কাঁঠাল পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ ফল । বানিজ্যিক ভাবে আমদের রাজ্য়ে এই ফল চাষ না হলেও সুমিষ্ট এই কাঁঠাল রাজ্য়ের সর্বত্রই কম বেশী হয়ে থাকে এবং ছোট বড় সকলের কাছেই জনপ্রিয় সুমিষ্ট এই ফল। কিন্তু আগের তুলনায় গ্রাম বাংলায় এখন অনেক কম পরিমানে কাঁঠাল হয়। অন্য়দিকে কাঁঠাল গাছের সংখ্য়া কমে গেলেও এর চাহিদা কিন্তু শহরাঞ্চলে দিন দিন বেড়েই চলেছে । আগে গোটা কাঁঠাল বিক্রি হত কিন্তু এখন কলকাতায় কাঁঠালের কোয়া ছারিয়ে সেগুলি বাজারে খুচরো হিসাবে বিক্রি হয়।
তবে বৈচিত্রের কারনে দেশী কাঁঠালের পাশাপাশি দেশে ক্রমেই জনপ্রিয়তা লাভ করছে ভিয়েতনামের লাল রংয়ের কাঁঠাল। মুলত থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনাম কাঁঠালের বেশকিছু সংখ্যক উন্নত জাত অবমুক্ত করেছে। তার অন্যমত হলো ভিয়েতনামি আঠাবিহীন রঙ্গিন কাঁঠাল। তবে এই কাঁঠালের সাইজ কিছুটা ছোট হয়।
এসব জাতের কাঁঠালে আঠা, ভোঁতা বা ছোবড়াও নেই। এসব কাঁঠাল কেবল কোয়া বা কোষে ঠাসা। ফল অতি সুস্বাদু, মিষ্টি এবং রং-বেরঙের (গোলাপী, লাল)। সাধারণ মানের কাঁঠালের চেয়ে দাম তিন থেকে চারগুণ বেশি। এর অন্যতম সুবিধা হলো এই জাতের কাঁঠালের বাগানে খরচ কম লাভ বেশি। এর একটা বারোমাসি জাতও আছে। তা লাগানো হলে বারোমাস ধরে অসময়ে প্রচুর ফল বেশি দামে বিপনন সুবিধা নিশ্চিত হতে পারে। প্রতিকুল অবস্থায়ও ভারত কাঁঠাল উৎপাদন কারি দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং নেপালের অবস্থান ৩য়, ৪র্থ এবং ৫ম।
পশ্চিমবঙ্গে অতি প্রাচীন কাল থেকে সাধারণত- খাজা, আদারসা ও গালা নামের তিন ধরণের কাঁঠাল পাওয়া যায়। কিন্তু এসবের বাইরেও বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের যেসব কাঁঠাল পাওয়া যাচ্ছে তার মধ্যে ভিয়েতনামি লাল কাঁঠাল গাছ অন্যতম । এর ইংরেজী নাম Gac Baby Jackfruit।
আরও পড়ুনঃ স্ট্রবেরি চাষ করে ৩ মাসে আয় ২৫ লাখ টাকা আয় করে তাক লাগিয়ে দিলেন বাংলাদেশের কৃষক!
যেনে নিন জমিতে বা বাড়িতে লাল কাঁঠাল চাষ করার নিয়ম
বর্ষায় বা বৃষ্টিতে জল জমে না এমন উঁচু ও মাঝারি সুনিষ্কাষিত উর্বর জমি কাঁঠালের জন্য উপযোগী। ছাদে বা ড্রামে কাঁঠালের চারা লাগাতে চাইলে মাঝারি থেকে মোটামুটি বড় মাপের একটি ড্রাম নির্বাচন করতে হবে। তারপর সেখানে মাটি ভরে চারা লাগানোর উপযোগী করে মাটি প্রস্তুত করতে হবে।
কাঁঠালের বীজ থেকে কাঁঠালের চারা তৈরি করা হয়। কিন্তু কলম এর চারাতে ফলন ভালো হয়। গুটি কলম, ডাল কলম, চোখ কলম, চারা কলমের মাধ্যমেও চারা তৈরি করা যায়। এছাড়া আপনি বিভিন্ন নার্সারী থেকেও ভিয়েনামী লাল কাঁঠালের চারা কিনতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি নিশ্চিত হয়ে নিবেন দোকানী আপনাকে ভালো মানের কলম চারা দিচ্ছে কিনা।
আরও পড়ুনঃ স্ট্রবেরি পেয়ারা দেখেছেন? শিখে নিন এই বিদেশি ফলের চাষ পদ্ধতি
বাড়ির আঙিনায়, ছাদে ড্রামে, পুকুরপাড়ে, বাণিজ্যিক বাগানে এই লাল কাঠাল লাগানো যায়। বসতবাড়িতে শখ করে দু-একটা গাছ লাগানো যেতে পারে। সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত চারা বা কলম মধ্য জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য শ্রাবণ মাসে রোপণ করতে হয়। গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১২ মিটার করে রাখলে ভালো হয়। চারা রোপনের পর নিয়মতি পরিচর্যা ও দেখভাল করা ছাড়া আর কিছু করার প্রয়োজন নেই।
কাঁঠাল গাছে ফুল আসার পর মুচি থেকে কাঁঠাল বড় হয়ে সেই কাঠাল পাকতে ১২০-১৫০ দিন সময় লাগে।