কৃষিজাগরন ডেস্কঃ নারীদের জন্যও কর্মসংস্থান এর পথ দেখাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম-১ ব্লক মৎস্য বিভাগ। মাছ থেকে উপজাত দ্রব্য তৈরিতেও কর্ম-সংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করতে এবং মাছ-চিংড়ি চাষের বাইরেও মাছের মূল্য সংযোজিত পণ্য বা মাছের নানা পদ বিক্রি করে মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে নন্দীগ্রাম-১ ব্লক মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে শুরু হয়েছে তিন দিনের অভিনব প্রশিক্ষন কর্মশালা।
ভারত সরকারের জাতীয় মৎস্য উন্নয়ন নিগমের অর্থায়নে নেওটিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে নন্দীগ্রাম-১ মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে সামসাবাদ প্রাথমিক বহুমুখী মহিলা সংঘ সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাগৃহে নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির এলাকার বাছাইকরা পঞ্চাশ জন মহিলাদের নিয়ে শুরু হয়েছে হাতেকলমে শেখার এই বিশেষ প্রশিক্ষন শিবির। কর্মশালায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মুক্তিরানী মাইতি, নন্দীগ্রাম-১ ব্লক মৎস্যচাষ সম্প্রসারন আধিকারিক সুমন কুমার সাহু, প্রফেসর ও ডিন মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগ, নেওটিয়া বিশ্ববিদ্যালয় তথা কেভিএএফএস ইউনিভার্সিটির সাবেক রেজিস্ট্রার, ডিন ও ডিরেক্টর ডাঃ এইচ শিবানন্দ মূর্তি সহ অন্যন্য বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ।
আরও পড়ুনঃ রোগ –বালাই –এর প্রতিকার সফল মাছ চাষের চাবিকাঠি
মাছ থেকে উপজাত দ্রব্য তৈরি ও মাছের মূল্য সংযোজন পণ্য বা মাছের নানা পদ তৈরি হাতে কলমে দেখান শেখান নন্দীগ্রাম-১ ব্লক মৎস্যচাষ সম্প্রসারন আধিকারিক শ্রী সুমন কুমার সাহু, পশ্চিমবঙ্গ প্রানী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা শ্রীমতী স্বর্ণদ্যুতি নাথ, নেওটিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর নীরজ পাঠক। অংশগ্রহন কারী মহিলাদের মধ্যে সূপর্না পাহাড়ি বলেন, “এই ট্রেনিংয়ে আমরা শিখছি হরেক পদ। সেই তালিকায় যেমন আছে চিংড়ির আচার, মাছের মোমো, ফিশ সামোসা, ফিশ ফিঙ্গার, ফিশ বলের মতো জনপ্রিয় পদ, তেমনই মৎস্যজাত ও উপজাত দ্রব্য যেমন একদম নতুন একটি সার যেটা মাছ-সার বা ফিশ ফার্টিলাইজার ও মাছের আঁশের অলংকার” ।
এই অভিনব প্রশিক্ষন কর্মশালার প্রসঙ্গে, নন্দীগ্রাম-১ ব্লক মৎস্যচাষ সম্প্রসারন আধিকারিক সুমন কুমার সাহু “আমাদের মূল লক্ষ্য মৎস্যকেন্দ্রীক প্রকল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভর করা ও আত্মকর্মসংস্থান বাড়ানো তার জন্য মহিলা, যুব সকলকে নানাভাবে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। যাতে স্বনির্ভর দলের মহিলারা মাছকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থানের দিশা খুঁজে পান, সেটাও আমাদের লক্ষ্য। আর এই স্বনির্ভর দলের মহিলাদেরও মাছের পদ তৈরি ও বিক্রির কাজে উৎসাহ দেওয়া যায়, তার জন্যই প্রশিক্ষন কর্মশালা”। নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মুক্তিরানী মাইতি বলেন, “সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই ট্রেনিং পাচ্ছেন মহিলারা। সঙ্গে কর্মশালায় আসা যাওয়ার খরচও পাচ্ছে । প্রশিক্ষন শেষে শংসাপত্রও দেওয়া হবে”।
আরও পড়ুনঃ নন্দীগ্রাম-১ ব্লক মৎস্য বিভাগের অভিনব উদ্যোগ –মৎস্যজীবিদের ডিজিটাল সংযুক্তি
অংশগ্রহন কারী মহিলা মুন বানু, আয়েশা খাতুন, রীনা মাইতি, সীতা ভুইয়া, সোলেমা বিবি, রোজেনা খাতুন, মনসুরা বিবি,সুচরিতা হাজরা প্রভৃতিরা জানান, মাছের আঁচার, চিংড়ির আঁচার এই ধরনের প্রোডাক্ট আমাদের দেশ পাড়াগাঁয়ে ছিলনা , আমরা জানলাম, তৈরি করে নিজেরা খেয়েও দেখলাম বেশ সুস্বাদু । তাই মাছের মূল্য সংযোজন পণ্য তৈরি করে নতুন এক উদ্যোগ আমরা গ্রহন করব একে আমাদের বিভিন্ন মেলায় পাঠানোর চেষ্টা করব।