উপকূলীয় এলাকায় বাড়ছে লবণাক্ত জমির পরিমাণ। ফলে আগের মতো অনেক ফসলই এখন চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার চাষাবাদ করলে ভালো ফলনও পাওয়া যায় না। এমন পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক বছরে লবণাক্ত জমিতে সূর্যমুখী চাষে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। এতে উৎকৃষ্টমানের তেলের চাহিদা পূরণের পাশপাশি কৃষকরা আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন।
সূর্যমুখী ফুলের চাষ করলে ফুল থেকে তেল, খৈল ও জ্বালানি পাওয়া যায়। প্রতি কেজি বীজ থেকে কমপক্ষে আধা লিটার তৈল উপাদন সম্ভব। প্রতি কেয়ারে ৭ মণ থেকে ১০ মণ বীজ উৎপাদন হয়। তেল উপাদন হবে প্রতি কেয়ারে ১৪০ লিটার থেকে ২০০ লিটার পর্যন্ত। প্রতি লিটার তেলের বাজার সর্বনিম্ন বাজার মূল্য ২৫০ টাকা। প্রতি কেয়ার জমিতে খরচ হয় সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ হাজার টাকা।
আরও পড়ুনঃ পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করবে ধানকে, জেনে নিন বিশেষত্ব
খয়রামারীর কৃষক প্রফল্ল মন্ডল বলেন, ‘আমাদের এ অঞ্চলের জমিগুলো এক ফসলী, এতে সূর্যমুখী তেমন একটা চাষ হতো না। গত বছর কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে জানা গেছে লবণাক্ত জমিতে বারি সূর্যমুখী-২ জাতটি ভালো হয়। সে কারণে আমি ৩৩ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। ফলনও হয়েছে ভালো। এবার একর প্রতি ২০ মণ বীজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। আর যেহেতু তেলের দাম দিনকে দিন বাড়ছে সে কারণে আগামীতে আরও বেশি জমিতে সূর্যমুখী চাষাবাদ করব।’
গ্রামের আরেক কৃষক সুবীর দাস বলেন, ‘সূর্যমুখী বেশি লাভজনক ফসল । প্রথমবার কৃষকেরা সূর্যমূখী চাষ করে লাভবান হবেন বলে আশা করছি। আগামীতে এলাকায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ আরো বাড়বে।’
আরও পড়ুনঃ খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন, দেখে নিন হাঁস পালনের সহজ পদ্ধতি
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সার্বিক পরামর্শে নিয়মিত পরিচর্যা ও সুষম সার প্রয়োগে ফলনও হয়েছে ভালো। পাশাপাশি পাখির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় এসব ফসলের মাঠে স্থানীয় প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে।
বর্তমানে আমাদের দেশে ভোজ্য তেলর দাম ক্রমাগত উর্দ্ধমুখী। আবার এই সব তেলের গুণগত মানও ভালো নয়। অন্য়দিকে সূর্যমুখীর তেলের গুনগত মান অনেক ভাল ।তাই লবণাক্ত জমিতে সূর্যমুখীর উৎপাদন বাড়াতে পারলে দেশে ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমবে বলে মত কৃষি বিশেষজ্ঞদের।