ভারতবর্ষে কৃষিকাজের জন্য যে পরিমাণ জলের প্রয়োজন তার ৬১.৬ শতাংশ জল আসে ভূ-গর্ভ থেকে, ২৪.৬ শতাংশ আসে খাল (Canal) থেকে এবং ১৩.৮ শতাংশ আসে অন্যান্য উৎস থেকে। কৃষিতে ভূ-গর্ভস্থ জলের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাংশে ভূ-গর্ভস্থ জলের প্রথম স্তর আগামী পনেরো বছরে ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর কারন যে সব অঞ্চলে চিরকাল গম, ভুট্টা, বাজরা জাতীয় কম পিপাসু ফসলের চাষ হত, সেখানে এখন ধান ও আখের চাষ হচ্ছে।
জল সংরক্ষণের বিভিন্ন উপায়গুলি হলঃ
জলের অভাবের জন্য খাদ্যের অভাব দেখা দিতে পারে বিশ্বজুড়ে, বলছে একটি সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন। রাষ্ট্রপুঞ্জ বাহান্নটি দেশের একশো আট জন বিশেষজ্ঞকে নিয়ে গড়েছিল জলবায়ু পরিবর্তন-বিষয়ক উপদেষ্টামণ্ডলী। ৮ ই অগস্ট, ২০১৯ প্রকাশিত প্রতিবেদনে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই প্রথম পৃথিবীর প্রধান খাদ্য উৎপাদক দেশগুলিতে একসঙ্গে জলাভাব হতে চলেছে। ফলে বিশ্বব্যাপী খ্যাদাভাব দেখা দিতে পারে। কোপ পড়বে গরিবের উপরেই বেশি। তবে এখনই যদি সব দেশ পূর্ণ উদ্যমে সচেষ্ট হয়, তবে জলসংকট রোখা যেতে পারে। বিদ্যুতে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার করতে আজ থেকে প্রাণপণ চেষ্টা করলেও কাজ হতে সময় লাগবে। অথচ ভারত-সহ সতেরোটি দেশে জলসংকট এখনই শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকে মনে করেন, ভারতের হাতে পাঁচ বছরের বেশি সময় নেই। যে কাজগুলো এখনই করতে হবে তা হল জলের সঞ্চয়, অপচয় থামানো, জলসৃজন ও ন্যায্য জলবণ্টন।
দীর্ঘমেয়াদি উপায় –
জল সংরক্ষণের কয়েকটা দীর্ঘমেয়াদি উপায় আছে, যেমন গাছ লাগানো। একটা-দুটো নয়, এক লক্ষ কোটি গাছ। বৃষ্টির জল সংরক্ষণের উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে যেমন শিল্প এলাকাগুলিতে এবং নতুন তৈরি পাকাবাড়ীগুলিতে বৃষ্টির জল সংগ্রহের পরিকাঠামো বাধ্যতামূলক করতে হবে। পুকুর, হৃদ ও অন্যান্য জলাশয়ে জলসঞ্চয়ের যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে। জনগনকে সচেতন করাতে হবে ভুগর্ভস্থ জল সমস্যার আসন্ন বিপদগুলি সম্বন্ধে। প্রতিটি এলাকার জলস্তরের কথা চিন্তা করে নলকূপ বসানো বা কূপ খোঁড়ার অনুমতি সরকারকে দিতে হবে। পৃথিবীতে নোনাজলই বেশি। মিষ্টি জল মাত্র দুই শতাংশ, তারও বেশি খানিকটা দুই মেরুতে বরফ হয়ে আছে। স্রেফ ০.৫ শতাংশ ব্যবহারের যোগ্য। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের জল বাড়ছে, মিষ্টি জলের অনুপাত কমছে। তাই নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সমুদ্রের জল নুনমুক্ত করে মিষ্টি জল বানাতে পারলে অভাব অনেকটা মেটে। ভারত সহ বেশ কিছু দেশে এই প্রযুক্তি আরম্ভ হয়েছে যেমন ইজরায়েল সৌরশক্তিতে জলের কারখানা চালায় এবং তা থেকে কৃষিকাজ সম্পন্ন হয়। জল সমস্যা সমাধানের প্রকল্পগুলি সবই ব্যয়সাপেক্ষ এবং পানীয় জলের জোগান বজায় রেখে যাওয়ার আর্থিক চাপ বহন করতে হবে অপেক্ষাকৃত সচ্ছল নগরবাসীদের, যাতে গরিবরাও জল পান।
Image source - Google
Related link - (Kadaknath chicken farming) কড়কনাথ মুরগি চাষ করে আয় করুন লক্ষাধিক
এই প্রজাতির গরু পালন করলে আয় হবে লক্ষাধিক