বৈশাখ বাংলা বছরের প্রথম মাস অর্থাৎ আর একটি নতুন বছরের সূচনা। এ মাসে ঐতিহ্যবাহী মেলা, পার্বণ, উৎসব, আদর, আপ্যায়ন চলে। নতুন আবাহন আর প্রত্যাশার মাঝে কৃষক ফিরে তাকায় দিগন্তের মাঠে। এক পলকে জেনে নিই বৈশাখ মাসে পাট চাষে কৃষকের করণীয় বিষয়গুলো। ইংরেজি মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য মে পর্যন্ত সময় বৈশাখ মাস।
পাট চাষে কৃষকদের যা যা করতে হবে
বৈশাখ মাস তোষা পাটের বীজ বোনার উপযুক্ত সময়। ও-৪ বা ফাল্গুনী তোষা ভালো জাত। স্থানীয় বীজ ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জাতগুলো সংগ্রহ করতে পারেন।
দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটিতে তোষা পাট ভালো হয়। বীজ বপনের আগে প্রতি কেজি বীজ ৪ গ্রাম ভিটাভেক্স বা ১৫০ গ্রাম রসুন পিষে বীজের সঙ্গে মিশিয়ে শুকিয়ে নিয়ে জমিতে সারিতে বা ছিটিয়ে বুনতে হবে। সারিতে বুনলে প্রতি শতাংশে ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুনঃ ফুলকপি বা ব্রোকলি নয়,চাষ করুন ব্রাসেলস স্প্রাউটের,আয় হবে দ্বিগুন
তবে ছিটিয়ে বুনলে আরেকটু বেশি অর্থাৎ ৩৫ থেকে ৪০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। ভালো ফলনের জন্য শতাংশপ্রতি ৮০০ গ্রাম ইউরিয়া, ২০০ গ্রাম টিএসপি, ২৫০ গ্রাম এমওপি সার শেষ চাষের সময় মাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। জমিতে সালফার ও জিংকের অভাব থাকলে জমিতে সার দেয়ার সময় শতাংশপ্রতি ৪০০ গ্রাম জিপসাম ও ৫০ কেজি দস্তা সার দিতে হবে। শতাংশপ্রতি ২০ কেজি গোবর সার ব্যবহার করলে রাসায়নিক সারের পরিমাণ অনেক কম লাগে।
আগে বোনা পাটের জমিতে আগাছা পরিষ্কার, ঘন চারা তুলে পাতলা করা, সেচ এসব কাজগুলো যথাযথভাবে করতে হবে। এ সময় পাটের জমিতে উড়চুঙ্গা ও চেলা পোকার আক্রমণ হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ বেল ফুল চাষ করুন,খরচের থেকে আয় হবে দ্বিগুন,জেনে নিন সঠিক পদ্ধতি
সেচ দিয়ে মাটির উপযোগী কীটনাশক দিয়ে উড়চুঙ্গা দমন করতে হবে। চেলা পোকা আক্রান্ত গাছগুলো তুলে ফেলে দিতে হবে এবং জমি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। পোকা ছাড়াও পাটের জমিতে কা-পচা, কালপট্টি, নরম পচা, শিকড় গিট, হলদে সবুজ পাতা এসব রোগ দেখা দিতে পারে। নিড়ানি, আক্রান্ত গাছ বাছাই, বালাইনাশকের যৌক্তিক ব্যবহার করলে এসব রোগ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়।