্পানি এই বৎসর থেকে নিজেরাই আপেল সংরক্ষণের বন্দোবস্তো করেছে। তারা হিমাচলের থেকে প্রাপ্ত আপেলের সাথে সাথে কাশ্মীরের আপেলকেও সংরক্ষণ করবে বলে ঠিক করেছে।
দেবভূমি লিমিটেড কোম্পানির মার্কেটিং ও সংরক্ষণের ডিরেক্টর মিঃ কুমার অগ্রয়াল জানিয়েছেন যে তারা কাশ্মীরের বিভিন্ন জেলার আপেল উৎপাদকদের সাথে এখন থেকেই যোগাযোগ করা শুরু করেছেন এবং এবছর থেকেই তারা প্রথমবার আপেলের সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন, এবং আশা করছেন যে প্রথম বছরই তারা প্রায় ৭০০০ টন আপেল এর সংরক্ষণ ও বিপণন এর ব্যবস্থা করতে পারবে কারণ তাদের কাছে সেই সংখ্যার খুচরা খরিদ্দার রয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের হর্টিকালচারের একজন আধিকারিকের মতে তাদের রাজ্যে প্রতি বছর প্রায় ১৭ লক্ষ টন আপেল উৎপাদন হয় ফলে তাদের রাজ্য এবার হিমাচলের আপেলের ঘাটতি পূরণ করতে পারবে বলে তাদের বিশ্বাস।
আদানি গ্রুপ হলো ভারতের সবথেকে বৃহত্তম আপেল সংরক্ষণ সংস্থা, তারা বলছে এবছর তারা মাত্র ২২,০০০ টন চালানি আপেল সংরক্ষণ করতে সক্ষম। তাদের ইচ্ছা এবছর থেকে তারা নিজস্ব উৎপাদনকেই সংরক্ষণের জন্য বিশেষ প্রাধান্য দেবে।
আপেলের উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে এবছর কন্সর ও রিলায়েন্স ফ্রেশ এর মতো সংস্থা তেমনভাবে চালানি আপেল সংরক্ষণকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তারা এবছর অন্য কোনো ফল সংরক্ষণের দিকেই ঝুঁকছেন।
এই বছর আপেলের দাম যে আকাশছোঁয়া হবে তা বলাই বাহুল্য কারণ একে স্বল্প উৎপাদন, তায় আবার আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি, আপেলের আমদানি শুল্ক বিগত বৎসরে ছিলো ৫০% যা এবছর বেড়ে ৭০% হয়েছে। সুতরাং আপেলের দক্ষিণা যে এবার মধ্যবিত্তের মাথার উপড় দিয়ে যাবে এটা এখন থেকেই অনুমান করা যাচ্ছে। সুতরাং আগামী উৎসবের মরশুমের সময় থেকেই আপেলের দাম চড়বে বলে আশংকা থেকেই যাচ্ছে।
- প্রদীপ পাল