পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যে বিটল জাতের ছাগল পাওয়া যায়। এটি পাঞ্জাবের অমৃতসর, ফিরোজপুর এবং গুরুদাসপুর জেলায় প্রচুর সংখ্যায় পালন করা হয়। এই ধরণের ছাগলের কান ঝোলা, পা দীর্ঘ, লেজ ছোট ও পাতলা এবং শিং পিছন দিকে ঘোরানো থাকে। এই জাতের পুরুষ ছাগলের ওজন ৫০ থেকে ৬০ কেজি এবং স্ত্রী ছাগলের ওজন ৩৫ থেকে ৪০ কেজি হয়। এদের গাত্রে বাদামি বর্ণের দাগ বা কালো বর্ণের উপর সাদা বর্ণের দাগ পরিলক্ষিত হয়। এরা প্রতিদিন ২.৫ -৪ লিটার পর্যন্ত দুধ দিতে পারে।
খাদ্য -
মূলত খাদ্য হিসেবে এরা প্রায় সব ধরণের গাছপালা, পাতা, ঘাস খেয়ে থাকে। তবে বেশি দুধ এবং মাংসের জন্য সুষম এবং পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে।
বাসস্থান - একসাথে অনেক ছাগল পালন করলে বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনায় বাসস্থান তৈরি করা আবশ্যক। ছাগলের ঘরের চাল হিসেবে টিন, টাইল, গোলপাতা, খড় বা গাছের পাতা ব্যবহার করা যায়। আলাদা ঘর নির্মাণের সময় অবশ্যই উঁচু স্থান যেখানে বৃষ্টির জল জমে না এবং পর্যাপ্ত আলো বাতাস আসে এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে। প্রতিদিন সকাল বেলা ছাগলের বাসস্থান পরিষ্কার করতে হবে। বাসস্থানটি যাতে ভেজা ও স্যাঁতসেঁতে না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। শীতকালে বেশি ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করার জন্য ছাগলের ঘরে প্রয়োজন অনুযায়ী চট পলিথিন দিয়ে পর্দার ব্যবস্থা করতে হবে। শীতকালে বাচ্চাকে রাতে মায়ের সাথে ব্রুডিং প্যানে রাখতে হবে।
বিটল ছাগলের প্রজনন -
একটি পুরুষ বিটাল ছাগল তাদের ১২-১৫ মাস বয়সে পরিপক্ক হয়ে ওঠে এবং একটি ছাগী তাদের ২০-২২ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা প্রসব করে। প্রতি বছর ছাগী এক জোড়া করে বাচ্চা দেয়।
বিটল ছাগলের পরিচর্যা -
বিটল ছাগল সব ধরণের আবহাওয়াতে নিজেদের মানিয়ে নিতে সক্ষম৷ গর্ভবতী বিটল ছাগলকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং শুকনো স্থানে রাখতে হয়। ৬-৮ সপ্তাহ আগে দুধ নেওয়া বন্ধ করে দিতে হয়। তাদের ভাল মানের ভাল সুষম ও পুষ্টিকর খাবার দরকার। তাদের খাদ্য প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট পর্যাপ্ত অনুপাত নিশ্চিত করতে হবে। পুষ্টিকর খাদ্যের পাশাপাশি তাদের নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিষ্কার জল সরবরাহ করতে হবে।
বাচ্চা জন্ম নেওয়ার পর স্বচ্ছ সূক্ষ্ম কাপড়ে তাকে পরিষ্কার করতে হবে৷ এর নাক, মুখ, কান-এর প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে৷ জন্মের পর যদি বাচ্চা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হয় বা এই জাতের ছাগলের কোনও রোগের উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে পশু চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত৷
ছাগলের সাধারণত কী কী রোগ হয় ?
ছাগলের প্রধানত যে রোগগুলো বেশি হয় সেগুলি হলো –
১। পি পি আর
২। বসন্ত
৩। ক্ষুরা রোগ এবং
৪। ওলান প্রদাহ
টিকাপ্রদান –
ভাইরাসজনিত রোগ যেমন পিপিআর, গোটপক্স, ক্ষুরা রোগ ইত্যাদি এবং ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ যেমন – এনথ্রাক্স, ব্রুসেলোসিস ইত্যাদি খুবই মারাত্মক বলে এগুলির বিরুদ্ধে যথাযথ টিকা প্রদান করা আবশ্যিক। যে সকল ছাগীকে পূর্বে পিপিআর, গোটপক্স, একথাইমা, ব্রুসেলোসিস ইত্যাদি টিকা দেওয়া হয় নি, তাদেরকে গর্ভের পঞ্চম মাসে উক্ত ভ্যাকসিনগুলি দিতে হবে। বাচ্চার বয়স যখন ৫ মাস, তখন তাকে পিপিআর ভ্যাকসিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দিতে হবে।
Image source - Google
Related link - (Goat farming) এই জাতের ছাগল পালন করে হয়ে যান লাখপতি