একের পর এক চিংড়ির ঘেরগুলোতে মড়ক দেখা দিচ্ছে, আর তাতেই চিন্তা বাড়ছে মাছ চাষিদের । বাংলাদেশের বাগেরহাট এলাকায় অনেক চিংড়ি মাছ চাষি রয়েছেন। তাদের অভিযোগ চিংড়ির ঘেরগুলিতে হঠাৎ করেই মাছ মারা যাচ্ছে। মৎস বিশেষজ্ঞদের মতে 'হোয়াইট স্পট সিনড্রম' নামের ভাইরাসের কারণে মাছের এই মড়ক দেখা দিচ্ছে।
এদিকে, চলতি মরসুমের শুরুতেই চিংড়ি মারা যাওয়ায় কোটি কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ঘের মালিক ও চাষিরা। এই অবস্থায় বেশির ভাগ চিংড়িচাষি কিভাবে ক্ষতি পুষিয়ে নিবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, রামপালে এই মরসুমে নিবন্ধনকৃত ৬ হাজার ৬৪৪টি ঘেরে চিংড়ি চাষ হয়েছে। এখন বাগদা চিংড়ির ভরা মরসুম। ঘের থেকে চিংড়ি ধরা শুরু করেছেন চাষিরা। আবার অনেক ঘের মালিক চিংড়ি ধরার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এরই মধ্যে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ওই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চিংড়ি ঘেরে হঠাত্ করে মড়ক শুরু হয়েছে।
চাষিরা বলছেন, যারা সরকারি-বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে চিংড়ি চাষ করেছেন তারা সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। এখন তাদের ঋণ পরিশাধের কোন পথ খোলা নেই। এবার রামপাল উপজেলায় চিংড়ি চাষিদের অর্ধশত কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে জানান তারা।
আরও পড়ুনঃ বর্ষাকালে মাছ চাষ করবেন? শিখে নিন পদ্ধতি
সরজমিনে গেলে দেখা যায় 'ব্যাপক হারে চিংড়ি মারা যাচ্ছে। এই কারণে চাষিরা যত দ্রুত সম্ভব ঘের থেকে দ্রুত মাছ তুলে ফেলছে। যার ফলে চাষিদের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে।
গৌরম্ভা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজীব সরদার, হুড়কা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তপন গোলদার জানান, ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ ঘেরের চিংড়ি মরে শেষ। যারা লোন নিয়ে চিংড়ি চাষ করেছে তারা একেবারই নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
রামপাল সদর, রাজনগর, বাইনতলা ও পেড়িখালি ইউনিয়নের সব চিংড়ি ঘেরের অবস্থাও একই রকম। গত বছর রামপাল উপজেলায় ৬ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন চিংড়ি উত্পাদন হলেও এই মরসুমে উত্পাদন মারাত্মক ভাবে হ্রাস পাবে বলে চাষিরা মনে করেন।
মৎস বিজ্ঞানিদের মতে, হোয়াইট স্পট সিনড্রম ভাইরাস নামক এক ধরণের রোগে আক্রান্ত হয়ে চিংড়ি মারা যাচ্ছে। গত বছরও এ রোগে কোটি কোটি টাকার চিংড়ি মারা গেছে ।
আরও পড়ুনঃ মৎসচাষের সাফল্য়ে দেশি রঙিন মাছ
তিনি বলেন, ঘের প্রস্ততির আগে ব্লিচিং পাউডারসহ ভাইরাস মুক্তকরণের যে সব পদ্ধতি আছে তা প্রয়োগ না করে গতানুগতিক ভাবে ঘের প্রস্তুত করে চিংড়ি ছাড়ার কারণে পূর্বের ভাইরাস আবার দেখা দিয়েছে। ফলে চিংড়ি মরে যাচ্ছে। তাছাড়া চিংড়ি পোনা ছাড়ার আগে পোনা ভাইরাস মুক্ত কিনা তা পিসিআরে পরীক্ষা না করে ঘেরে ছাড়ার কারণেও এমনটা হতে পারে।