বিজ্ঞানের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে হাঁসমুরগি পালন পদ্ধতিরও যথেষ্ট উন্নয়ন ঘটেছে। উন্নয়ন ঘটেছে খামার ব্যবস্থাপনারও। যদিও এদেশে গ্রামাঞ্চলে অথবা যারা অল্প সংখ্যায় হাঁসমুরগি পুষে থাকেন তারা সনাতন পদ্ধতিতেই এগুলোকে লালনপালন করেন। হাঁস পালনের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে দুটি মারাত্মক রোগের। হাঁসের দু'টি মারাত্মক রোগ হলো ডাক প্লেগ ও ডাক কলেরা রোগ।
ডাক প্লেগ
হাঁসের ডাক প্লেগ জীবানু এক প্রকার ভাইরাস। এ রোগ অত্যন্ত ছোঁয়াচে। তাই খামারে এ রোগের প্রদুর্ভাব ঘটলে দ্রুত সকল হাঁসে ডাক প্লেগ রোগ ছগিয়ে পড়ে। তাই হাঁস চাষ করতে হলে সকল হাঁসকে অবশ্যই নিয়মিতভাবে এ রোগের টিকা দিতে হবে।
ডাক প্লেগ রোগে আক্রান্ত হাঁসের লক্ষন
- আক্রান্ত হাঁস দাঁড়াতে পারে না
- খুঁড়িয়ে হাঁটে এবং সাঁতার কাটতে চায়না।
- বয়স্ক হাঁস বেশী মারা যায়।
- রোগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাঁসের পিপাসা বেড়ে যায়।
- হাঁস পাখা মাটিতে ঝুলিয়ে বসে থাকে।
- হলুদ রং এর পাতলা পায়খানা হয়।
- কখনও কখনও পায়খানার সাথে রং দেখা দেয়।
- নাক দিয়ে জল পরা।
ফাউল কলেরা বা হাঁসের কলেরা
হাঁসের কলেরা জীবানু এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া। এই জীবানু হাঁসের দেহে প্রবেশ করে রক্তের সাথে মিশে এক প্রকার বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে এবং রক্ত চলাচলের সাথে মিশে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত হাঁসের মল দ্বারা এ রোগ খাদ্য ও জলকে দূষিত করে এবং খামারে ছড়িয়ে পড়ে। বাজার থেকে রোগাক্রান্ত হাঁস কিনে আনলেও এ রোগ খামারে ছড়াতে পারে। সকল বয়সের হাঁস এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ হাঁস পালনের আগে জেনে নিন এই দুটি লাভজনক পদ্ধতি
কলেরা রোগে আক্রান্ত হাঁসের লক্ষণ
- এ রোগে আক্রান্ত হাঁস খেতে চায়না।
- পালকগুলো খসখসে হয়ে যায়, চেহারায় অবসন্নতা আসে ও রক্তশূন্য মনে হয়ে।
- হাঁসের পিপাসা বেড়ে যায়।
- পায়খানার রং সবুজ এবং সাদা ও ফেনাযুক্ত মনে হয়।
- চলাফেরা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
- এক জায়গায় দাড়িয়ে ঝিমাতে থাকে এবং অল্প সময়ের মধ্যে মারা যায়।
আরও পড়ুনঃ রাজহাঁস পালনে বাড়বে আয়, ফলো করুন এই পদ্ধতি
হাঁসের উপরোক্ত দুটি রোগ ছাড়াও হাঁসের খাদ্যে বিষক্রিয়াজনিত কারণ যেমন, আফলাটক্সিন ও বটুলিজম এর বিষক্রিয়ায় হাঁসের মৃত্যু ঘটতে দেখা যায়। তাই এ বিষয়েও আলোচনা করা যেতে পারে। আফলাটক্সিন থেকে রক্ষা করার জন্য খাদ্য তৈরী করার সময় বিশেষ করে ভুট্টাদানা খুব ভালভাবে দেখে নিতে হবে যেন ভুট্টাদানার মুখে কাল দাগ অর্থাৎ ছত্রাক না থাকে। খাদ্য উপাদানে এ ধরণের ভুট্টাদানা বাদ দিয়ে খাদ্য তৈরী করলে অন্ততঃ আফলাটক্সিন সমস্যা দূর করা যেতে পারে।