উৎপল রায়, জলপাইগুড়ি, কৃষি জাগরণ: উত্তরবঙ্গে শীত ঢুকতে না ঢুকতেই পরিযায়ী পাখিদের ভিড় জমেছে বিভিন্ন নদী কিংবা পুকুর গুলিতে। ঋতু চক্রে নভেম্বর মাসের শেষের দিকেই শীতের আমেজ বুঝতে শুরু করেছেন উত্তরের মানুষ জন। যদিও আগের থেকে শীতের প্রকোপ একটু হলেও বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনে ঝলমলে রোদের রেশ থাকলেও রাতের গভীরতার সাথে সাথে নামছে ঠান্ডার পারদ। মাঝে মাঝে একটু আধটু কুয়াশা দেখা দিলেও রোদ ঝলমলে দিন থাকার ফলে তেমনভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি এখনোও। ঠান্ডা হিমেল বাতাস বয়ে যাওয়ায় রীতি মত সন্ধ্যা এবং রাত বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে শৈত্যের হার। স্বাভাবিকভাবেই উত্তরে স্বমহিমায় হাজির শীত। আর শীতের শুরুতেই বহু দূর দূর থেকে আনাগোনা শুরু হয়েছে শীতের অতিথি পরিযায়ী পাখিদের।
পরিযায়ী পাখিরা দলবদ্ধভাবে বড় কোন জলাশয়, জলঢাকা, তিস্তার মতো নদী, বড় বড় ঝিল প্রভৃতি স্থানে আস্তানা গেড়ে ফেলেছে। এমনকি এই পরিযায়ী পাখিদের ভিড় জমেছে উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী জটিলেশ্বর মন্দিরের পুকুরেও। সকাল দুপুর বিকেল বিভিন্ন সময়ে এই পরিযায়ী পাখিরা ভিড় জমিয়েছে জলাশয় গুলিতে। পাতি সরালি, রাজ সরালি, তিতির, বালি হাঁস, শামুকখোল, নাইট হেরণ সহ বিভিন্ন প্রজাতির ভিনদেশী পরিযায়ী পাখিরা বহুদূর পাড়ি দিয়ে শীতের সময় অতিথি হয়ে আসে । শীত মরশুমের বেশ কয়েকটা মাস দলে দলে কাটিয়ে দেয় অতিথি এই পাখিরা ।
তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় জটিলেশ্বর মন্দিরের পুকুরে এবং পার্শ্ববর্তী পুকুর গুলিতে পরিযায়ী পাখি প্রচুর পরিমাণে এসেছে। এছাড়াও ময়নাগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় এই পাখিদের ভিড় দেখা গিয়েছে। এগুলি সাধারণত রাশিয়া, সাইবেরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশ থেকে এই পরিযায়ী পাখিরা শীতের সময় মাইলের পর মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এসে পৌঁছায়। তবে শীত মরশুম শেষ হতে না হতেই পুনরায় প্রত্যাবর্তন করে আবার নিজ গন্তব্যে ফিরে যায়।
আরও পড়ুনঃ Millets Year: কৃষকরা এই জাতের বাজরা বপন করলে আয় হবে বাম্পার
ভারতীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখিদের পাশাপাশি পরিযায়ী পাখিরা শীতকালে পাখি প্রেমীদের কাছে দৃষ্টিনন্দন হয়ে দাঁড়ায়। এবারেও শীত পড়তে না পড়তেই পরিযায়ী পাখিদের পাশাপাশি দেশীয় প্রজাতির সাদা বকের ঝাঁক বিভিন্ন জলাশয় গুলিতে একটা অন্য রকম নজির গড়েছে।শীতের শুরুতেই পরিযায়ী পাখিদের আগমনে স্থানীয় মানুষজন থেকে শুরু করে পাখিপ্রেমীরা রীতি মত ভিড় জমাতে শুরু করেছেন বিভিন্ন জায়গায়।
আরও পড়ুনঃ “কৃষক-কেন্দ্রিক টক শো”! MOU স্বাক্ষর কৃষি জাগরণ এবং বিজয় সারদানার
এই বিষয়ে ময়নাগুড়ি রোড পরিবেশ প্রেমী সংগঠনের সম্পাদক নন্দু রায় বলেন,'মূলত এই পাখি গুলি রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, সাইবেরিয়া, জাপান, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি শীত প্রধান দেশ গুলি থেকে শীতকালে গোটা ডুয়ার্স জুড়ে বিভিন্ন নদী কিংবা জলাশয়ে দেখতে পাওয়া যায়।এই সময় পাখি প্রেমীরা ভিড় জমাতে শুরু করেন বিভিন্ন স্থানে।তবে এই সময় পাখি শিকারি বেশি পরিমাণে লক্ষ্য করা যায়।বিভিন্ন গ্রামে ফসলকে বাঁচাতে চাষের জমিতে বিভিন্ন রকম জাল ব্যবহার করা হয়।যার ফলে অনেক পরিযায়ী পাখি সেখানে আটকে মারা যায়। আমরা পরিবেশ প্রেমী সংগঠন এবং বন দপ্তরের যৌথ উদ্দোগে আমরা নজরদারি চালাচ্ছি।যাতে এই সমস্ত পরিযায়ী পাখিদের রক্ষা করা যায়।'