গোলাপের মতো এত প্রেমময় নয়, টিউলিপের মতো যত্নও চায় না সে। কার্নেশন ফুলের মতো শত পাপড়ির ছড়াছড়িও নেই তার। তবু সৌন্দর্যের রঙিন সরলতা দেখে যে কারো চোখ আটকে যায় ফুটন্ত জারবেরায়। শীতকালীন ফুল হিসাবে জারবেরা অসাধারণ।
জার্মান প্রকৃতিবিদ ট্রানগোট জার্বার এর নামানুসারে ফুলটির নামকরণ করা হয়েছে জারবেরা।যদিও এর জন্ম বিদেশের মাটিতে,তাও আপনি চাইলে আপনার বাড়িতে উঠোনে,ছাদের টবে খুব সহজেই চাষ করতে পারেন জারবেরা।ফুলদানি সাজাতে,ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে এর জুড়ি মেলা ভার।তবে এই ফুল শীতের একটু শেষেই ভালো হয়।
মাটি তৈরি
মাটি গভীর হালকা এবং মাটি থেকে জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো হওয়া চাই। সাধারণত এক মিটার গভীর মাটির স্তর জারবেরা চাষের উপযুক্ত।এই ফুলের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত বেলে দোআঁশ মাটি। খানিকটা বাগানের মাটির সঙ্গে বালি এবং জৈব সার, কোকো পিট যদি না থাকে কাঠের গুঁড়ো মিশিয়ে ভালো করে মাটি বানাতে হবে।
আরও পড়ুনঃ বিলিম্বি এ দেশের হারিয়ে যেতে বসা এক অপ্রচলিত দেশি ফল
সেচ প্রয়োগ
জল দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয়।কারণ জারবেরা ক্ষেতে জলাবদ্ধতা মাটিবাহিত রোগ সংক্রমণ ত্বরান্বিত করে। আবার মাটিতে জলের অভাব হলে গাছ ঢলে পড়ে,সেক্ষেত্রে ফুলের পুষ্পদন্ড ছোট হয়ে যায়।
সার প্রয়োগ
আপনার মাটির মানের উপর নির্ভর করে সার প্রয়োগ করতে হবে। এই ফুল সমস্ত গ্রীষ্মে প্রস্ফুটিত রাখার জন্য, জলীয় দ্রবণীয়, রাসায়নিক সারের সাথে শিকড়ের চারপাশে একটি জৈবিক কম্পোস্ট প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ জমিতে পেগ লাগিয়ে ফসলের কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ, এর সম্পূর্ণ পদ্ধতি পড়ুন
জারবেরার বিভিন্ন রোগ-পোকা এবং তার প্রতিকার
জারবেরা দ্রুত বর্ধনশীল একটি ফুল ফসল। গাছের বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ ও গাছ থেকে সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পরিক্রমায় পরিমিত পরিমাণ সার প্রয়োগ করতে হবে। চারা লাগানোর পর নতুন শিকড় গজানো শুরু হলে সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে।সেজন্য সারের মাত্রা নির্ধারণ ও প্রয়োগে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।কোন কারণে যদি গাছের কোন পাতায় বা ফুলে পোকার আক্রমণ হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ সেই ডাল বা ফুল কেটে দিন। গোড়ার আগাছা পরিষ্কার করে রাখুন।
বাজার
বিয়ে, গায়ে হলুদ, নববর্ষসহ যেকোনো বড় বড় অনুষ্ঠানে এ ফুলের কদর বাড়ছে। দেশের ফুলের বাজারে জারবেরার যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ লাখে নয়, চন্দন চাষ করে কোটি টাকা আয় করুন, মিলছে ভর্তুকিও
লাভ
একটি গাছ থেকে প্রায় ৬০ থেকে ৭০টি ফুল পাওয়া যায়। প্রতিটি ফুলের দাম ৩০ থেকে ৫০ টাকা। মাসে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।