কৃষিজাগরন ডেস্কঃ পুরনো পুকুরকে সংস্কার করে যেমন মাছের উৎপাদন বাড়িয়ে অর্থ উপার্জন করা যায় ঠিক তেমনি ওই পুকুরের পাড়কেও অর্থ উপার্জনের কাজে লাগাতেই হবে। পুকুরের পাড়ে বিভিন্ন মরসুমী শাকসব্জি ফলিয়ে বাড়তি আয় করা সম্ভব আর এই সমস্ত কাজগুলি বাড়ির মহিলারা সহজেই করতে পারে।
পুকুরের তলা থেকে পাড়ে আনা হিউমাস যুক্ত মাটিতে যদি লতানো সব্জি যেমন - কুমড়ো, লাউ, চাল কুমড়ো, পুঁইশাক,প্রভৃতি ফলন খুবই ভালো হয়। তাছাড়া মাঁচা করে উচ্ছে,ঝিঙ্গে ,শসা, প্রভৃতি চাষ করা যেতে পারে। এছাড়া পুকুরের পাড়ের কোনগুলিতে কলাগাছ লাগাতে পারলে খুবই ভালো ফলন হয়।সবকিছু মিলিয়ে একটি পুকুরকে যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় তাহলে ওই পুকুর থেকেই বছরে একটা বেশ ভালো টাকা আয়ের সম্ভাবনা থাকে।
আরও পড়ুনঃ মাছের উৎপাদন বাড়াতে ভরসা পুরনো পুকুরই -প্রথম পর্ব
শুধুমাত্র পুরনো পুকুর নয় গ্রামের সাধারণ পুকুর গুলির ও উৎপাদন ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও আমরা সেই সব পুকুরগুলোকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারি না। গতানুগতিক ধারা অনুযায়ী বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে চারামাছ মজুদ করার পর আর সারা বছর কোন পরিচর্যা করা হয় না। এতে পুকুরটি তার সঠিক ব্যবহার ও উৎপাদন থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে একটি পুকুর হল মাছ চাষের সম্পদ তাই এই সম্পদকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে মাছের উৎপাদন কিভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়েও আমাদের সর্বদাই ভাবা দরকার আমাদের এটা মনে রাখলে ভালো হবে "মাছ হচ্ছে জলের ফসল চাষ করলে লাভ ডবল, ছোট বড়ো জলাশয় সব পুকুরেই মাছ চাষ হয়"।
আমাদের মনে রাখতে হবে যে মাছ চাষে পশ্চিমবঙ্গের চাষীদের একটা পরম্পরা জ্ঞান আছে। এই পরম্পরা জ্ঞান এবং আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মেলবন্ধন করে যদি মাছ চাষ করা যায় তাহলে যে কেউ তার জীবন ও জীবিকা সচ্ছলভাবে অতিবাহিত করতে পারবে। আমাদের এটাও মনে রাখলে ভালো হবে আগামী দিনে হয়তো যারা মৎস্যবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছে তাদের সবাই চাকরি নাও পেতে পারে তবে যারা চাকরি পাবে না তাদের হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই যদি তারা মাছ চাষের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকে। আমাদের এই ছোট ছোট কার্যকলাপ একদিন ভারতবর্ষের বুকে আবারো নীলবিপ্লব আনতে পারে, যা আমাদের দেশ তথা ভারতবর্ষ মাছ চাষে পৃথিবীর বুকে আলোড়ন তৈরি করবে।
আরও পড়ুনঃ মাছের উৎপাদন বাড়াতে ভরসা পুরনো পুকুরই - দ্বিতীয় পর্ব