‘ছাদ- কৃষি’ শব্দটির সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত আর আজকাল তো বাড়িতে আমরা প্রায় প্রত্যেকেই সবুজের সন্ধানে বাগান করে থাকি। বাড়ির বাগানে বিভিন্ন উদ্ভিদের বাহার দেখে চোখ ও মন দুইয়ের-ই প্রশান্তি ঘটে। উদ্ভিদের সৌন্দর্য রক্ষার্থে এবং তার থেকে ফল ও ফুল নিরন্তর পেতে হলে সঠিক পদ্ধতিতে পরিচর্যা একান্ত আবশ্যক একটি কাজ। তবে বাড়িতে বসানো উদ্ভিদে জৈব সার ব্যবহার করতে আমরা সকলে আগ্রহী হলেও ঠিক কীভাবে কোন সার প্রয়োগ করব তা অনেকেরই অজানা। হাতের কাছে রয়েছে এক সহজ সমাধান। আজ আমরা আপনাদের ডিম থেকে তৈরি একটি কম্পোস্ট সম্পর্কে বলব, যার প্রয়োগ উদ্ভিদে অত্যন্ত কার্যকরী প্রভাব দেখায়, চলুন দেখে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
কম্পোস্ট হিসাবে ডিমের খোসা কীভাবে ব্যবহার করবেন (How to use egg shell as compost) ?
১. আমরা ডিমের খোসাটি একটি মিক্সারে ভাল করে গুঁড়া করতে পারি। এরপর এই গুঁড়া জল দিয়ে পাতলা করে গাছের নীচে ব্যবহার করতে পারি। এই সার টমেটো এবং বেগুনের মতো শাকসব্জিতে জলজনিত রোগ এবং পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করা- এর মতো রোগের চিকিত্সা করতে কার্যকর। এছাড়া এই কম্পোস্ট গোলাপ গাছে প্রয়োগ করলে ফুল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। উদ্ভিদ বৃদ্ধির প্রাথমিক পর্যায়ে এই পদ্ধতিটি প্রয়োগ করা যেতে পারে। টবে মাটির মিশ্রণ প্রস্তুত করার সময় ১-৪ ডিমের খোসার চূর্ণ দিয়ে একটি গাছ লাগানো যেতে পারে।
২. এগ শেল টি – ডিমের খোসা সিদ্ধ জল উদ্ভিদের দ্রুত বর্ধনশীলতার জন্য পৃথিবীর অন্যতম এক সার। এক লিটার জলে ৫ টি ডিমের খোসা সিদ্ধ করুন। এই জল উষ্ণ আবহাওয়ায় ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রাখুন। পরের দিন মিশ্রণটি মাটিতে প্রয়োগ করুন অথবা উদ্ভিদে স্প্রে করতে পারেন, এতে আরও বেশি ফল পাওয়া যায়। যদি ফুলের গাছ হয় তবে এর প্রয়োগে আরও বেশি ফুল পাবেন।
৩. একটি মিক্সারে দুটি ডিম, একটি কলার খোসা এবং তিন চা চামচ চা বর্জ্য মিশ্রিত করুন। এই মিশ্রণটি বেশি ফলনের জন্য উদ্ভিদে প্রয়োগ করতে পারেন। আপনি প্রতি মাসে এটি করতে পারেন। কোনও সার প্রয়োগের আগে মাটিকে আর্দ্র রাখা উচিত। মনে রাখবেন, সান্ধ্যকালীন সময় সার প্রয়োগের জন্য সেরা সময়।
৪. যে কোনও উদ্ভিদে কলার খোসা এবং ডিমের খোসা গাছের নিচে ব্যবহার করা হয় তবে মাটি আরও উর্বর হবে। কলার খোসা পটাশিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় তা সার রূপে উদ্ভিদে প্রয়োগ অত্যন্ত কার্যকর সুফল দেখায়।
৫. ডিমের খোসা মিহি গুঁড়ো করে উদ্ভিদে প্রয়োগ করুন। এতে শামুক, পোকামাকড় এবং অন্যান্য কীটপতঙ্গ থেকে উদ্ভিদ সুরক্ষিত থাকবে।
বীজের অঙ্কুরোদগমে ব্যবহার (Use in seed germination) -
ডিমের খোসা কেবল সার হিসাবে নয় বীজের অঙ্কুরোদগমের জন্যও ব্যবহৃত হয়। ডিমে একটি ছোট গর্ত করুন এবং এতে সামান্য মাটি ও সার দিয়ে সর্বাধিক তিনটি বীজ রাখুন। যখন বীজ অঙ্কুরিত হয়, কেবলমাত্র একটি স্বাস্থ্যকর উদ্ভিদ আপনি নিতে পারেন এবং অন্যগুলি অপসারণ করতে পারেন। ডিমের খোসা সমেত আপনি উদ্ভিদটি কোনও পাত্রে রোপণ করতে পারেন। ৩ সপ্তাহের মধ্যে ডিমের খোসাগুলি মাটিতে ভালভাবে মিশে যাবে। এই প্রাকৃতিক বীজ অঙ্কুরোদগম পদ্ধতি এবং সার প্রয়োগকে আপনার কৃষিকাজ জীবনের একটি অংশ করুন।
Image source - Google
Related link - (New technology in crop cultivation) ফসলের উন্নত ফলনের জন্য এবং সারের খরচ কমাতে ব্যবহার করুন এই চাপান সার