এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 21 July, 2021 12:41 PM IST
Cattle hoof disease (image credit- Google)

ক্ষুরা রোগ গবাদিপশুর অত্যন্ত ছোঁয়াচে তীব্র প্রকৃতির ভাইরাসজনিত রোগ। এ রোগে আক্রান্ত পশুর মুখ ও পায়ে ঘা হবার ফলে খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না এবং খুঁড়িয়ে হাটে। গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, হরিণ ও হাতিসহ বিভক্তি ক্ষুরা বিশিষ্ট (Foot problem) প্রাণীদের মধ্যে এই রোগ দেখা দেয়। ৬ মাস বয়সের নীচের বাচ্চাদের এই রোগে মৃত্যু হয়। এই নিবন্ধে এই রোগের বিস্তারিত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো,

রোগের কারণ:

ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (Foot and mouth disease) নামক এক প্রকার ভাইরাস এ রোগ সৃষ্টি করে। সে কারণে ইংরেজিতে ক্ষুরা রোগকে এফ,এম,ডি বলে। এ ভাইরাস মোট ৭ রকমের হয়ে থাকে |

ক্ষুরা রোগের বিস্তার:

ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত পশুর লালা, ঘায়ের রস, মলমূত্র, দুধ ইত্যাদির মাধ্যমে এই ভাইরাস নির্গত হয়। এ ভাইরাস দ্বারা বাতাস ও খাদ্যদ্রব্য দূষিত হয় | আক্রান্ত পশুর ব্যবহূত দ্রব্যাদি ও পশুজাত দ্রব্যের (চামড়া, মাংস, দুধ ইত্যাদি) মাধ্যমে এ ভাইরাস একস্থান থেকে অন্যস্থানে  ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন -Pastured Poultry Farming: কিভাবে চারণভূমিতে হাঁস, মুরগি পালন শুরু করবেন?

ক্ষুরা রোগের লক্ষণ(Symptoms):

শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়; জিহ্বা, দাঁতের মাড়ি, সম্পূর্ণ মুখ গহ্বর, পায়ের ক্ষুরের মাঝে ঘা বা ক্ষতের সৃষ্টি হয়। ক্ষত সৃষ্টির ফলে মুখ থেকে লালা ঝরে, সাদা ফেনা বের হয়। কখনো  ফোসকা পড়ে। প্রাণী খোঁড়াতে থাকে এবং মুখে ঘা বা ক্ষতের কারণে খেতে কষ্ট হয়। অল্প সময়ে প্রাণী দুর্বল হয়ে পরে। এ রোগে গর্ভবতী গাভির প্রায়ই গর্ভপাত ঘটে। দুধালো গাভির দুধ উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়। বয়স্ক গরুর মৃত্যুহার কম হলেও আক্রান্ত বাছুরকে বাঁচিয়ে রাখা খুবই কঠিন। অর্থাৎ ৬ মার বয়সের নীচে আক্রান্ত বাছুরের ৯৫ শতাংশই মারা যায়।

প্রতিকার(Remedies):

আক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে আলাদা রাখতে হবে। অসুস্থ পশুর ক্ষত পটাশ বা আইওসান (০.০১ শতাংশ পটাশিয়াম পার ম্যাঙ্গানেট) মিশ্রিত জল দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। ফিটকিরির জল ১০ গ্রাম (২ চা চামচ) ১ লিটার জলে মিশিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। সোহাগার খৈ মধু মিশিয়ে মুখের ঘায়ে প্রলেপ দিতে হবে। নরম খাবার দিতে হবে। পশুকে শুষ্ক মেঝেতে রাখতে হবে; কোনো অবস্থায়ই কাদা মাটি বা জলে রাখা যাবে না। সুস্থ অবস্থায় গবাদিপশুকে বছরে ২ বার প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে। খাওয়ার সোডা ৪০ গ্রাম ১ লিটার জলে মিশিয়ে পায়ের ঘা পরিষ্কার করে সালফানাসাইড পাউডার লাগাতে হবে | সালফানাসাইড/টেট্রাসাইক্লিন অথবা উভয় ওষুধ ৫ থেকে ৭ দিন ব্যবহার করতে হবে।

খেয়াল রাখতে হবে কোনোভাবে যেন মাছি না বসে ক্ষত জায়গায়। এক্ষেত্রে সালফানিলামাইড পাউডার ও নিগুভন পাউডার নারিকেল তৈল এর সাথে বা ভেজেলিনের সাথে মিশ্রিত করে ঘায়ে লাগানো দরকার । ওষুধ লাগানোর আগে পায়ের ঘা হাইড্রোজেন পার অক্সাইড দ্বারা পরিস্কার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। মুখে ঘায়ের কারণে অতিরিক্ত লালা নির্গত ও খাওয়া ছেড়ে দিলে অবশ্যই স্যালাইন (৫% গ্লুকোজ +০.৯% সেডিয়াম ক্লোরাইড যুক্ত) শিরায় দিতে হবে। এর সাথে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স ইনজেকশন প্রয়োগে ঘা, সেরে উঠার পাশাপাশি খাওয়ার আগ্রহ বাড়বে। তবে সতর্ক থাকতে হবে শুধুমাত্র গ্লুকোজ ইনজেকশন প্রয়োগ করা যাবে না।

পরিচর্যা ও সতর্কতা:

রোগ যাতে না ছড়ায় সে জন্য আক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে  আলাদা করে চিকিৎসা করতে হবে।রোগাক্রান্ত পশুকে শুকনো জায়গায় রাখতে হবে, কোনো অবস্থাতেই কাদাজলে রাখা যাবে না | গোয়াল ঘর বা রুগ্ন পশুর ব্যবহূত দ্রব্যাদি ১-২ % কষ্টিক সোডা (১ বা ২ গ্রাম কষ্টিক সোডা ১০০ মি. লি. জলে মেশাতে হবে) বা ৪% সোডিয়াম কার্বোনেট (৪ গ্রাম সোডিয়াম কার্বোনেট ১০০ মি.লি. জলে মেশাতে হবে) দিয়ে পরিস্কার করতে হবে | ক্ষুরারোগে মৃত পশুকে ৪/৫ ফুট মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে হবে, কোনো ভাবেই খোলা স্থানে ফেলে রাখা যাবে না। ক্ষুরা রোগের টিকা সময়মতো পশুকে দিতে হবে |

আরও পড়ুন -Khaki Campbell Duck Farming: অধিক অর্থ উপার্জনে পালন করা খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস

English Summary: Cattle hoof disease: Learn about cattle hoof disease and prevention method
Published on: 21 July 2021, 12:41 IST