কৃষিজাগরন ডেস্কঃ ক্রমবর্ধমান দূষণ এবং রোগের কারনে সাধারন মানুষ স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধীরে ধীরে সচেতন হতে শুরু করেছে।এখন প্রতিটি বাড়িতে অর্গানিক ফল ও সবজির প্রাধান্য প্রচুর। তাই বাজারে জৈব খাদ্য পণ্যের চাহিদাও বাড়ছে ব্যপক গতিতে।এই কারণে জৈব চাষ এখন উপার্জনের মাধ্যম হয়ে দাড়িঁয়েছে। এখন শুধু কৃষকই নয়, শহরের মানুষও জৈব চাষে বেশ আগ্রহী হচ্ছেন।
এখন ঘরে ঘরে বাগান করা হচ্ছে তাজা খাবার ও পানীয়ের জন্য। শহরের অনেকেই বাগান করাকে আজ উপার্জনের মাধ্যম বানিয়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে চাকরিজীবীরা এ ধরনের কৃষিকাজে যুক্ত হয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছেন।
আরও পড়ুনঃ একাই ২৫ বিঘা জমিতে চাষ করে দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন লাতিয়ান
এমনই একটি উদাহরণ সামনে এসেছে উত্তরপ্রদেশের বেরেলি থেকে, যেখানে একজন সাংবাদিক চাকরি ছেড়ে জৈব চাষকে পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন। প্রাক্তন সাংবাদিক রামবীর সিংয়ের নিজস্ব কোন জমি ছিল না। তাই তিনি তার তিনতলা বাড়িটিকে একটি উল্লম্ব খামারে পরিনত করেছেন। আজ তার বাড়ির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব ভাইরাল হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রামবীর সিং চাষের এই নতুন কৌশলে বিনিয়োগ করে ৭০লক্ষ টাকা উপার্জন করেছেন। যদিও চাকরি ছেড়ে দিয়ে এইভাবে চাষ করা রামবীর সিংয়ের পক্ষে সহজ ছিল না। যে কারণে আজ তার প্রচেষ্টা দেশজুড়ে প্রশংসিত হচ্ছে। আসুন জেনে নিই রামবীর সিং-এর সাফল্যের গল্প, যিনি একজন সাংবাদিক থেকে আধুনিক কৃষক হয়েছেন।
রামবীর সিং পেশায় সাংবাদিক হলেও কিছুদিন আগে চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজ করার মনস্থির করেন। আসলে, বেরেলির বাসিন্দা রামবীর সিংয়ের এক বন্ধুর কাকার ক্যান্সার ধরা পড়ে। কারণ জানতে গিয়ে দেখা যায়, রাসায়নিকযুক্ত সবজি খাওয়ার কারণেই এমনটি হয়েছে। এরফলে রামবীর সিংও তার পরিবারের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে শুরু করেন এবং নিজের পরিবার রক্ষার দায়িত্ব নেন এবং কৃষিকাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। রামবীর বেরেলিতে তার পৈতৃক বাড়িতে ফিরে আসেন এবং হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেন।
তার উল্লম্ব বাগান থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ৭০ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। এর সাথে তার নিজস্ব কোম্পানিও তৈরি করেছেন।তবে রামবীরের এই উল্লম্ব বাগানটি শিরনামে আসার মুল কারন জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক এরিক সোলহেম তার টুইটারে রামভীর সিংয়ের উল্লম্ব বাগান তথা তিনতলা বাড়ির একটি ভিডিও শেয়ার করেন।
আরও পড়ুুনঃ পরিত্যাক্ত জমি রয়েছে? চাষ করুন শ্বেত চন্দনের,কয়েক বছরেই হয়ে যাবেন কোটিপতি
২০২০ সালে, করোনা মহামারীর সময়, অনেক লোক তাদের চাকরি হারিয়েছিল। এদিকে, রামবীর সিংও সাংবাদিকের চাকরি ছেড়ে জৈব চাষে মন দিয়েছেন। দুবাই ভ্রমণের সময় এই কৌশল সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। হাইড্রোপনিক ফার্মিং দেখে এবং বুঝতে পেরে জানা গেল যে এই কৌশলে শাকসবজি ও ফল ফলাতে মাটির প্রয়োজন নেই এবং পোকামাকড় ও রোগের আশঙ্কা নেই। এটি সম্পূর্ণ জল-ভিত্তিক প্রযুক্তি। সাধারণ চাষের তুলনায় ৮০শতাংশ পর্যন্ত জল সংরক্ষণ করা যায়।
দিন দিন ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার বৃদ্ধির ফলে বাড়ছে ইমারতের সংখ্যা। ফলত স্বাভাবিকভাবেই কৃষি জমির পরিমাণ কমছে। তবে জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে আমাদের দেশের কৃষকেরা উদ্ভাবন করেছেন একটি বিশেষ ভাসমান কৃষি পদ্ধতির। মাটি ব্যতিরেকে জলের উপর কচুরী পানা, দুলালী লতা, শ্যাওলা সহ আরও নানান জলজ উদ্ভিদের দ্বারা তৈরী বেডের উপর এই ভাসমান চাষ পদ্ধতির নাম হাইড্রোপনিক পদ্ধতি।