জলবায়ুর পরিবর্তন পশুর স্বাস্থ্যের উপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে । সরাসরি প্রভাব এর মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত অসুস্থতা ও মৃত্যু এছাড়া পশুদের বিভিন্ন রোগব্যাধি উল্লেখযোগ্য । পরোক্ষ প্রভাব গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জল সংকট খাদ্য সংকট এবং বাহক জনিত রোগের আনুকূল্য বৃদ্ধি । উচ্চ তাপমাত্রা ও আদ্রতা গরুর উৎপাদনশীলতার ওপর প্রভাব ফেলে ।
এটা দেখা গেছে যে দেশি গরু গুলি উষ্ণতার পরিবর্তন অনেক বেশি সহ্য করতে পারে । অপরদিকে সংকর প্রজাতির গরু অথবা বিশুদ্ধ বিদেশী প্রজাতির গরু গুলির উষ্ণতার পরিবর্তন সহ্য করার ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক কম । তাই গ্রীষ্মকালের উষ্ণ আদ্র আবহাওয়ায় এদের উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং এরা বিভিন্ন রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয় ।
আরও পড়ুনঃ এটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি গরু, দাম জানলে অবাক হবেন, জানুন এর বিশেষত্ব
আরেকটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে গবাদি পশু গুলি জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয় সেটি হলো ছত্রাকের সংক্রমণ । বর্ষাকালের আর্দ্র আবহাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক এর বিস্তার ঘটে । এই ছত্রাক থেকে এক ধরনের ক্ষতিকারক পদার্থ তৈরি হয় যাকে বলা হয় মাইকোটক্সিন । এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং এর ফলে বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং পশুর মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে । তাই এই সময় এদের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়া দরকার ।
প্রজনন এর উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে যে জলবায়ুর পরিবর্তন পশুদের প্রজনন এর ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাব প্রভাব বিস্তার করে । উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে গ্রীষ্মকালে গর্ভধারণের ক্ষমতা প্রায় কুড়ি থেকে ত্রিশ শতাংশ হ্রাস পেতে দেখা গেছে । এছাড়া বীর্যের ঘনত্ব, শুক্রাণুর মোট সংখ্যা, প্রতি নির্গমনের সক্রিয় শুক্রাণুর সংখ্যা ইত্যাদি গ্রীষ্মকালে প্রচুর পরিমাণে কমে যায়। অধিক তাপমাত্রায় পশুরা প্রজননে লিপ্ত হতে চায় না, তাদের গর্ভধারণের হার কমে যায় এবং সন্তান উৎপাদনের হারও হ্রাস পায় ।
আরও পড়ুনঃ গ্রামীন উন্নয়নে অর্থকরী দুটি সম্ভবনাময় প্রকল্পের দিশা
দুধ উৎপাদনের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
জলবায়ুর পরিবর্তন গবাদি পশুদের উৎপাদনের উপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে বিশেষত দুধ উৎপাদনের । এটা দেখা গেছে যে গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরমে অথবা শীতকালে ঠান্ডা গবাদি পশুর দুধ উৎপাদন হ্রাস পায়।