কৃষিজাগরন ডেস্কঃ ঢেমশি গাছ ঘাস জাতীয় নয় কিন্তু এর বীজ দানা শস্য হিসাবে বেবহার করা হয় তাই ঢেমশি কে ছদ্ম দানা শস্য বা Pseudo cereals বলা হয়।ঢেমশি বিশ্বের প্রথম দানা শস্য হিসাবে চাষ করা হয়। এর উৎপত্তি স্থল দক্ষিণ এশিয়া ৫৩০০ খি : পূর্বে সন্ধান পাওয়া যায়।
ঢেমশি চাষের উপকারিতা
ঢেমশি এমন একটা অর্থনৈতিক ফসল যার ৯০% ব্যবহার করা যায় , ডিমের পরেই (১০০%) ঢেমশির স্থান এর পর ধান, গম (৬৪%) এবং এতে আয়রন , প্রোটিন , এমাইনো এসিড , লিপিড , ফাইবার এবং ভিটামিন সব ধরণের খাদ্য গুন বিদ্যমান, এই ফসল অনুর্বর জমিতেও চাষ করা যায় , এতে আগাছার, রোগ পোকার উপদ্রব না বললেই চলে এবং এর ওষুধি গুনেও আছে।
আরও পড়ুনঃ বীজ পরিষ্কার এবং গ্রেডিং পদ্ধতি
ঢেমশির ব্যবহার :
১. শাক হিসাবে
২. মধু উৎপাদনে
৩. সবুজ সার হিসাবে
৪. মাটির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে
৫. আগাছা নিবারণের জন্য
৬. জঙ্গলের পশু পাখিদের খাবার যোগান দেয়ার জন্য
৭. মধুমেয়, হার্টের , ক্যান্সার রোগীদের জন্য
৮. আটা হিসাবে
৯. বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্য উৎপাদনে ( শিশু আহার , কেক , বিস্কুট , চকলেট , নুডুলস ইত্যাদি)
১০. ওষুধি গাছ হিসাবে
বীজের পুষ্টি গুন :
প্রোটিন = ১৩-১৫%
শর্করা = ৬৭-৭৫%
ফাইবার = ৫-১১%
লিপিড = ১.৫-৪%
তেল = ১৬-২০%
লিনোলিক এসিড = ৯৫%
ভিটামিন = B1 এবং B2
জলবায়ু:
ঠান্ডা আদ্রতা যুক্ত জলবায়ুতে ভালো হয় , অঙ্কুরোদগমের সময় তাপমাত্রা ২০-৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর বেশি থাকলে ভালো হয়।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন সঠিক পদ্ধতিতে বীজ শোধন প্রক্রিয়া,লাভ হবে দ্বিগুন
মাটি :
ঢেমশি চাষের জন্য মাটির পি এইচ ৪-৬ যেকোনো ধরণের মাটিতে চাষ করা যায় , তবে বেলে দোআঁশ মাটি হলে ভালো হয় , পতিত জমিতেও চাষ করা যেতেপারে।
উন্নত জাত:
উন্নত জাত গুলি হলো VL-7, PRB-1, হিমপ্রিয়া, শিমলা B-1 তবে দেখাগেছে দানার আকার ও ফলনের দিক থেকে VL-7 জাত টি পশ্চিমবঙ্গের জন্য উপযুক্ত এবং PRB-1 জাত টিও ভালো এটি মধু উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত এবং এর বীজ গোল ছোট আকারের ফুলের রং সাদা হয়।
বীজের হার:
বীজ সারিতে বুনলে হেক্টর প্রতি ২৮-৩০ কেজি বীজের প্রয়োজন , সারি থেকে সারির দূরত্ব ২০ সেন্টিমিটার এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১০ সেন্টিমিটার, বীজ সারিতে লাগানোর সময় ১ থেকে ১.৫ ইঞ্চি গভীরতায় যেন থাকে তাহলে অঙ্কুরোদ্গম ভালো হয়।
ড:দেবাশীষ মাহাত
বিষয় বস্তু বিশেষজ্ঞ (শস্য বিজ্ঞান বিভাগ)
উত্তর দিনাজপুর কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়