কৃষিজাগরন ডেস্কঃ গত এক বছর পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর এবছর অন্তিম পর্যায়ে পৌঁছেছে মৎস্য জগতের অন্যন্য আবিস্কার “মাছের-টিকা” বা ভ্যাকসিন। যার নাম “সিফা-ব্রুড-ভ্যাক”। ১৫ই মে নন্দীগ্রাম-এক ব্লক মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে এক বিশেষ সভায় আয়োজন করা হয়। যেখানে ভার্চুয়াল ভাবে যুক্ত ছিলেন ‘সিফা–ব্রুড–ভ্যাক’ টিকার আবিষ্কর্তা মৎস্য-বিজ্ঞানী ডক্টর মৃনাল সামন্ত ।
প্রজননক্ষম মাছের টিকাকরন নন্দীগ্রাম-এক নম্বর ব্লকের দুটি মাছের হ্যাচারীতে প্রয়োগ করা হবে এবং উৎপাদিত হবে নিরোগ স্বাস্থ্যকর মাছ। গত বছর আগস্ট মাসে এগরা-১ ব্লকে প্রথম পরীক্ষামূলক টীকাকরণ করা হয়। এই বছর নন্দীগ্রাম-এক, এগরা এক সহ বেশ কিছু জেলার ব্লকে নির্বাচিত মাছের হ্যাচারীতে অন্তিম পরীক্ষার পর আনুষ্ঠানিক ভাবে আসবে মাছের ভ্যাক্সিন বা টিকা।
আরও পড়ুনঃ শরীরে নেই কাঁটা, দাঁত বেরিয়ে! সমুদ্রতটে দেখা মিলল ডাইনোসর যুগের বিরল মাছের
নন্দীগ্রাম-এক ব্লকের মৎস্যচাষ সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহু বলেন, বিশেষত নিরোগ স্বাস্থ্যকর অধিক মাছের উৎপাদনের জন্য প্রজননক্ষম স্ত্রী ও পুরুষ মাছের টিকাকরণ। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক মৎস্য বিভাগের কার্যালয়ে থেকে মাছের হ্যাচারী শংকর দাস ও হরিপদ দাস মাছের টিকার ভায়াল তুলে দেন পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মৌসুমি পানি।
জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও কম বৃষ্টিপাতের ফলে হ্যাচারিতে মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রজননের অনুকূল পরিবেশ না পাওয়া ও তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে হ্যাচারিতে মাছ কৃত্রিম প্রজননে সাড়া দিচ্ছে না। পেটে ডিম আসলেও ডিম ছাড়ছে না। মাছ সহজে রোগাক্রান্ত হচ্ছে এবং মৃত্যুহার বেড়ে যাচ্ছে। ফলে উৎপাদন কম হচ্ছে ও চাষিদের আয় কমে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ মহিলাদের কর্মসংস্থানে এগিয়ে এল নন্দীগ্রাম-১ ব্লক মৎস্য বিভাগ, শুরু তিন দিনের অভিনব কর্মশালা
মাছ চাষিরা যেমন সমস্যায় পড়েছেন তেমনি চিন্তিত দেশের বিজ্ঞানী মহল। আর এই সমস্যার সমাধানে মৎস্য বিজ্ঞানী মৃনাল সামন্ত তৈরি করেছেন অভিনব “মাছের-টীকা” বা ভ্যাকসিন। নাম দেওয়া হয়েছে “সিফা-ব্রুড-ভ্যাক”। ভার্চুয়াল মিটিং-এ ‘সিফা–ব্রুড–ভ্যাক’ টিকার আবিষ্কর্তা মৎস্য-বিজ্ঞানী ডক্টর মৃনাল সামন্ত বলেন, “এই টিকা প্রজননক্ষম স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে প্রয়োগ করলে মাছের ডিমের থেকে যে ডিমপোনা ও ধানীপোনা হয় তার বাঁচার হার বেশি। ব্রড স্পেকট্রামে রোগ হয় না। ফলে স্বাস্থ্যকর মাছের ফলন বেশি হবে”।
মাছের টিকা আবিষ্কার ঘিরে এলাকায় মাছ চাষিদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা দিয়েছে। মাছের হ্যাচারীর মালিক শংকর দাস বলেন, “মাছের টিকার ভ্যায়াল বিনামূল্যে পেয়ে আমি খুব খুশি” ।