হুগলি জেলায় প্রাক-খরিফ মরসুমে চিনাবাদামের চাষ করে থাকেন অনেকে। রাজ্যের অন্যত্রও খরিফ ও রবি মরসুমের তুলনায় ফাল্গুন-চৈত্র মাসে চিনাবাদাম চাষের চল বেশি। শুধু অর্থকরী ফসল হিসাবেই নয়, মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতেও এর অসীম ভূমিকা। গম, তিল, অড়হর ও আউশ ধানের সঙ্গে ‘সাথী ফসল’ হিসাবে এই চাষ করা যায়। একক ভাবে চাষ করেও ভাল লাভ হয়।
চীনাবাদাম একটি স্বল্পমেয়াদি অর্থকরী ফসল। এটি একটি উৎকৃষ্ট ভোজ্য তেলবীজ। চীনাবাদামের বীজে শতকরা ৪৮ থেকে ৫০ ভাগ তেল এবং শতকরা ২২ থেকে ২৯ ভাগ আমিষ রয়েছে।পৃথিবীতে উৎপাদিত বাদামের মধ্যে চীনাবাদাম সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কাঁচা ও ভাজা তো বটেই মাখন, জ্যাম, চানাচুর, কেক, বিস্কুট, তরকারি, ভর্তা ও তেল তৈরিতে চীনাবাদাম ব্যবহার করা হয়। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চীনাবাদামের রয়েছে নানা রকমের অবদান। যেমন চীনাবাদামের প্রোটিন দেহ গঠনে ও মাংশপেশি তৈরিতে সাহায্য করে।
মাটি
চিনাবাদামের ফুল মাটির উপরে ফুটলেও গর্ভাশয়ের নীচের যে বৃন্তটি শুঁটি গঠন করে, সেটি মাটির নীচে চলে যায় এবং সেখানে পুষ্ট হয়ে বাদামে পরিণত হয়। এই কারণে ভাল নিকাশি ব্যবস্থা আছে এমন হাল্কা, ঝুরঝুরে দোঁয়াশ মাটিতে বাদাম চাষ করা উচিত।
বীজ বপনের সময়
সাধারনত এপ্রিল মাস থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি সময় চীনা বাদাম চাষের জন্য উপযুক্ত সময়। তবে রবি মৌসুমে চাষ করতে হলে আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বীজ বপন করা যায়।
সেচ
একটা সেচ দিয়ে জো অবস্থায় বীজ বুনতে হবে। বেলে মাটি হলে ৫ দিন অন্তর, দোঁয়াশ মাটি হলে ১০ দিন অন্তর হাল্কা সেচ দেওয়া উচিত। ফুল আসা ও শুঁটি পাকার সময় যেন অবশ্যই সেচ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ
সার ব্যবস্থাপনা
ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ করতে হবে। চীনা বাদাম চাষে এক হেক্টর জমিতে ৫-৭ টন পচা গোবর, ইউরিয়া ২০-৩০ কেজি, টিএসপি ১৫০-১৭০ কেজি, এমওপি ৮০-৯০ কেজি, জিপসাম ১৬০-১৮০ কেজি প্রয়োজন হয়ে থাকে।
আন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা
বীজ বপনের ১৫-২০ দিন পর একবার নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কারকরতে হবে। মাটি শক্ত হয়ে গেলে এবং ফুল আসার কসময় গাছের গোড়ায়মাটি তুলে দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ
ফসল সংগ্রহ
জাত ও মৌসুমভেদে চীনাবাদাম ১২০–১৫০ দিনের মধ্যে সংগ্রহ করা যায়।