এখানে পোল্ট্রির উন্নয়নের সম্ভাবনা সম্পর্কে বর্ণনা করা হল। একটি দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার মধ্যে পোল্ট্রি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই ঐতিহ্যগত পদ্ধতিতে পোল্ট্রি করতে পারে, কোন বিনিয়োগ ছাড়াই। এই ধরনের পোল্ট্রিগুলি ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত ডিম ও মাংস উৎপাদন করতে পারে না। সুতরাং, হাইব্রিড পোল্ট্রি বাড়াতে হবে এবং সারা দেশ জুড়ে এটিকে প্রসারিত করা খুব জরুরী। মুরগীর একটি স্থানীয় প্রজাতি প্রতি বছর ৪০-৫০ টি ডিম ডিম পাড়তে পারে যার ওজন ৩০-৫০ গ্রাম। কিন্তু হাইব্রিড মুরগি প্রতি বছর ২৫০-৩০০টা ডিম পাড়তে পারে যার ওজন ৬০-৭০ গ্রামের মধ্যে। গড়ে একজন ব্যক্তি প্রতি বছরে ২৫০-৩০০ টা ডিম খায়। ভাল স্বাস্থ্যের জন্য প্রতি ব্যক্তির দৈনিক ১২০ গ্রাম মাংসের প্রয়োজন। আমরা বাড়িতে সফলভাবে পোল্ট্রি পালন করে এই চাহিদা পূরণ করতে পারি।
পোল্ট্রির মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসন এবং আমাদের দেশে থেকে বেকারত্বের সমস্যা দূর করার একটি বড় সম্ভাবনা রয়েছে। হাঁস-মুরগি পালন করে আমরা প্রথমে আমাদের পরিবারের ডিম এবং মাংসের চাহিদা পূরণ করতে পারি, তারপর কিছু নগদ উপার্জন করতে বাকি বিক্রি করতে পারি। পোল্ট্রির উন্নয়নশীলতার কারণগুলি নীচে বর্ণনা করা হল।
১। হাঁস-মুরগি চাষের জন্য এবং হাঁস-মুরগির স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ বিভাগ অনেক প্রকল্প করেছে।
২। এখন অনেক স্পনসর এই শিল্পে অবদান রাখছে।
৩। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি কোর্স শুরু হয়েছে।
৪। তরুণ বেকার জনগোষ্ঠী ও গৃহবধূদের জন্য অনেক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারা এই কেন্দ্র থেকে পোল্ট্রি রিয়ারিং, ফার্ম প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে শিখছে।
৫। যুব উন্নয়ন বিভাগ হাঁস-মুরগি পালন সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করেছে।
৬। পোল্ট্রির খাবার সরবরাহের জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
৭। দেশের অনেক ব্যাংক সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করছে।
৮। সরকার পরিবহন এবং বিপণনের অবস্থা বিকাশ করছে।
৯। বেকার তরুণরা হাঁস-মুরগি পালন করে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে।
১০। সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি দেশে পোল্ট্রি টিকা ও ঔষধ উৎপাদন করছে।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি যে, আমাদের দেশে পোল্ট্রির ভবিষ্যত বা সম্ভাবনা খুব উজ্জ্বল। সরকারকে এই শিল্প উন্নত করতে আরো সহায়ক হতে হবে।
- দেবাশীষ চক্রবর্তী
Share your comments