সাধারণ বাগান চাষীদের কাছে শামুক একটি সমস্যার নাম। গাছের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করা সহ পাতা খেয়ে ফেলে শামুক। তবে অনেকেই জানেন না এই শামুকের কিন্তু অনেক চাহিদা আছে অন্য ক্ষেত্রে। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা শামুক থেকে তৈরি করা হয় চুন৷ চুন তৈরীর কাঁচামাল এই হল শামুক৷ এছাড়া সার তৈরি করা হয় শামুক থেকে। মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয় শামুক।
তাই আপনার যদি কোন অব্যবহৃত পুকুর-ডোবা বা জলাশয় থাকে তাহলে শুরু করে দিন শামুক চাষ । এটি খুবই সহজ একটি পদ্ধতি এবং পুঁজির প্রয়োজন হয় খুবই কম। শামুকের প্রজনন ক্ষমতা অনেক বেশি তাই খুব অল্প দিনেই আপনি লাভবান হয়ে উঠবেন।
চাষ কৌশল(Farming process):
১২০ শতাংশের পুকুরে প্রতি শতাংশ হিসেবে এক কেজি গোবর, এক কেজি খৈল ও ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া পানিতে ভালোভাবে মেশাতে হবে। এ মিশ্রণ সমান চার ভাগে ভাগ করে তিন দিন অন্তর পানিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। পুকুরের পানির রং যখন গাঢ় সবুজ হবে, তখন বুঝতে হবে পুকুরটি শামুক চাষের উপযোগী হয়েছে। এরপর খালবিল বা পুকুর থেকে শামুক সংগ্রহ করে প্রতি শতাংশ হিসেবে ২৫০ গ্রাম শামুক পুকুরের চারদিকে ছিটিয়ে দিতে হবে।
পরবর্তী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে শামুক ব্যাপকভাবে বংশবিস্তার করবে। এরপর ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ শামুক পাওয়া যাবে। অর্থাৎ ১২০ শতাংশ পুকুর থেকে ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে প্রায় দুই হাজার কেজি ছোট শামুক উৎপাদন সম্ভব। শামুকের খাবার হিসেবে প্রতি শতাংশ হিসেবে ২৫০ গ্রাম গোবর, ২৫০ গ্রাম খৈল এবং ১০০ গ্রাম ইউরিয়া মেশানো কম্পোস্ট তিন দিন পরপর পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে।
পুকুর থেকে শামুক তুলে চালের কুড়ার সঙ্গে মিশিয়ে তাজা শামুককে প্রথমে খাদ্য ভাঙানোর পিলেট মেশিনের মাধ্যমে গুঁড়ো করা হয়। এগুলো পরে রোদে শুকানোর পর খৈল ভাঙানোর মেশিনের মাধ্যমে আবার সূক্ষ্মভাবে চূর্ণ করে সরাসরি মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
আরও পড়ুন -Jayanti Rohu Fish Farming: জয়ন্তী রুই মাছ চাষে আপনিও হবেন লাভবান , শিখে নিন কৌশল
শামুকের খাদ্য(Food):
প্রকৃতিতে থাকা অবস্থায় শামুক নানা রকম খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। স্থলচর শামুকরা তৃণভোজী। এরা গাছের নরম ছাল, গাছের পাতা, ফল, শাক ইত্যাদি খেয়ে থাকে। শামুকের কিছু প্রজাতি শষ্য ও বাগানের গাছের ক্ষতিসাধন করে এই জাতের শামুককে ক্ষতিকারক কীটের দলে ফেলা যায়। আবার কিছু প্রজাতি ক্ষেতের কীট খেয়ে উপকারও করে যার জন্য Biological pest controller বলা হয়। জলজ শামুক বিভিন্ন ধরণের খাদ্য যেমন প্ল্যাংকটন, শৈবাল, ছোট ছোট গাছ গাছড়া এবং অন্যান্য জলজ আণুবীক্ষনিক জৈববস্তু খায়।
শামুক সংগ্ৰহ করার উপায়:
চাষ পদ্ধতি শুরুর ৪০-৪৫ দিন পর শামুক সংগ্ৰহ করতে হবে। এজন্য বাঁশ বা কাঠের বড় লাঠি পুকুরে দিয়ে রাখতে হবে শামুক গুলো ঐ বাশের সাথে আটকে থাকবে । এবার বাঁশ গুলোকে তুলে এনে শামুক গুলো ছাড়াতে হবে। এরপর শামুক গুলো ভেঙ্গে রোদে শুকিয়ে পরবর্তীতে মেশিনের সাহায্যে গুরো করতে হবে। এবার অন্যান্য খাবারের উপাদানের সঙ্গে মেশানোর পর পিলেট মেশিন দিয়ে শিং খাবার তৈরি করতে হবে।
আরও পড়ুন -Successful bean farming: বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গায় অটো জাতের শিম চাষে কৃষকদের ব্যাপক সাফল্য