হাঁসমুরগি ছাড়াও পোল্ট্রির অন্তর্গত অন্যান্য পাখিগুলোকে আমিষজাতীয় খাদ্য উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়ে থাকে। সেজন্য কিছু কিছু প্রজাতির পোল্ট্রি শুধু মাংস উৎপাদনের পালন করা হয়। আর কিছু কিছু প্রজাতি ডিম ও মাংস উভয় উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। মাংস উৎপাদনকারী পোল্ট্রি প্রজাতিগুলোর মধ্যে রাজহাঁস অন্যতম। এরা খুব পরিশ্রমী এবং এদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি।
ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো
প্রাকৃতিক বা কৃত্রিমভাবে রাজহাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো যেতে পারে। যেভাবেই ফোটানো হোক না কেন উভয় ক্ষেত্রেই বাচ্চা ফুটতে ২৮-৩০ দিন (জাত/উপজাত অনুসারে) সময় লাগে। প্রাকৃতিকভাবে বাচ্চা ফোটানোর ক্ষেত্রে প্রতিটি কুঁচে রাজহাঁস দিয়ে ১০-১৫টি ডিম ফোটানো যায়। আর কুঁচে মুরগি দিয়ে ৩-৭টি ডিম ফোটানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন একবার হাত দিয়ে ডিম উল্টেপাল্টে দিতে হবে। কৃত্রিম উপায়ে ইনকিউবেটরের সাহায্যে বাচ্চা ফোটানোর ক্ষেত্রে তাপমাত্রা লাগবে ৪০° সেলসিয়াস। আর আপেক্ষিক আর্দ্রতা লাগবে ৮৫-৯০%। প্রতিদিন ৩/৪ বার ডিম উল্টেপাল্টে দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ বাড়ছে কোয়েলের চাহিদা, শিখে নিন এই তিন বিশেষ পদ্ধতি, লাভ হবে দ্বিগুন
রাজহাঁসের প্রজনন
পুরুষ রাজহাঁসের প্রজননকাল ৬-৭ বছর ও স্ত্রী রাজহাঁসের প্রজননকাল ৮-১০ বছর। বাচ্চা ফোটানোর ডিম উৎপাদন করতে হলে ৬-৭ মাস (২৪-২৮ সপ্তাহ) বয়সের সতেজ, সক্রিয় ও স্বাস্থ্যবান রাজহাঁস নির্বাচন করা উচিত। এক্ষেত্রে পুরুষ ও স্ত্রীর অনুপাত ১:৪ হতে পারে। তবে ১৪২ বা ১৯৩ হলে সবচেয়ে ভালো হয়।
আরও পড়ুনঃ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ছাগল পালন করবেন? জেনে নিন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ছাগল প্রজননের খুঁটিনাটি
রাজহাঁসের খাদ্য
যেহেতু এরা ঘাস খেতে পারে তাই রাজহাঁস সাধারণত চারণভূমিতে ছেড়ে দেয়া হয় যাতে সবুজ ঘাস খেতে পারে। এর সংগে অল্প পরিমাণে ভেজা মিশ্রিত খাদ্য দেয়া হয়ে থাকে। যদি আবদ্ধ অবস্থায় রাজহাঁসের বাচ্চা পালন করা হয় তবে প্রতিদিন প্রতিটি বাচ্চাকে গড়ে ৪০ গ্রাম মিশ্রিত গুঁড়ো খাদ্য দিতে হয়। এ খাদ্যে ১৯% আমিষ ও ২০৬০ কিলো ক্যালরি/কেজি শক্তি থাকা উচিত। তবে খোলা অবস্থায় পালন করলে এদেরকে চারণভূমিতে ছেড়ে দিতে হয়। আর সেসাথে দানাজাতীয় খাদ্য ভেঙ্গে টানা দুধ বা কোলের সাথে মিশিয়ে অল্প পরিমাণে খাওয়াতে হয়। তবে ৪ সপ্তাহ পরে আর কোনো দানাজাতীয় বা গুঁড়ো খাদ্য দেয়ার দরকার পড়ে না।
রাজহাঁস বাজারজাত করার ১ মাস পূর্ব থেকে মোটাতাজা করার জন্য বিশেষ খাদ্য দিতে হয়। এ সময়ে দানাজাতীয় ও ভেজা মিশ্রিত খাদ্য দিনে তিনবার খাওয়ানো উচিত।