কৃষি দফতরের তরফে ক্যাপসিকামকে অর্থকরী ফসল হিসেবে তুলে ধরার পর বছরভর এর চাষে আগ্রহ দেখিয়েছেন হুগলির পাণ্ডুয়া, পোলবা দাদপুর এলাকার বহু চাষি। তবে ফলন ভালো হলেও লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে না বলেই ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ—পাইকারি বাজারে দাম নেই, আবার সরকারি পর্যায়ে কোনও সহায়তাও মিলছে না।
পাণ্ডুয়া ব্লকের এক চাষির কথায়, “আলু ও ধান চাষ ছেড়ে গত দু’বছর ধরে ক্যাপসিকাম চাষ করছি লাভের আশায়। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি মাসে ১৪-১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন সেই দাম নেমে এসেছে ৫-৭ টাকায়।” এই দামে বিক্রি করলে উৎপাদন খরচই উঠছে না বলে দাবি তাঁদের।
চাঁপাহাটি গ্রামের চাষি স্বদেশ ঘোষ জানান, “এক বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষে খরচ হয় প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারদরে সেই খরচও ওঠার সম্ভাবনা নেই।”
একই অভিযোগ সিমলাগড়ের চাষি সুভাষ মল্লিক-এরও। তাঁর দাবি, “কৃষি দফতর ক্যাপসিকাম চাষে উৎসাহ দিলেও যখন সেই ফসল বিক্রি হচ্ছে না, তখন পাশে কেউ নেই। ধান বা আলুর মতো ক্যাপসিকামও যদি কৃষি মান্ডিতে বিক্রির সুযোগ থাকত, তাহলে কিছুটা লাভ হত।”
চাষিদের এই সমস্যার কথা মানছেন কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকরাও। জেলা কৃষি বিপণন দফতরের এক কর্তা জানান, “চাষিরা চাইলে ‘সুফল বাংলা’-র মাধ্যমে বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারেন। আবেদন করলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।”
পাণ্ডুয়ার বিডিও সেবন্তী বিশ্বাস জানিয়েছেন, “চাষিদের নিয়ে বৈঠক ডেকে এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে। যাতে তাঁদের উৎপাদন ন্যায্য দামে বিক্রি করা যায়, সেই দিকেই প্রশাসনের নজর।”
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শুধু ফসল ফলানো নয়, বিক্রির উপযুক্ত পরিকাঠামো এবং ন্যায্য বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। না হলে চাষিরা বারবারই উৎসাহ নিয়ে চাষ শুরু করেও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।