গবাদি পশু গার্হস্থ্য প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গবাদি পশুর চাষ খুব লাভজনক, বজায় রাখা সহজ এবং একটি ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা। কিন্তু গবাদি পশুর চাষের ব্যবসা থেকে ভাল লাভের জন্য আপনাকে আপনার খামারের জন্য উপযুক্ত এবং উৎপাদনশীল গবাদি পশুর প্রজাতির নির্বাচন করতে হবে। সারা বিশ্ব জুড়ে প্রচুর গবাদি পশুর প্রজাতি পাওয়া যায়। এদের মধ্যে কয়েকটি গবাদি পশু দুধ উৎপাদনের জন্য ভালো আর কিছু প্রজাতি মাংস উৎপাদনশীল,এবং কিছু গবাদি পশু দুধ এবং মাংস উভয় উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। গবাদি পশুর প্রজাতিগুলি তাদের উৎপত্তি ও উৎপাদনের উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।
উত্পাদনের ভিত্তি: দুধ ও মাংসের উৎপাদন ও কার্যকারিতা অনুসারে, গবাদি পশুর প্রজাতি চার ধরনের।
দুধ জাত প্রজাতি: এই ধরনের গবাদি পশুর প্রজাতি অত্যন্ত দুধ উত্পাদনশীল হয়ে ওঠে। কিছু বিখ্যাত দুধ উত্পাদনশীল গবাদি পশুর প্রজাতি হল হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান, সাহিওয়াল, জার্সি, রেড সিন্ধী, ব্রাঊন সুইস, আয়ারশায়ার ইত্যাদি।
মাংস জাত প্রজাতি: এই প্রজাতি তাদের মাংস উত্পাদনের জন্য খুব বিখ্যাত। মাংস উত্পাদনশীল গবাদি পশুর প্রজাতিগুলো হল এঙ্গাস, বীফমাস্টার , ডেভন , হাল্লিকার ইত্যাদি।
দুধ এবং মাংস উভয় উত্পাদনশীল: এই ধরনের গবাদি পশুর প্রজাতি দুধ এবং মাংস উভয় উত্পাদনের জন্য জনপ্রিয়। হরিয়ানা, থারপার্কার, রেড পুল, কঙ্ক্রেজ, দুধিং শর্টর্ন ইত্যাদি দুধ ও মাংসের জন্য বিখ্যাত।
ড্রাফট প্রজাতি: এই ধরনের গবাদি পশুর প্রজাতি কঠোর পরিশ্রমের জন্য খুবই উপযুক্ত। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ড্রাফট গবাদি পশু হল হরিয়ানা, অমৃতমহল, মালভি, কৃষ্ণ উপত্যকা, ভাগনারী ইত্যাদি।
উৎপত্তিগত ভাবে গবাদি পশুর প্রজাতি: উৎপত্তিগতর ভিত্তিতে গবাদি পশুর প্রজাতি নীচে বর্ণিত তিনটি ধরণের হয়।
দেশী প্রজাতি: এই ধরনের গবাদি পশুর প্রজাতি হল স্থানীয় প্রজাতি। এরা খুব শান্ত প্রকৃতির এবং মাঝারি আকারের হয়। এদের শরীরের রং একে অপরের থেকে ভিন্ন। এরা অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় কম দুধ এবং মাংস উৎপাদন করে, তবে ছোট আকারের পারিবারিক চাষের জন্য উপযুক্ত।
বৈদেশিক জাত প্রজাতি: এই ধরনের গবাদি পশুর প্রজাতি বিশ্বের বিভিন্ন অংশ থেকে উদ্ভূত হয়। হলস্টাইন ফ্রিজিয়ান, জার্সি, আয়ারশায়ার প্রভৃতি বিখ্যাত বিদেশী গবাদি পশু।
হাইব্রিড প্রজাতি: বিভিন্ন ধরনের গবাদি পশুদের কৃত্রিম গর্ভধারণের মাধ্যমে হাইব্রিড গবাদি পশু প্রজনন করা হয়।
- দেবাশীষ চক্রবর্তী