এবার AI এর সাহায্যে ছাগলের গর্ভধারণ করা হবে, জেনে নিন কীভাবে কাজ করবে এই প্রযুক্তি শীতকালে মাছ চাষ: জল ব্যবস্থাপনা এবং মাছের সঠিক যত্ন নেওয়া শিখুন! বাগমাল গুর্জরের সাফল্যের গল্প
Updated on: 5 July, 2021 7:17 PM IST
Cattle rearing

উন্নতজাতের গাভী বর্তমানে গোটা বিশ্বের পাশাপাশি, আমাদের দেশেও পালিত হচ্ছে। জার্সি,হোলস্টেন প্রজাতির গরুর পাশাপাশি গির, রেড-সিন্ধি গো-প্রজাতির পালন করেও গো পালকরা লাভের মুখ দেখছেন। অস্বীকারের কোনও উপায়ই নেই, কম থেকে বেশি যে কোনও রকমের পুঁজি দিয়ে বুদ্ধি বিবেচনা করে গাভী পালন করলে লাভবান হতে সময়ই লাগবে না।

খোলামেলা জায়গায় গো-পালন করা উচিত। বাঁশ, ছন, খড়, পাটখড়ি দিয়ে গরুর ঘর বানাতে হবে। গরুদের খাবার ও জলের পাত্রগুলো নিয়ম করে প্রত্যেকদিন পরিষ্কার করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে গোয়াল ঘরের গোবর-চোনা জমা না হয়ে থাকে। গরুর গায়ে অবাঞ্ছিত পোকামাকড় বেছে দিতে হবে। গরুর স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রেখে সময়ানুসারে গোবসন্ত, ক্ষুরা প্রভৃতি রোগের প্রতিষেধক টিকা নেওয়াতে হবে। স্বাভাবিক ভাবেই গরুরও জ্বরজারি শরীর খারাপ হয়। সেইসময় যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি গরুকে প্রাণিচিকিৎসকেও দেখাতে হবে।

দৈনিক সুষম খাদ্য-তালিকা (Daily balanced diet)

চালের গুঁড়া ২৫০; গমের ভুসি ২৫০; খৈল ২৫০; ডালের ভুসি ২৫০; চিটাগুড় ২০০; লবণ/খনিজ; মিশ্রণ ভিটামিনসহ ৫০ গ্রাম।

এইগুলো ছাড়াও প্রত্যেকদিন কমকরে অন্তত ৩ কেজি খড় ও প্রচুর পরিমাণে ঠাণ্ডা জল খাওয়াতে হবে।

 

বাছুরের পরিচর্যার প্রণালী: (How to take care of calves)

চালের গুঁড়া ৩০০ গ্রাম; গমের ভুসি ৩০০ গ্রাম; খৈল ২৫০ গ্রাম; চিটাগুড় ১৫০ গ্রাম; লবণ ও ভিটামিন ৫০ গ্রাম।

এগুলো খাওয়ানো ছাড়াও খড়, কাঁচাঘাস ও ঠান্ডা জল খাওয়াতে হবে। বাছুরের ছয় মাস বয়স হলে তাকে সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক টিকা দেওয়া উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাছুরকে কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হবে।

গরু বাছাই প্রক্রিয়া : গরুর ফার্ম সমসময় মফস্বলে গড়ে তোলা উচিত। গরুর উন্নত জাত বাছাই প্রথমেই সেরে নিতে হবে। উন্নত জাতের গরু বেছে না নিলে ফার্মে গরুদের রোগ সারা বছর লেগেই থাকবে।

স্থান নির্বাচন: যেখানে বাজার ভালো এবং যাতায়াতের দিক থেকেও যেই অঞ্চল সুবিধাকর সেইসব এলাকাতেই ডেয়ারি ফার্ম গড়ে তোলা উচিত। গরু যেখানে থাকবে সেখানে যেন পর্যাপ্ত আলো-বাতাস থাকে তার খেয়াল রাখতে হবে

পরিচর্যা : উন্নত জাতের গাভী পালন করলে অনেকদিক থেকেই লাভ। এর ফলে যেমন ফার্মে রোগ বালাই থাকবে না, তেমনই অনেক দুধেরও যোগান পাওয়া যাবে। নিউজিল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ান গরুর জাত ডেয়ারি ফার্ম গড়ে তোলার জন্য জন্য সেরা বলে বিবেচিত হয়। গরু যেখানে থাকবে সেখানে যাতে যথেষ্ট আলো থাকে সেই খেয়াল রাখতে হবে. দরকার পড়লে আলাদা করে আলো লাগাতে হবে। গরুর ঘরের পরিচ্ছন্নতার  রাখতে হবে।

আরও পড়ুন: Cow-food preserving method: জেনে নিন বর্ষায় গো-খাদ্য সংরক্ষণের পদ্ধতি

গরুর দুধের উৎপাদন কেমন করে বাড়াতে হবে: (How to increase cow's milk production)

গরুর দুধ উৎপাদন  তাদের জাতের উপর নির্ভরশীল। দেশী জাতের গরুর দুধে মাখনের পরিমাণ বেশি থাকে। কিন্তু এরা দুধ দেয় কম। গরুকে বেশি করে সুষম খাবার খাওয়ালে দুধের উৎপাদন বেশি হবে। গাভীকে সুষম খাদ্য না খাওয়ালে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায় এবং দুধের গুণগতমানও কমতে বাধ্য। গরুকে অতিরিক্ত দানাদার খাবার খাওয়ালে অথবা অতিরিক্ত রসালো খাবার খাওয়ালে দুধে মাখনের হার কমে যায়। গরুর থেকে বেশি দুধ পেতে হলে,  গর্ভাবস্থায় তার সঠিক ভাবে পরিচর্যা ও সুষম খাদ্য দেওয়া দরকার। সন্তান প্রসবের দুই মাস আগে গাভীর দুধ দোওয়া বন্ধ করে দেওয়া উচিত। ঠিকঠাক দেখাশোনা, বাসস্থান, গরুর দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ও গুণগতমানের বাড়া কমার জন্য ভীষণই দায়ী। ভুলভাবে দুধ দোয়ানো হলে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ও গুণগতমান কমে আসতে পারে।

কোনও গরু যদি অনেকদিন পর বাচ্চা প্রসব করে তবে তার দুধ উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই  কখনোই গরুকে দুই মাসের আগে প্রজনন করানো ঠিক নয়। গাভীর শরীরে ৫০% এবং দুধে প্রায় ৮৭% জল থাকে। তাই গরুকে ইচ্ছামতো জল খেতে দিলে দুধ উৎপাদনের পরিমান বাড়ে, এবং  দুধে মাখনের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়।

 

 

গরুর ওলানের পরিচর্যা:

অনেক দুধ যেইসব গরু দেয় তাদের দৈহিক আকার বড় হওয়ার পাশাপাশি তাদের ওলানও বড় হয়। এসব গরুগুলির সঠিক ভাবে পরিচর্যা নিতে হবে। উঠতে বা বসতে গেলে গোয়ালের মেঝেতে ঘষা লেগে ওলানে ক্ষত তৈরী হয়। ক্ষতস্থানে গোবর বা চোনা লাগলে রোগ-জীবাণুর আক্রমণে গরু অসুস্থ হয়ে পড়বে। দুৰ্ভাগ্যবশত গরুর ম্যাসটাইটিস রোগ হলে ওলানের এক অথবা একের বেশি বাট কেটে ফেলতে হয়। এর ফলে দুধের যোগান অনকাংশে কমে যায়। এরকম অসুবিধার থেকে গরুকে রক্ষা করতে গেলে কংক্রিটের পরিবর্তে বালির মেঝে গোয়াল ঘরে তৈরী করা উচিত।

বালির মেঝে ঝুরঝুরে হওয়ায় গরু দাঁড়াতে বা বসতে গেলে কোনও ব্যথা পাবে না। বালি যেন ভেজা না থাকে সেদিকে সবসময় নজর রাখা উচিত। মেঝে শুকনো রাখতে সারা দিনে দুই থেকে তিন বার গোবর পরিষ্কার করে নেওয়া  দরকার। বালি মাঝেমাঝে উলটপালট করে, উপরের বালি নিচে এবং নিচের বালি উপরে করলে রোগ-জীবাণু বাসা বাঁধতে পারবে না। কম করে ছয় মাস পর পর বালি বদল করা উচিত।

 

English Summary: Expensive Cattle rearing in West Bengal
Published on: 05 July 2021, 06:43 IST