এখন বোরো ধানের বীজতলা ও চারা রোপণের কাজ শুরু হচ্ছে। কৃষক বন্ধুরা কেউ বীজতলা বানিয়ে ফেলেছেন, কেউ আবার চারা রোপণের কাজ শুরু করছেন। তাই বোরো ধানের বীজতলার পরিচর্যা ও চারা রোপণের পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
বোরো ধানের বীজতলার বীজগুলিকে ঠান্ডা ও কুয়াশার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিচের পদ্ধতিগুলি মেনে চলতে হবে (The following methods should be followed to protect the seeds of Boro rice seedlings from cold and fog)।
বোরো ধানের বীজতলা পরিচর্যা (Care Of Boro paddy) -
- বীজতলায় ছিপছিপে জল রাখুন।
- সন্ধ্যায় বীজতলায় জল ঢুকিয়ে দিন এবং সকালে এই জল বের করে দিন।
- বীজতলায় হালকা করে ছাই ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।
- সন্ধ্যা বেলায় বীজতলা পলিথিন শিট দিয়ে ঢেকে দিন ও সকালে খুলে দিন।
বোরো ধান চাষের প্রধান প্রতিবন্ধকতা হল জলাভাব, সঠিক দূরত্বে সঠিক সংখ্যক চারা রোপণ না করা ও বাদামী শোষক পোকার আক্রমণ। এর জন্য 'শ্রী’ প্রযুক্তি (System of Rice Intensification) অবলম্বন করা যেতে পারে। তাছাড়া যেসব জায়গায় শ্রমিকের অভাব রয়েছে, সেখানে প্যাডি ট্রান্সপ্লান্টার এর সাহায্যেও ধান রোপণ করা যেতে পারে।
কম জলে বোরো ধান চাষের জন্য শ্ৰী পদ্ধতিতে চারা রোপণ (Planting of seedlings in Sri method for low water boro paddy cultivation) -
শ্ৰী পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষে অপেক্ষাকৃত কম জলের প্রয়োজন হয়। চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী
ধানচাষে, একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত জমিতে ৫ সেন্টিমিটার জল দাঁড় করিয়ে রাখা হয়, তাই বেশী
জল লগে। শ্ৰী' প্রযুক্তিতে চাষ করলে জমিতে কখনোই জল দাঁড় করিয়ে রাখতে হয় না, কেবলমাত্র মাটি ভেজা রাখলেই হয়, তাই জল কম লাগে, চাষের খরচ কমে আর ফলনও হয় অনেক বেশি। এক্ষেত্রে মূল জমি তৈরি করে কাদানে ও সমতল করে নিতে হবে ও অতিরিক্ত জল বের করে দিতে হবে। ৩০ সেমি চওড়া নালা তৈরি করে অতিরিক্ত জল বের করে দিতে হবে। সুপারিশ অনুযায়ী জৈব সার এবং মূল সার প্রয়োগ করতে হবে। এই প্রযুক্তি অনুযায়ী ৮ থেকে ১২ দিন বয়সের চারা রোপণ করা হয়। এই সময় চারা গাছে দুটি পাতা থাকে, চারার শেকড় ও শেকড়ে লেগে থাকা বীজে যেন আঘাত না লাগে এবং শেকড়ের সাথে মাটি যেন লেগে থাকে। একটি করে চারা মূল জমিতে রোপণ করতে হবে। সারি থেকে এক সারির দূরত্ব ২৫ সেন্টিমিটার এবং এক চারা থেকে অপর চারার দূরত্ব ২০ সেন্টিমিটার হবে। মার্কার যন্ত্রের সাহায্যে চারা রোপণের স্থানটি চিহ্নিত করা যেতে পারে।