ফলের বাজারে গেলে আমের ঘ্রানে অনেকেই স্তম্ভিত হয়ে যান কোন আম কিনবেন? বাজারে থরে থরে সাজানো পাকা আম। কিন্তু, কোনটা বেশি স্বাদযুক্ত বা কোনটা বেশি মিষ্টি সে দ্বিধাবোধ সকলেরই থাকে |
তাই এই নিবন্ধে আমের কয়েকটি উন্নত জাত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো;
আমের জাত (Mango varieties):
প্রতিটি জাতের আমের চেহারা, রং, রূপ, ঘ্রাণ, স্বাদ একে অন্যের থেকে আলাদা। ক্ষীরভোগ, মোহনভোগ, ফজলি, চিনি ফজলি, বোম্বাই, গোলাপখাস, কাকাতুয়া, দাদভোগ, চম্পা, সূর্যপুরি, কাঁচামিঠা, কলামোচা, শীতলপাটি, লক্ষ্মণভোগ, গোলাপবাস, আম্রপালি, মল্লিকা, বেগমবাহার, হিমসাগর ইত্যাদি জাতের আম এখনো দেখা যায়।
হিমসাগর (Himsagar):
হিমসাগর আম খুবই জনপ্রিয় | এই জাতের আম পাকলে হলুদ সবুজ রঙের হয়ে যায় | এই আমগুলি সাধারণত মাঝারি আকারের হয়ে থাকে | এগুলি খুব মিষ্টি, খুব সুস্বাদু ও সুঘ্রাণযুক্ত হয়ে থাকে | এই আমের জাত হলো সবচেয়ে সেরা জাত|
গোপালভোগ:
এই জাতের আম মৌসুমে সবার আগে দেখা যায় | গোপালভোগ আম মাঝারি আকারের হয়ে থাকে |এই আম পাকলে হলুদাভ সবুজ রঙের হয়ে থাকে | এই আমে কোনো আঁশ থাকেনা, এটি খেতে খুবই মিষ্টি হয় এবং আঁটি পাতলা হয় |
ল্যাংড়া আম:
এই আম দেখতে অনেকটা আয়তাকার গোল হয়ে থাকে | এই আমের খোসা হালকা সবুজ রঙের হয় | এই আম পাকলে পুরো হলুদ রঙের হয়না | খোসা খুবই পাতলা হয় এবং শাঁস হালকা হলুদ রঙের হয় | এই জাতের আম ঠিক করে না পাকলে খেলে মুখ চুলকায় | এই আম সুঘ্রানের জন্য খুবই বিখ্যাত |
ফজলি আম:
এটি টক গন্ধযুক্ত বড় আকারের মিষ্টি স্বাদের আম | এটি কালচে সবুজ রঙের আম |
আমের মান বৃদ্ধিতে টিপ প্রুনিং (Tip pruning):
আমকে সাধারণত ফলের রাজা বলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় উদ্ভাবিত হল আমের ফলন ও গুণগতমান বৃদ্ধির নতুন প্রযুক্তি- আমগাছের টিপ প্রুনিং। বর্তমানে আম চাষাবাদের এলাকা দিন দিন বাড়ছে। বাড়ির ছাদ থেকে শুরু করে বড় বড় বাগান পর্যন্ত গড়ে উঠেছে। বাড়ির আশেপাশে কিংবা ছাদে যে আমের জাতটি সবচেয়ে বেশি চাষ হয় সেটি হল বারি আম-৩ বা আম্রপালি। জাতটি আবার কেউ কেউ চাষ করেছেন টবে এবং ড্রামে। এর কারণ গাছে প্রচুর আম ধরলে আকারে ছোট হয়, গাছকে পর্যাপ্ত খাবার না দিলে আকার ছোট হয় এবং গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথেও আকার ছোট হয়। ফলে জাতটির বাজারমূল্যে দিন দিন কমছে।
আরও পড়ুন - Tuberose Cultivation: রজনীগন্ধা চাষের খরচ কমাতে ও ফলন বৃদ্ধিতে পলিথিন ব্যবহার করুন
আম বিজ্ঞানীরা এই নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন কয়েক বছর আগে। বর্তমানে সমস্যাটির সমাধান এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, আম সংগ্রহ করার পর অর্থাৎ জুলাই মাসে আমগাছের প্রত্যেকটি ডগার শীর্ষ প্রান্ত হতে ৩০ সে.মি. বা ১ ফুট পর্যন্ত কেটে দিলে পরবর্তী বছরে ওই গাছ থেকে বেশি ফলন ও গুণগতমানসম্পন্ন আম পাওয়া যায়। তবে জুলাই মাসে প্রুনিং করা ভাল। ফলন বাড়ার কারণ হিসেবে দেখা গেছে, ওই অংশ হতে ৩-৪টি নতুন ডগা বের হয় এবং নতুন শাখার বয়স ৫-৬ মাস হওয়ায় প্রায় প্রত্যেকটি শাখায় মুকুল আসে। বর্তমানে এই জাতটির ওজন ৬০-১৮০ গ্রাম থেকে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৫ থেকে ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
আরও পড়ুন - Cardamom farming - এলাচ চাষ করে প্রতি বিঘায় আয় করুন ১০ লক্ষ টাকা