ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় কলার ফসল রক্ষা করুন এই সহজ পদ্ধতিতে, উৎপাদন বাড়বে কম খরচে এবার AI এর সাহায্যে ছাগলের গর্ভধারণ করা হবে, জেনে নিন কীভাবে কাজ করবে এই প্রযুক্তি শীতকালে মাছ চাষ: জল ব্যবস্থাপনা এবং মাছের সঠিক যত্ন নেওয়া শিখুন!
Updated on: 14 July, 2021 10:53 AM IST
Crabs

খেতে উপাদেয় কিন্তু দেখলেই লাগে ভয়! যদি মাথার দুই পাশের দাঁড়া দুটো আঙুল কামড়ে ধরে, তাহলে আর রক্ষা নেই। কাঁকড়া। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় ক্র্যাব। রান্না করা কাঁকড়ার স্বাদ বেশ মুখরোচক বলে, দিনকে দিন বাঙালি হেঁশেলে কাঁকড়ার চাহিদা বাড়ছে। অনেক তরুণই কাঁকড়া চাষ করে নিজের ভাগ্যও ফেরাচ্ছেন। এই জলজ প্রাণী চাষে খুব কম সময়েই কয়েক লাখ টাকা উপার্জন করে ফেলা, এরকম নজিরও কম নয়। অত্যন্ত কম পরিশ্রম করেই কাঁকড়ার চাষ করা যায়। উৎপাদন খরচও কম হওয়াতে এই চাষে বহু মানুষ বর্তমানে নিয়োজিত হচ্ছেন। সঠিক পদ্ধতিতে এই চাষ করলে চিংড়ি চাষের থেকে কাঁকড়া চাষ বেশি লাভজনক হতে পারে। বর্তমানে আমাদের দেশে কাঁকড়া রফতানি করে প্রত্যেক বছর কম করে ২৫ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে।

দুই প্রকারের প্রজাতির কাঁকড়া মূলত বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য চাষ করা হয়। গ্রিন মাড কাঁকড়া ও রেড ক্ল। প্রথম প্রজাতির কাঁকড়া বেশ ওজনদার হয়। এদের কোনও কোনওটার ওজন ২ কেজি পর্যন্তও হয়। রেড ক্ল কাঁকড়া গ্রিন মাড কাঁকড়ার থেকে আকারের অনেকটা ছোট হয়।  এদের একটার সর্বাধিক ওজন ১.২ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

কাঁকড়া চাষ (Crab Farming)

সুন্দরবন অঞ্চল কাঁকড়ার জন্য বিখ্যাত। কিন্তু দুঃখের বিষয় জীবিকা অর্জনের জন্য কাঁকড়া সংগ্রাহকরা গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করে খাঁড়িতে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে অনেকসময়ই বাঘের মুখে পড়েন। খুব কম সংখ্যক মানুষই আছেন, যারা বাঘের খাদ্য হওয়ার থেকে বেঁচে ফিরেছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাঘের সম্মুখে পড়লে প্রাণ হাতে আর বেঁচে ফেরা হয়ে ওঠে না। তাই বিকল্প পথ হিসাবে অনেকেই পুকুরে বা বাক্সে বেছে নিয়েছেন কাঁকড়া চাষ। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে পুকুরের থেকে বাক্সে কাঁকড়া চাষই বেশি লাভকর।

অনেক মৎস্যজীবীই ইদানিং পুকুরে বা বাক্সে কাঁকড়া চাষ করে থাকেন, এর ফলে জঙ্গলে গিয়ে বাধার মুখেও তাঁদের পড়তে হয় না, সাথে সাথে কম পরিশ্রমে উৎপাদনও ভালো হয়। সমুদ্র উপকূল অঞ্চলে বাক্সে কাঁকড়া চাষ বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়। অন্ধ্রপ্রদেশ আর তামিলনাড়ুতেও পরীক্ষামূলক ভাবে আরও নতুন উপায়ে বাক্সে কাঁকড়া চাষ করা হচ্ছে।

কাঁকড়ার চাষের নিয়মনীতি (Process of crab Farming)

গ্রো আউট সিস্টেম এবং ফ্যাটেনিং সিস্টেম মূলত এই দুই ভাবে কাঁকড়া চাষ করা হয়। প্রথম উপায়ে, যতক্ষণ না তারা বাজারে বিক্রির জন্য উপযুক্ত হয় ততক্ষণ ৫ থেকে ৬ মাস ধরে কাঁকড়া চাষ করা হয়। তবে সময় বাঁচাতে ফ্যাটেনিং নিয়ম অনুসারে কাঁকড়া চাষ করা ভালো। আর এই পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষে লাভও বেশি পরিমাণে হয়। কাঁকড়া চাষের সময় খেয়াল রাখতে হবে, যাতে জল পরিষ্কার থাকে, কারণ এই চাষে জল অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও মূল উপাদান। সময় মেনে জল বদলাতে হবে, রোগ-অসুখ থেকে বাঁচাতে ওষুধও প্রয়োগ করা যায়।

আরও পড়ুন: Soil Nutrition মাটির পুষ্টিগুণ বজায় রাখার উপায়

কাঁকড়ার খাবার ( Crab Food)

কাঁকড়া চাষ কম খরচ মেনে করতে হলে, কাঁকড়াকে মাছ পচা, মুরগির বর্জ্য খাওয়ানো যেতে পারে। সব খাবার একসঙ্গে না দিয়ে, দিনে দু'বার নিয়ম মেনে খাবার দিলে ভালো হয়। দিনের থেকে সন্ধ্যাতে যেন খাবারের পরিমাণ বেশি থাকে সে দিকে নজর রাখতে হবে। কাঁকড়ার আকার সঠিক ধারণ করলে তা বাজারজাত করা হয়। কাক ভোরে নয়তো সন্ধ্যে বেলায় কাঁকড়াকে জল থেকে তোলা অনেক বেশি শ্রেয়। সূর্যের কড়া রোদ সরাসরি এদের গায়ে পড়লে অনেক সময় কাঁকড়াকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে।

অভিজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী কাঁকড়া চাষ করলে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যায়। একই পুকুরে কাঁকড়া চাষ বছরে কম করে পাঁচ বার করা যায়। নিয়ম মেনে,বুদ্ধিমত্ততার সঙ্গে কাঁকড়া চাষ করলে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করা কোনও ব্যাপারই নয়। তরুণ চাষিদের কাছে কাঁকড়া চাষ বর্তমানে অত্যন্ত আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে। ভারত থেকে গোটা বিশ্বে কাঁকড়া কম রফতানি হয় না। শুধুমাত্র চিনেই ৯২ শতাংশ কাঁকড়া রফতানি হয়। জীবন্ত এবং হিমায়িত এই দুই ভাবেই কাঁকড়া বাইরের দেশগুলিতে পাঠানো হয়। বিদেশে কাঁকড়ার কদর অত্যন্ত বেশি থাকায় এই চাষ করা নিয়ে আর কোনও দ্বিধা নেই চাষিদের।  

আরও পড়ুন: Duck Farming - হাঁসের বিভিন্ন প্রজাতি ও তার পালন পদ্ধতি

English Summary: How to do Crab Farming
Published on: 14 July 2021, 10:53 IST