এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 8 June, 2023 5:12 PM IST

কৃষিজাগরন ডেস্কঃ বিশ্ব-উষ্মায়ন হল ভূপৃষ্ঠ এবং বায়ুমণ্ডলের দীর্ঘকালীন উষ্মতাবৃদ্ধি।  বিগত ১০০ বছরে বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৭৫ডিগ্রী সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির বেশিরভাগ অংশই ঘটেছে ১৯৭৫ সালের মধ্যে । তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য প্রধানত মানুষের কার্যকলাপের জন্য উৎপন্ন গ্রীনহউস-গ্যাসই দায়ী। দীর্ঘকালীন গবেষণার ফলে জানা গেছে , মানুষের কিছু  ক্রিয়াকলাপ যেমন, বৃক্ষ-ছেদন,শিল্পায়ণ এবং জীবাস্ম-জ্বালানীর দহনের ফলে এই গ্রীনহউস-গ্যাসের উৎপাদন বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ঘটনাটি পৃথিবীর বিভিন্ন্ স্থানকে বিভিন্ন্-ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে।

সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী 

এই শ্রেণীর প্রাণীদের ওপর উষ্মায়ন এর প্রভাব বর্তমানে খুবই বর্ধিত হয়েছে। এই প্রভাবগুলির ভিতর যেগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সরাসরি প্রভাবশালী সেগুলি হল , বাসস্থান হইতে উতখাতন ,তাপমাত্রা প্রদত্ত চাপ, খারাপ আবহাওয়ার সম্মুখিন হওয়া ইত্যাদি। এছাড়া আরও প্রভূত প্রভাব চোখে পড়ে , সেগুলো এত গুরুত্বপূর্ণ না।

আরও পড়ুনঃ মানুষের তৈরি বিশ্ব-উষ্মায়নের ফল ভোগ করতে হচ্ছে জলজ প্রাণীদের

সামুদ্রিক জলে ভাসমান প্ল্যাঙ্কটনগুলি হল সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের প্রধান খাদ্য।তাপমাত্রার পরিবর্তনের ফলে এই প্ল্যাঙ্কটনগুলির উৎপাদনের হার ও স্থানের প্রভূত পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে খাদ্যের অভাবও টাডেড় পরিযায়ী হওয়ার জন্য অনেকাংশে দায়ী।

অতিরিক্ত বর্ধিত তাপমাত্রা সামুদ্রিক আলোড়নের সঞ্চার করে, অনেক সময়ে যা সামুদ্রিক প্ল্যাঙ্কটনের উৎপাদনকে ক্ষতিগ্রস্থ করে।

মেড়ূ

ভোল্লুকের এই প্রভাবগুলির ফলে বৃহত্তম ক্ষতির মুখে আছে। এক্ষেত্রে আবোহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের বরফ গলিত হয়, এবং তার প্রভাবে তারা তাদের খাদ্য ও বাসভূমি দুটোই হারায়ে।

প্লাঙ্কটন

উষ্মায়ন এর প্রভাবে , বৃষ্টিপাতের ধরণ পরিবর্তিত হতে থাকে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে, প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি-দ্রব্য সমুদ্রে প্রবেশ করে, ফলে ঋতু  ভিত্তিক প্লাঙ্কটন প্রাচুর্য তৈরি হয় ।

আরও পড়ুনঃ জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃষি

কবচই শ্রেণীর প্রাণী

উষ্মায়ন এর প্রভাবে সমুদ্রের জলে কার্বন ডাই অক্সিডের পরিমাণ বৃদ্ধি প্রাপ্ত  হয় ।তার ফলে পি এইচ কমে , সমুদ্রের জলে প্রচুর পরিমানে আম্লীকরণ ঘটে। এই ঘটনাটি সমুদ্র-জলে থাকা  খোলক যুক্ত প্রাণীদের প্রচণ্ড পরিমানে ক্ষতিগ্রস্থ করে।  কবচই প্রাণীদের বহিরাবরণে আরাগোনাইট নামক পদার্থ থাকে , যা সমুদ্রের আম্লিক জলে দ্রবীভূত হয়ে পরে। ফলে এই কবচই শ্রেণীর প্রাণীদের অবলুপ্তি ঘটে ।যা সমুদ্রের সমগ্র বাস্তুতন্ত্রকে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। আরও একটি ঘটনা লক্ষ্য করা হয় , কবচি শ্রেণির প্রানীদের মধ্যে যারা ফাইটোপ্লাঙ্কটনদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে যেমন ক্রিল,তারা ৮০% এর কাছাকাছি অবলুপ্ত হয়েছে বিগত ৩০ বছরে। উষ্মায়ন এর প্রভাবে বরফ চাদর গলিত হয়, ফলে সামুদ্রিক শৈবাল ও ক্রিল অবলুপ্ত হয় । তাদের অবলুপ্তির ফলে বহু সামুদ্রিক প্রাণীদের মৃত্যু ঘটে, যারা তাদের পুষ্টির উৎস হিসেবে ব্যবহার করে।

প্রবালপ্রাচীর

প্রবালপ্রাচীর সামুদ্রিক পরিবেশে খুবই জরুরি, কারণ এখানে কার্বনচক্র সংঘটিত হয় । এটি এমন একটি স্থান যেখানে জলজ প্রাণিদের সমাগম ঘটে, বংশ-বিস্তারের জন্য অথবা খাবার সংগ্রহ করার জন্য।ফলে এদের অবলুপ্তির ফলে একটি সম্পূর্ণ খাদ্দ্য-চক্রএর বিনাশ ঘটে।   প্রবাল দীর্ঘদিন ধরে বৃদ্ধি পেতে থাকে,কারণ বাইরের প্রভাবের কারণে এগুলো বিনষ্ট হয় না।কিন্তু তাপমাত্রার পরিবর্তন  প্রবালপ্রাচীরকে বিনষ্ট করতে পারে।মৃত প্রবাল আবার বৃদ্ধি প্রাপ্ত হতে পারে না।প্রবালপ্রাচীর এর অবলুপ্তি শুধু মাত্র সমুদ্রে জীব- বৈচিত্র্যএর ক্ষতি করে তাই না ,তার সাথে বায়ুমণ্ডলের কারবন-ডাই-অক্সাইড শোষণ কম করে।ফলে পরোক্ষভাবে উষ্মায়নে সাহায্য করে।

মাছ

জলের তাপমাত্রা মাছের বংশ-বিস্তারে সাহায্য করে এবং সঠিক জলজ পরিবেশ স্থাপণে সাহায্য করে।বড় মাছের থেকেও লার্ভা ও জুভেনাইল স্তরের মাছ কে বেশি পরিমানে প্রভাবিত করে।

কচ্ছপ

জলের তাপমাত্রা কচ্ছপ এর লিঙ্গ নিরধারণে সাহায্য করে।বেশি তাপমাত্রা পুংলিঙ্গ এবং কম তাপমাত্রা স্ত্রীলিঙ্গ এর জন্মে সাহায্য করে। তাই এটি সহজেই বলা যেতে পারে , কচ্ছপ জলজ প্রাণীদের ভিতর উষ্মায়নের প্রভাবে প্রচুর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।এছাড়া এদের পরিপাক –ক্রিয়া ,বৃদ্ধির হার ও প্রজননের হারের ওপর উষ্মায়নের কুপ্রভাব বিস্তার করতে দেখা যাছে।

উপরের আলোচনা থেকে এটা পরিষ্কার যে জলবায়ুর পরিবর্তন তথা বিশ্ব উষ্ণায়ন জলজ প্রাণীদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।এই প্রভাব শুধুমাত্র তাদের উপরে সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং সমগ্র পরিবেশ‌ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মানুষের দৈনন্দিন খাবারের একটা বড় অংশ যেহেতু জলজ প্রাণীদের থেকে আসে তাই সমগ্র মানবজাতিও এর প্রভাব থেকে নিস্তার পাবে না ।আমরা যদি এখন থেকে পরিবেশ দূষণ কমানোর জন্য সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করি তাহলে অদূর ভবিষ্যতে সমগ্র মানবজাতিকে বিলুপ্তির পথ দেখতে হতে পারে ।

English Summary: Effects of global warming on aquatic life
Published on: 08 June 2023, 04:56 IST