পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার জয়নগর ২ ব্লকের চুপ্রিঝারা গ্রামের কৃষক বিশ্বজিৎ ঘরামি, সবজি চাষ করে আজ অসামান্য সাফল্য করেছেন। কৃষি জাগরণে বক্তব্য রাখাকালীন এই সফল কৃষক তার সাফল্যের চাবিকাঠির হদিশ দিয়েছেন আমাদের সকলের উদ্দেশ্যে। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, কৃষিকাজই তার মূল পেশা, এর মাধ্যমেই তার জীবন অতিবাহিত হয়।
মূলত ধান চাষের পাশাপাশি আরও অনেক সবজী যেমন, বেগুন, করলা, বিন ইত্যাদির চাষ করেন তিনি। তবে কৃষিকাজ করতে গিয়ে ফসল সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন তিনি, ফলত চাষের পথে আসে অন্তরায়।
এই কৃষক আমাদের জানিয়েছেন, করোনা আবহওয়ে সাহায্যের আশায় প্রথমে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন তিনি। এমতাবস্থায় দিশেহারা পরিস্থিতিতে তিনি সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের সঙ্গে। কোন সময়ে কোন কোন ফসলের বীজ কীভাবে বপন করতে হবে, কি কি সার কতটা পরিমাণে প্রয়োগ করতে হবে ফসলে, কোন কৃষিবিষ/ওষুধ প্রয়োগে উদ্ভিদ ভালো হবে, সর্বোপরি রাসায়নিক ছেড়ে জৈব পদ্ধতিতে চাষ, রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের ইত্যাদি সকল পরামর্শে তিনি চাষে আজ লাভের মুখ দেখেছেন। তিনি আরও বলেন যে, রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের পরামর্শে কৃষিকাজ করে পূর্বের তুলনায় চাষে তার খরচ অনেকটাই কমেছে, উদ্ভিদের গোড়া শক্ত এবং স্বাস্থ্যও ভালো হয়েছে, গাছের ফলনও বেড়েছে। জলসেচ ব্যবস্থা সঠিকভাবে পরিচালনা করায় তার বাগানের উদ্ভিদ সুষ্ঠুভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার বক্তব্য অনুযায়ী, চাষে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের পরামর্শ নিয়ে জৈব কীটনাশক বাড়িতে বানিয়ে তিনি তার ক্ষেতের উদ্ভিদে তা প্রয়োগ করেছেন। এতে এখন তার উদ্ভিদে পোকার সংখ্যা অনেক কম এবং উদ্ভিদের গ্রোথও তাড়াতাড়ি হচ্ছে। ফলের আকৃতিও ভালো, সর্বোপরি প্রতিটি গাছ সুস্থ সবল রয়েছে। এই লকডাউনেও রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন কীভাবে বপন করলে বীজের অঙ্কুরোদগম ভালো হবে, কীভাবে গাছের পরিচর্যায় উন্নত ফলন হবে, এ সকল বিষয়ে কৃষকদের সহায়তা করে চলেছে বিভিন্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম ও ভিডিও কনফারেন্স-এর মাধ্যমে। তাদের এই উদ্যোগে বহু চাষি উপকৃত হচ্ছেন।
সফল কৃষক বিশ্বজিৎ ঘরামি, আমাদের যা জানিয়েছেন, তা হল আর.এফ- এর বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী, অতি স্বল্প খরচে জৈব সার প্রস্তুত করে উদ্ভিদে পরিচর্যা করা যায়। তিনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী, গোবর, ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি, সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স এবং অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে জৈব কীটনাশক প্রস্তুত করেন। এই সার ও ওষুধ ফসলে স্প্রে করেন। এতে তার ফসলের ফলন এবং মান দুইই বেড়েছে আর খরচও এখন ব্যয়সাধ্য। পূর্বের তুলনায় কৃষিকাজে তার খরচ অনেকটাই হ্রাস পাওয়ায় মুনাফাও বেশ ভালোই পেয়েছেন তিনি। আর.এফ-এর পরামর্শে চাষ করে আজ তিনি একজন সফল কৃষক। তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন- এর কর্মকর্তা মাননীয় শ্রী কান্তিক মান্না মহাশয়, অনিন্দ্য মন্ডল মহাশয়কে এবং কৃষি জাগরণকে তার সফলতার কাহিনীর অংশীদার হয়ে ওঠার জন্য।
এই কৃষকের সফলতার কাহিনী দেখুন আগামীকাল (২০/১২/২০২০) সকাল ১১:০০ টায়, কৃষি জাগরণ ওয়েস্টবেঙ্গল পেজ –এ।
এরকমই আরও এক সফল কৃষক সুরজিত বৈদ্যের সফলতার কাহিনী দেখুন বিস্তারিত - https://www.facebook.com/KrishiJagranwestbengal/videos/1304476663246777