মুরগি বা হাঁসের মাংসের সঙ্গে আমরা পরিচিত হলেও, টার্কির মাংসের সঙ্গে আমরা ততটাও পরিচিত নই। মেলিয়াগ্রিডিডিই পরিবারের এই পাখি, বেশ বড়সড় আকারের হয়। গৃহপালিত পাখি হিসাবে টার্কি গোটা পৃথিবী জুড়ে চাষ হয়। টার্কি পোলট্রির ১১ টি প্রজাতির মধ্যে অন্যতম। নরম ঘাস মূলত টার্কির মূল খাদ্য। এই পাখির রোগবালাই কম হয় বলে, এই পাখির চাষে বিনিয়োগও কম। মাংস উৎপাদনের দিক থেকে এই পাখির মাংস অত্যন্ত উত্তম। টার্কির মাংসে অত্যন্ত কম চর্বি থাকায়, এই পাখির মাংস মুরগি, হাঁসের বিকল্প হিসাবে বহুখানে খাওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে বহু জায়গায় আজকাল টার্কির চাষ হচ্ছে। ভারতে টার্কির মাংস দিনে দিনে জনপ্রিয় হচ্ছে।
উত্তর আমেরিকায় প্রথম টার্কির চাষ শুরু হয়,ধীরে ধীরে গোটা বিশ্বে এই বিশেষ প্রজাতির পাখির চাষ ছড়িয়ে পড়ে। টার্কির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকায় ও এই মাংসে চর্বি কম থাকায়, টার্কি সবার কাছে অত্যন্ত প্রিয়।
ব্রড ব্রেস্টেড ব্রোঞ্জ, ব্রড ব্রেস্টেড হোয়াইট, বেল্টসভিল স্মল হোয়াইট--টার্কি পাখির জাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য এই তিনটি জাতের চাষই বেশি পরিমাণে গোটা পৃথিবী জুড়ে করা হয়।
টার্কি মাংসের লাভকর দিক: (Turkey Rearing Benefits)
১) এর মাংস উৎপাদক ক্ষমতা অত্যন্ত বেশি।
২) মুরগির মতোই নির্ঝঞ্ঝাট ভাবে টার্কির চাষ করা হয়।
৩) টার্কি পালনের খরচের কম কারণ এই পাখি সাধারণ ঘাসপালা খেয়েই বেড়ে উঠতে পারে।
৪) টার্কি মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি এবং চর্বি কম থাকায় এই পাখির মাংসের চাহিদা দিনকে দিন বাড়ছে।
৫) এই পাখির মাংসে জিংক, লৌহ, পটাশিয়াম, বি৬ও ফসফরাসের মতন বিভিন্ন উপাদান থাকে। এ উপাদান গুলো মানব শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী।
৬) নিয়মিত এই মাংস খেলে কোলেস্টেরল কমে যায়।
৭) টার্কির মাংসে এমাইনো এসিড ওট্রিপটোফেন প্রচুর পরিমানে রয়েছে, তাই এই মাংস খেলে শরীর রোগ ব্যাধি তেমন বাসা বাঁধতে পারে না। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এই পাখির মাংস বাড়াতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: Avocado Farming Procedure: অ্যাভোকাডো চাষ করে হয়ে উঠুন সম্পদশালী কৃষক
রোগবালাই:(Disease Management)
টার্কির তেমন রোগবালাই না হওয়ায়, এই পাখি পালনে খরচ কম অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে শীত পড়লে টার্কির ঠাণ্ডাজনিত রোগ দেখা যায়, এই রোগের থেকে টার্কিকে বাঁচাতে রেনামাইসিন জাতীয় ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।
টার্কির বাসস্থান তৈরী: (Shelter making)
টার্কি পালতে গেলে দুটি ঘরের মধ্যে কম করে ২০ মিটার দূরত্ব থাকতে হবে। সাথে সাথে বাচ্চা পাখিদের ঘর বড় পাখিদের ঘর থেকে কম করে ৫০-১০০ মিটার দূরে থাকতে হবে। খোলা ঘরের প্রস্থ ৯ মিটারের মধ্যে রাখা অবশ্যক। মেঝে থেকে ছাদের উচ্চতা ২.৬-৩.৩ মিটারের মধ্যে যাতে হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। টার্কির ঘর কংক্রিটের তৈরী করা উচিত। এতে পাখি আর্দ্রতার থেকে বাঁচবে।
আরও পড়ুন: Almond Farming: বাড়িতে আমন্ড চাষের সুফল