কোকো পিট একটি জৈব উপাদান যা নারিকেলের আঁশ এর থেকে বাছাই করা এক প্রকার গুঁড়ো উপাদান। এই জৈব উপাদান সম্পূর্ন স্বয়ংক্রিয় আধুনিক মেশিনের মাধ্যমে ইলেকট্রিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে এই কোকো পিটের ব্লক তৈরি করা হয়, যা আধুনিক কৃষি খামারীরা তাদের কৃষিজ খামারে ব্যবহার করে থাকেন।
কোকপিটের ব্যবহার(Uses of coco peat):
কোকো পিট উন্নত বিশ্বে বীজ তলা তৈরি, হাইড্রপোনিক্স চাষাবাদ, বাড়ীর ছাদে বাগান করার পাশাপাশি অনেক দেশে মাটির বিকল্প মাটিতে তৈরিতে অন্যান্য জৈব উপাদানের সাথে সাথে এই কোকো পিট জৈব উপাদান মিশ্রণ করে থাকে। বাসা বাড়ীর ছাঁদে বাগান করার জন্য মাটি অনেক ওজন ধারণ করে থাকে এবং আমাদের দেশের শহরে বাগান করার জন্য ভালো মানের মাটি সংগ্রহ করা একটি দূর্লভ কাজের মধ্যেই পরে।
কেন কোকোপিট্ ব্যবহার করা হয়?
১) ছাদ বাগান করার জন্য এটি একটি খুবই ওজন কম এবং বেশী পরিমাণ জলীয় অংশ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ১০০% জৈব উপাদান।
২) কোকো পিটে প্রাকৃতিকভাবে অপকারী ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাস প্রতিরোধী উপাদান বিদ্যমান থাকে।
৩) কোকো পিট হালকা এবং ঝুরঝুরে হবার কারনে এর ভিতরে খুব সহজে মাটিতে উদ্ভিদের জন্য খাদ্য তৈরিতে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে।
আরও পড়ুন - Medicinal Plants Cultivation: ঔষধি উদ্ভিদ চাষের মাধ্যমে ৩ মাসে ৩ লক্ষ টাকা উপার্জন করুন
৪) কোকো পিটে প্রাকৃতিক মিনারেল থাকে যা উদ্ভিদের খাদ্য তৈরি এবং উপকারী অণুজীব সক্রিয় করার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে।
৫) কোকো পিটের পি এইচ এর মাত্রা থাকে ৪.২ থেকে ৬.২ এবং এর ভেতরে ক্ষারত্ব সহনশীল পর্যায় থাকে বলে উন্নত বিশ্বে এই কোকো পিটের ব্যবহার সব চাইতে বেশী।
৬) কর্পোরেট ফার্ম গুলো বীজ জার্মিনেশন থেকে শুরু করে মাটি ছাড়া চাষাবাদ করার জন্য এই কোকো পিট বহুল আলোচিত।
7) ওজনে হালকা হওয়াতে পরিবহণে সহজ তাই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পরিবহণ এবং ছাঁদে বগান করার জন্য এই কোকো পিট অধিক ব্যবহার হয়।
ছাদ বাগানে টবের মাটি প্রস্তুত প্রণালী(Soil Preparation):
১) টবে চারা রোপণের ক্ষেত্রে ০১ ভাগ বেলে দোআঁশ মাটি, ০১ ভাগ বালি, ০১ ভাগ কম্পোস্ট সার ( ভার্মি কম্পোস্ট উত্তম) ভালোভাবে মিশিয়ে টবে ভরাট করতে হবে। অথবা ০২ ভাগ দোআঁশ মাটি, ০১ ভাগ কোকোপিট, ০১ ভাগ জৈব সার দিয়ে টব ভরাট করতে হবে।
২) জল চুয়ানোর জন্য টবেব নিচে ২/১ টি ছিদ্র থাকা প্রয়োজন। ছিদ্রযুক্ত টবেব নিচে ভাঙ্গা চাড়া, নারিকেলের ছোবড়া, খড়কুটা বা ইটের টুকরো দিয়ে বন্ধ করে তার উপর কিছু শুকনো পাতার আস্তরণ দিতে হবে।
৩) এরপর বেলে মাটি এবং তার উপর সার মাটি দিয়ে টব এমনভাবে ভর্তি করে দিতে হবে যেন ওপরে অন্তত ১ ইঞ্চি পরিমাণ খালি থাকে। নতুন কিংবা পুরাতন উভয় প্রকার টবই ব্যবহারের আগে গরম জল দিয়ে ধুয়ে কড়া রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। এতে রোগ ও পোকার আক্রমণ কম হয়।
৪) টব বা ড্রামের নিচে একটি বা দুটি ইট দিয়ে উচ করে দিন, যাতে করে জল চুঁইয়ে পড়ে ছাদে জমা হয়ে স্যাঁতস্যাঁতে না হয়ে যায়। আর যদি আপনি এতকিছু না করতে চান, যে কোন ভালমানের নার্সারিতে মাটিসহ টব কিনতে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন - Lac farming guide: জেনে নিন লাক্ষা চাষ পদ্ধতির গুরুত্বপূর্ণ টিপস