এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 13 March, 2019 12:13 PM IST

মাছ শহর থেকে গ্রামে, অবাঙ্গালি-বাঙালির নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায় অবিচ্ছেদ্য একটি খাদ্য সামগ্রি। মৎস্য সম্পদ সাধারণ মানুষের বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায়বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সুপ্রাচিনকাল থেকেই ভারতবর্ষে পুকুর বা নালায় মৎস্যচাষ প্রথা চলে আসছে । ভারতবর্ষে যদিও মৎস্য উৎপাদন ০.৭ মিলিয়ন টন (১৯৫১ খ্রিঃ) থেকে ১০.৭৯ মিলিয়ন টনে (২০১৫-১৬) বৃদ্ধি পেয়েছে (ডি.এ.এইচ.ডি.এফ, ২০১৬) এবং ভারতবর্ষের সামগ্রিক মৎস্য উৎপাদনের ৯৫% মাছ জলজ পালন থেকে আসে (এফ.এ.ও, ২০১৪), তবুও ভারতবর্ষের জলাশয়ের সম্ভাব্য ব্যবহার এখনো হয়নি (কুরুপ, ২০১০)।

বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মিশ্র মৎস্যচাষে ছয় প্রজাতির মাছের শতকরা অনুপাত সাধারণত কাতলা (১০-১৫%), রুই (২৫-৩০%), মৃগেল (১৫-২০%),সিলভারকার্প (২০-৩০%), গ্রাসকার্প (৫-১০%), কমনকার্প (১০-২০%) হয়ে থাকে (এফ. এ. ও. ২০০৩)।

বর্তমানে  কোন মৎস্যচাষীই পুকুরের জলজ কীটপতঙ্গ নিধনের ব্যবস্থা হিসেবে সাবান+তেলের মিশ্রন আর ব্যবহার করেন না। অধিকাংশই বাজারজাত নুভান (ডাইক্লোরভ্স বা ২,২-ডাইক্লোরভিনাইল ডাইমিথাইল ফসফেট) অথবা উস্থাদ (সাইপারমেথ্রিন) ইত্যাদি রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করেন।

মাছচাষে চুন প্রয়োগের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রচলিত কথা অনুসারে “চুন দেওয়ার অশেষ গুন/ সব তরকারিতে যেমন নুন”। আমাদের সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ৭০% চাষীভাই মৎস্যচাষে নুন্যতম জল পরীক্ষা (যেমন-pH)ব্যতিরেকেই হেক্টর প্রতি ৩০০-৩৫০ কিগ্রাঃ কলিচুন মজুতপূর্ব ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করেন।

উপরন্তু, মজুতকালীন ব্যবস্থাপনায় ৭৫% মৎস্যচাষী কমপক্ষে ৭-১০ প্রজাতির মাছ মজুত করে থাকেন এবং ৯০% মৎস্যচাষী ICAR নির্ধারিত মজুত ঘনত্ব (৭৫০০-১০০০টি, @৫০-১০০ গ্রাম/প্রতিটি) অপেক্ষা ৫০০০-৬০০০টি মাছ বেশি মজুত করেন। ৬ প্রজাতির মাছ ছাড়াও তাঁরা বাটা (Labeo bata), কালবোস (Labeo calbasu), ব্ল্যাক কার্প (Molypharyngodon piceus), গলদা চিংড়ি (Macrobrachium rosenbergii), জাপানি পূটী ইত্যাদি মাছ চাষ করেন।  অল্পসময়ে অধিক ফলনের জন্য পুকুরে অধিক মাছের চারা মজুতই তাঁদের বক্তব্য। কোন মৎস্যচাষীই ICAR নির্ধারিত মজুতকালীন মাছের অনুপাত মেনে চলেন না। তাদের মতানুসারে রুই এবং সিলভার কার্পের বৃদ্ধিরহার অনান্য মাছের তুলানায় বেশী, তাই তাঁরা এই দুটি মাছ বেশি পরিমানে মজুত করে থাকেন। এক্ষেত্রে পুকুরে মাছের অবস্থানগত বৈশিষ্ঠ্য ও তার খাদ্যাভাস বিবেচনা করা হয়না। কথায় আছে “মাছটি তুমি ছাড়ার আগে জেনেনিও খাবার/ না হলে তোমারই পোনা করবে যে সাবাড়”(বনস্পতি বিশ্বাস, ২০১৭)।

প্রায় ৩০% চাষীভাই মাছের প্রচলিত পরিপুরক খাদ্য (ধানের কুঁড়ো, সর্ষের খৈল ও ভুট্টার গুড়ো ইত্যাদি) ব্যতিরেকে বস্তাজাত শুকনো পুরানো পাউরুটি, বিস্কুট, ড্রামজাত প্রাণীজ প্রোটিন, চিটেগুড় ইত্যাদি মাছের পরিপুরক খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন এবং তাতে ভাল ফলন পান।  যদিও অধিকাংশ মৎস্যচাষীগন ICAR প্রবর্তিত বা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মাছ চাষ করছেন না,  তথাপি ৭৮% চাষী ভাই নিজেদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রতি হেক্টরে  বার্ষিক ৫ টনের বেশি মৎস্য সম্পদ উৎপন্ন করছেন এবং তাদের মধ্যে  ৯৫% চাষীভাই বছরে দুই বা অধিক বার পুকুরে মাছ মজুত এবং তারও ততোধিকবার বাজারজাত করছেন । নিজেদের অভিজ্ঞতায় এবং অধিক মৎস্য উৎপাদনের ভিত্তিতে বা আশায়  প্রায় সব মৎস্য চাষীই মিশ্র মৎস্যচাষ পদ্ধতিকে নিজেদের মত পরিবর্তন করে নিয়েছেন।

তথ্য সূত্র : বনশ্রী বিশ্বাস, অধ্যাপক শিব কিঙ্কর দাস

- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)

English Summary: mixed fish culture and management
Published on: 13 March 2019, 12:13 IST