এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 21 September, 2021 5:31 PM IST
Periphyton based aquaculture (image credit- Google)

পুকুর, ধান ক্ষেত কিংবা জলাশয়ের প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবহার করে মৎস্য উৎপাদনের পদ্ধতিকে বলা হয় পেরিফাইটন মৎস্য চাষ। আমাদের দেশের মৎস্য চাষিদের জন্য তেমনি একটি প্রাকৃতিক উদ্ভাবন হলো পেরিফাইটন। যা মৎস্য উৎপাদনকে বাড়ায় দুই থেকে তিনগুণ আর খরচও খুবই কম। সাধারণ খামারিরা সহজেই এ পদ্ধতিতে চাষ করতে পারেন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

গ্রামাঞ্চলে পুকুর বা নিচু যেসব জমি ধান চাষের অনুপযোগী সেসব পরিত্যক্ত জমিতে মাছ চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এ দেশের বেশির ভাগ কৃষক বা খামারিই চাষকৃত মাছের খাদ্য সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হয় তাঁদের। তাই স্বল্পমূল্যে এবং অল্প জমিতে অধিক মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদে শুরু হয় গবেষণা। যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস ও ভারতীয় বিজ্ঞানীদের যৌথ উদ্যোগে ‘পেরিফাইটনভিত্তিক মাছ চাষ পদ্ধতি সফল হয়।

পেরিফাইটন পদ্ধতি কি(What is periphton)?

পেরিফাইটন হচ্ছে একধরনের শৈবাল যা মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়, বিভিন্ন জলজ জীব-অনুজীবের এসব জীব-অনুজীবের মধ্যে রয়েছেন্ধ ব্যাকটেরিয়া, এককোষী প্রাণী, ছত্রাক, ফাইটোপ্ল্যাংটন, জুপ্ল্যাংটনসহ বিভিন্ন তলদেশীয় প্রাণী। এসব অনুজীব মাছ ও চিংড়িজাতীয় প্রাণীর খুবই প্রিয় খাবার। পেরিফাইটন বিভিন্ন মৎস্যকুলকে শুধু আকৃষ্টই করে না বরং এসব অনুজীব মাছ ও চিংড়ি জাতীয় প্রাণীর খুবই প্রিয় এবং পুষ্টিকর খাবারও বটে।

সাধারণত যেসব মাছ গ্রেজিং বা চেঁছে খাবার খায় তারা পেরিফাইটন পদ্ধতিতে চাষের জন্য খুবই ভালো। আমাদের দেশী প্রজাতির মধ্যে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউসসহ তেলাপিয়া ও চিংড়ি এ পদ্ধতিতে চাষের জন্য উপযোগী। তিনি বলেন, জলাশয়ের পানিতে বাঁশ বা গাছের ডাল প্রভৃতি সাবস্ট্রেট হিসেবে ব্যবহার করা যায়। হিজল ডাল সাবস্ট্রেট হিসেবে খুবই ভালো। তবে বাঁশের কঞ্চি, পাট খড়ি, গ্লাস রড, প্লাসটিক দণ্ডও সাবস্ট্রেট হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন -Azolla cultivation guide: বেকার সমস্যা দূরীকরণে অ্যাজোলা চাষে লাভ করুন দ্বিগুন

গবেষণায় আরো দেখা গেছে, আমাদের দেশে সাধারণত গৃহস্খালি পুকুরগুলো এমনিতেই ফেলে রাখা হয়, সেখানে মাছ ছাড়া হলেও মাছের বৃদ্ধি হয় খুবই কম। এ ক্ষেত্রে সেখানে পেরিফাইটন পদ্ধতিতে তথা সাবস্ট্রেট ব্যবহার করে সহজেই মাছের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।

মাছ চাষ পদ্ধতি(Farming process):

পেরিফাইটন একধরনের শৈবাল হলেও সাধারণ পানিতে এবং সব পরিবেশে এটা জন্মায় না। সাবস্ট্রেট বা ভিত্তিমূলের ওপর পেরিফাইটন জন্মে থাকে। এ ক্ষেত্রে হিজল ডাল সবচেয়ে উপযোগী। তবে বাঁশ, কঞ্চি, শেওড়া ইত্যাদি গাছের ডাল এমনকি পাটের খড়ি, গ্লাস রড, প্লাস্টিক দণ্ডও ব্যবহার করা যেতে পারে। এসব ডালপালা পুকুরজুড়ে বা ধান ক্ষেতের কোণে পুঁতে রাখলে তাতেই ওই শৈবালজাতীয় জুপ্লাংকটন বা ফাইটোপ্লাংকটন জন্মে থাকে এবং সবুজাভ রঙের একটি আস্তরণ পড়ে। এ ছাড়া অন্যান্য প্রাণিজ খাবারও তৈরি হয়। ওই সব ডালপালার ওপর জন্মানো আস্তরণ বা শৈবালই পেরিফাইটন, যা মাছের প্রিয় খাবার। পুকুরে বা ধানক্ষেতে পুঁতে রাখা গাছের ডালপালার ওপর জন্মানো পেরিফাইটনের পুষ্টিমান প্রচলিত পদ্ধতিতে মৎস্য খামারে প্রয়োগকৃত সার বা গৃহস্থালির কুঁড়াজাতীয় খাবারের তুলনায় প্রায় দুই থেকে তিনগুণ।

সরবরাহকৃত খাদ্য ব্যবহার করে আধা-নিবিড় পদ্ধতিতে রুই মাছের মনোকালচারের ক্ষেত্রে উৎপাদন পাওয়া গেছে হেক্টরপ্রতি এক হাজার কেজি। অপরদিকে পেরিফাইটন পদ্ধতিতে একই পুকুরে ওই মাছের উৎপাদন হেক্টরপ্রতি এক হাজার ৯০০ কেজি পাওয়া গেছে। অন্যদিকে পলিকালচার বা মিশ্রচাষের ক্ষেত্রে পেরিফাইটন পদ্ধতিতে প্রায় তিনগুণ উৎপাদন পাওয়া গেছে।

রুই-কাতলা মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে, রুই শতকরা ৬০ ভাগ ও কাতলা শতকরা ৪০ ভাগ হওয়া ভালো। এ ছাড়া তেলাপিয়া-চিংড়ি মিশ্রচাষে ১৪৫ দিনে সর্বোচ্চ মোট উৎপাদন হেক্টরপ্রতি দুই হাজার ৪৪৫ কেজি তেলাপিয়া এবং ১৪১ কেজি চিংড়ি পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন -Pengba cultivation process: পেংবা মাছ চাষ করে অধিক উপার্জন করুন

English Summary: Periphyton based aquaculture: Periphyton method of fish farming will increase the production three times
Published on: 21 September 2021, 05:31 IST