সকল মাছ চাষে চাষীদের কাছে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বা বাধা হয় দাড়ায় মাছেদের পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের আকাশ ছোয়া দাম – যা সংকচিত করবার এক এবং একমাত্র উপায় হল এই ঘরোয়া পদ্ধতিতে খাবার তৈরি করা। এখন, এই খাবার সাধারণত দু-প্রকার হাওয়ায় তাদের প্রস্তুত প্রণালীতেও কিছুটা ফারাক রয়েছে যা এর উপ শিরোনামে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রাকৃতিক খাবার তৈরি
আমরা সকলেই জানি যে, যে কোনো প্রাণের সুন্দর ভাবে বেড়ে ওঠার পেছনে নির্দিষ্ট কিছু খাবারের ঠিক কতখানি বৈজ্ঞানিক ভূমিকা রয়েছে এবং প্রাথমিক স্তরে সেই ভূমিকা খুব দক্ষতার সাথে পালন করতে পারে একমাত্র প্রাকৃতিক খাবার, যা আবার যে কোনও মাছের ক্ষেত্রে সাধারণত দু-প্রকার হয় – উদ্ভিদ কনা এবং প্রাণিকনা বা ফাইটোপ্ল্যাংক্টন ও জুপ্ল্যাংক্টন ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ মাছের রোগ-বালাই প্রতিরোধ ব্যবস্থা: ডোজ প্রযুক্তি
কিন্তু এই দুই তৈরি করার আগে প্ল্যাংক্টন নেটের সাহায্যে এদের মাত্রা যাচাই করে নেওয়া একান্তই কাম্য, নয়তো, তার প্রস্তুত পদ্ধতির পিছুও কিছু অ-প্রজনীয় খরচ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রাণি-কনার মধ্যে খুব সহজেই আজোলা, স্পিরোলিনা, ও এমনকি, প্রাণিকনা – রটিফারকে সহজে বানিয়ে নেওয়া সম্ভব যা ছবিতে কিছুটা হলেও দেখানো সম্ভব হল বলে মনে হয়। অবশ্য, রটিফারের বার বৃদ্ধির জন্য তার খাবার – যেমন ক্লোরেলা, যাও পাশাপাশি সহজে কালচার করা যায়, হয়ত বা স্থানীয়ভাবে সামান্য প্রশিক্ষন পাওয়া গেলে। এছাড়াও আরেক ধরনের খাবার বিশেষ ভাবে উত্পাদন করা সম্ভব তাও আবার বিনা খরচে ও বিনা পরিশ্রমে – যা হল পেরিফাইটন; এটি তৈরি করা হয় শুধুমাত্র কয়েকটি বাঁশের এবং আখের ব্যাগাসের সাহায্যে, যেখানে সেই আখের ব্যাগাসটিকে ভালো করে বেঁধে দেওয়া হয়ে সেই বাঁশের খুঁটিতে।
রটিফার কালচার (বা দিক) বাঁশের খুঁটি আখের ব্যাগাসের সাহায্যে পেরিফাইটন উত্পাদন (ডান দিক)
পরিপূরক খাবার তৈরি
প্রাকৃতিক খাবার অনেক সময় অপর্যাপ্ত হয়ে পড়ায় নির্ভর করতে হয় কিছু পরিপূরক খাবারের উপর যাদের প্রস্তুতি কিছু নির্দিষ্ট ছকে বা ধাপের মাধ্যমে সমপণ্য করতে হয়। সর্বপ্রথম ধাপই হল খাবার তৈরির জিনিসগুলিকে ভাল করে গুঁড়ো করে ওজন করে নেওয়া, তারপর তার সাথে একে একে অনুপুষ্টিকর কিছু দ্রব্যের মিশ্রণ ঘটানো, তারপর সেই মিশ্রণগুলিকে যান্ত্রিক উপায় নানান আকারে তৈরি করে নির্দিষ্ট প্যাকেটে জমিয়ে রাখা – এই সামান্য ধাপগুলিকে পর্যায়ক্রমে পালন করলেই, চাষের খরচে হ্রাস টানা অনেকটাই সম্ভব। কিন্তু একথাও আমাদের চাষী বন্ধুদের মাথায় রাখতে হবে যে খাবার দেওয়ার জন্যে নির্দিষ্ট স্থান, সময়, ও ধৈর্যের সঙ্গে প্রয়োগ করতে পারলে মাছের পালন ও জলের গুণমান (সঙ্গে মাটির তলদেশেরও) দুই-ই নিশ্চিত করা যায়। এরকমই কিছু পরিপূরক খাদ্যের প্রস্তুত প্রণালীর বর্ণনা নিম্নলিখিত চিত্রের মধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ গৃহপালিত প্রাণীর পরজীবি ঘটিত রোগ এবং তার প্রতিকার