চাষের আয়ের নতুন দিশা দেখাচ্ছে এক নতুন ফল। রসালো এবং মিষ্টি স্বাদে ভরপুর এই ফল চাষ করা হচ্ছে মুর্শিদাবাদের মাটিতে। ফলটির নাম মাল্টা। দেখতে লেবুর মতোও হলেও আদতে লেবু নয়। মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গি ব্লকের ফরিদপুর অঞ্চলের পাকুড় দিয়াড় গ্রামে হচ্ছে এই চাষ। এই অঞ্চলের বাসিন্দা যুবক সিরাজুস সালেকিন এই ফলের চাষ করে নজির গড়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মাল্টা ফলের চাষের উপাই খুঁজে বার করে শুরু করেছেন চাষ। আর তাতেই বাজিমাত। প্রথমে যাচাই করার জন্য এই ফল চাষের উদ্যোগ নেন এই যুবক। যখন সাফল্যের মুখ দেখেন এই কৃষক তখন তাঁকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন জলঙ্গির কৃষি আধিকারিক অরিত্র সাহা। রানাঘাট সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে চারা সংগ্রহ করে অবশেষে সাড়ে তিন বিঘা জমির ওপর শুরু করেন মাল্টা ফলের চাষ।
আরও পড়ুনঃ বাড়ছে হলুদ তরমুজের চাহিদা! কৃষকদের দিচ্ছে নতুন আয়ের দিশা
মুর্শিদাবাদের মাটিতে এই নতুন ফলের চাষের খবর সামনে আসতেই সেই জায়গা পরিদর্শন করতে যান জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী। পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে ছিলেন এসডিও, বিডিও, এডিএ, ওসি সহ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ। কৃষকের এই নয়া পদক্ষেপের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলে। সেই জমি এবং গাছ প্রদর্শনের সময় কীট পতঙ্গ দমনে সৌর আলোক ফাঁদ, ড্রোনের মাধ্যমে কীভাবে তিনি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন সেই বিষয়ে তথ্য দেন কৃষি এবং অন্যান্য আধিকারিকদের। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর এই চাষে সমস্ত সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন কৃষি আধিকারিকরা।
আরও পড়ুনঃ মাত্র 5 বছরে 70 লাখ আয় করুন! শুরু করুন এই গাছ চাষ
এই ফলের চাষ সম্পর্কে কৃষক সিরাজুস সালেকিন জানিয়েছেন এই ফলটি আসলে মৌসুম্বী লেবুরই একটি প্রজাতি। সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই এই চাষ সম্পর্কে ধারণা নেন তিনি। পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন আধুনিক প্রযুক্তি। প্রথমে রানাঘাটের বিভিন্ন জায়গা থেকে চারা সংগ্রহ করেন আর তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে কাজে নামেন তিনি। পাশাপাশি কীট পতঙ্গ দমনে সৌর আলোক ফাঁদ, ড্রোনের মাধ্যমে কীটনাশক স্প্রে করেন। ইতিমধ্যেই সমস্ত গাছে ফুল চলে এসেছে। তিনি আরও বলেন কোনও কৃষক যদি এই চাষে আগ্রহী হন তাহলে তাকেও তিনি সাহায্য করবেন।
জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী জানিয়েছেন তিনিও খুব খুশি। মুর্শিদাবাদের মাটিতে ওই কৃষকের নতুন প্রয়াস অন্যদের কাছে একটি অনুপ্রেরণা। এই চাষের ক্ষেত্রে যেভাবে কৌশলগুলি ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলিরও প্রশংসা করেছেন জেলা শাসক। এছাড়াও তিনি জানান এই চাষে যদি কোনও কৃষক আগ্রহী হন তাহলে তাঁকে সমস্ত সাহায্য করা হবে।