Weather Update: ঝেঁপে নামবে বৃষ্টি! শনিবার থেকেই আবহাওয়ার আমূল পরিবর্তনের পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের “ট্র্যাক্টর কে খিলাড়ি” কৃষকদের 51 হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার “মিলিওনেয়ার ফার্মার অফ ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ডস 2024” এবার জুরির সভাপতিত্বে নীতি আয়োগের সদস্য অধ্যাপক রমেশ চাঁদ
Updated on: 5 October, 2020 2:13 PM IST

মাছের ডিম ও চারার সুরক্ষিত পরিবহনের  ব্যবস্থাপনা মৎস্য চাষের একটি প্রধান উপাদান। এই পদ্ধতি সঠিকভাবে সম্পাদিত না হলে মাছের চারা ও ডিমের মৃত্যুর সম্ভবনা অনেক বেড়ে যায়। মাছের চারা ও ডিম অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় এদের সঠিক পরিবহন ও পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবহনের সময় সঠিক পরিমাণে অক্সিজেনের সরবরাহ না হওয়ার কারণে চারা বা ডিমের মৃত্যু হয়। তাই পরিবহনের সময় সঠিক অক্সিজেনের সরবরাহের দিকে লক্ষ্য রাখলে মাছের চারা ও ডিমের মৃত্যুকে অনেকাংশে কমানো যেতে পারে। 

পরিবহনের সময় মাছ মাছের চারার মৃত্যুর প্রধাকারণগুলিঃ

  • মাছের শ্বাসকার্য চালানোর জন্য বা জৈব বস্তুর যেমন মাছের বর্জ্য পদার্থের জারণের ফলে পারিপার্শ্বিক জলাশয়ে দ্রবীভূত অক্সিজেনের অভাব ঘটে, যা পরিবহনের সময় মাছ ও তাদের চারার মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে মনে করা হয়।

  • মুক্ত অ্যামোনিয়া ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মত গ্যাসগুলির জমায়েত হওয়ার কারণে পরিবহনের সময়ে মাছ ও চারার মৃত্যু হতে পারে, কারণ শ্বাসকার্য ও রেচন হল মাছের সবসময় চলতে থাকা প্রক্রিয়া।

  • পারিপার্শ্বিক পরিবেশের তাপমাত্রার পরিবর্তন।

  • মাছের শরীরে আগে থেকে বাসা বেঁধে থাকা কোনো রোগের কারণেও হতে পারে।

পরিবহনের আগে মাছের সুরক্ষার জন্য করণীয় কিছু কাজঃ

দীর্ঘকালীন পরিবহনের আগে মাছ ও তার চারা গুলিকে সঠিক পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এই প্রস্তুত-প্রণালীগুলি মাছের সুস্থতা ও শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে করা উচিৎ। পরিবহনের আগে গর্ভবতী মাছ ও তাদের চারাগুলিকে খালিপেটে (না খাইয়ে বা অল্প খাইয়ে) পুকুরের অপেক্ষাকৃত শান্ত জায়গায় বেশ কিছু সময়ের জন্য কাপরের হাপায় বা অন্য কোনো পাত্রের মধ্যে রাখা দরকার।

এই সুরক্ষা পদ্ধতিগুলির সুবিধাগুলি নিচে আলোচনা করা হল -

  • মাছ তাদের পরিবহনের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারে।

  • মাছ যেহেতু আগে থেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়, তাই তাদের শক্তির অপচয় কম হয়।

  • মাছ ধরার সময় স্ট্রেসের কারণে যে প্রভাব গুলি শরীরে তৈরী হয় যেমন রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া বা রক্তের পিএইচ কমে যাওয়া, ইত্যাদি কাটিয়ে উঠে মাছ স্বাভাবিক হতে পারে এই সময়ের মধ্যে।

  • মাছ ছোটো- খাটো ক্ষতগুলি থেকে কাটিয়ে উঠে স্বাভাবিক হতে পারে।

 মাছের চারার পরিবহনের সময় যে জিনিসগুলি মনে রাখা দরকার -

  • মাছ ও মাছের চারা সব সময় ভোরবেলা ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় পরিবহন করা উচিৎ।

  • মাছের চারা পরিবহনের সময় ঠাণ্ডা ও পরিষ্কার জল সব সময় ব্যবহার করা উচিৎ।

  • মাছের চারা পরিবহনের সময় মাছের চারার সংখ্যা খুব ভাল করে লক্ষ্য রাখা দরকার।খুব বেশী সংখ্যক মাছ বা চারা এক সাথে পরিবহন করা উচিৎ নয়, এতে চারার মৃত্যু হতে পারে।

  • পরিবহনের সময় খেয়াল রাখা দরকার সূর্যালোক যেন সরাসরি কখনই না পরে।

  • যদি পরিবহনের রাস্তা খুব বেশী দীর্ঘ হয়, তবে গ্লুকোজ পাউডার যোগ করা যেতে পারে।

মাছের চারাগুলি পরিবহনের পদ্ধতি-সমূহঃ

মুক্ত পদ্ধতিঃ  এটি সহজ পদ্ধতিগুলির মধ্যে অন্যতম।  এই প্রক্রিয়ায় মাটির পাত্র পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয়, যা প্রথাগতভাবে হাড়ি নামে পরিচিত। তবে বর্তমানে অনেক সময় মাটির পাত্রের বদলে অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র ব্যবহার করা হয়। তবে মাটির পাত্রে ব্যবহারে পাওয়া অন্যতম বিষয়টি হল, এটি তাপমাত্রাকে খুব ভালো ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে শীতলতা বজায় রাখতে পারে। পশ্চিমবঙ্গে ২ ধরণের মাটির পাত্র ব্যাবহার করা হয়।

  • ছোট পাত্রঃ ২০ সেমি পরিধি এবং ২৩ লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন।

  • বড় পাত্রঃ ২৩ সেমি পরিধি এবং ৩২ লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন।

বদ্ধ পদ্ধতিঃ   বর্তমানে এটি একটি বহুল প্রচলিত পদ্ধতি। এই প্রক্রিয়ায় রবার অথবা প্লাস্টিক ব্যাগ এবং বদ্ধ ধাতব পাত্র ব্যবহার করা হয়। বড় মাপের মাছ বা চারার পরিবহনের জন্য সাধারণত এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য বাহকের উপরিভাগে বরফ ব্যবহার করা হয়।

যে বিষয় গুলি এই ধরণের পরিবহনের ক্ষেত্রে মাথায় রাখা দরকারঃ

  • কতটা পরিমাণ মাছ পরিবহন করা হচ্ছে।

  • অক্সিজেন ব্যবহারের মাত্রা।

  • প্রাথমিকভাবে জলে অক্সিজেনের পরিমাণ।

  • পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত জলে অক্সিজেনের প্রবেশের মাত্রা।

  • পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত জলে রেচন-পদার্থের সঞ্চয়ের মাত্রা।

উপসংহারঃ  উপরিউক্ত  আলোচনা থেকে আমরা  এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে, মাছ ও মাছের চারার সঠিক পরিবহন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিভিন্ন মাছের ধরণের ওপর ভিত্তি করে মাছের পরিবহন পদ্ধতিতে পরিবর্তন ঘটতে পারে। সেই সতর্কতাগুলি মাথায় রেখে পরিবহন করতে পারলে আমরা মাছের মৃত্যুর সম্ভবনাকে অনেকাংশে কমাতে পারি।

নিবন্ধ - শতরূপা ঘোষ সৌমিলি দাস (জলজ পরিবেশ ব্যবস্থাপনা মৎস্য-সম্প্রসারণ বিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা)

English Summary: Some necessary steps to be taken to protect fish before transportation
Published on: 05 October 2020, 02:13 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)