'রাক্ষুসে মাছ'-বিপদ কোথায়? 'MFOI, VVIF কিষাণ ভারত যাত্রা' গুজরাটের বিভিন্ন গ্রামে পৌঁছে কৃষকদের সম্মানিত করেছে কাঁচা আম খেলে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ হবে এবং এই সমস্যাগুলো দূর হবে!
Updated on: 21 October, 2019 8:35 PM IST

চিতল মাছ বাঙালীদের এক প্রিয় মাছ, স্বাদে অতুলনীয় আবার চিতল মাছ বিদেশে কাঁচের অ্যাকোরিয়ামে বাহারী মাছ হিসেবে ব্যাবহার করা হয়। তাই আধুনিক বাণিজ্যিক মাছ চাষে চিতলের গুরুত্ব বাড়ছেচিতল মাছের চারাপোনাও তৈরি করছে মাছ চাষীরা   তবেমিশ্র চাষে বিশেষ সতর্ক থাকতে হয়, উত্তর প্রদেশের রাজ্য মাছ হল চিতল স্বাদে অতুলনীয়চিতল একটি রাক্ষুসে স্বভাবের মাছ। জীবন্ত ছোট মাছ এদের প্রধান খাদ্য। এরা পুকুরে অন্য মাছের পোনা খেয়ে থাকে। তাই চিতল মাছ চাষ করতে চান না অনেকে। কিন্তু সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে চিতল মাছ চাষ লাভজনক। তাই আধুনিক মাছ চাষে, চিতল চাষে উদ্যোগী হচ্ছেন মাছ চাষীরা আবার এখন চিতলের চারাপোনা হ্যাচারী থেকে সহজেই পাওয়া যায়। তাই আরো বেশি করে চিতল মাছের মিশ্র চাষে আগ্রহী হচ্ছেন মাছ চাষীরা মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে অন্যন্য মাছের সাথে চিতল মাছ চাষের প্রশিক্ষন দেওয়া হয়। 

চিতল মাছ ও ফলই মাছ একই রকমের দেখতে হলেও লেজের কাছে কালো গোল দাগ দেখে অতি সহজেই চিতল মাছ চেনা যায়। চিতল অত্যন্ত সুস্বাদু মাছ, এটি সাধারণত মিষ্টি মাছ । চিতল মাছের দেহ ও মুখ চ্যাপ্টা,পিঠ বাঁকানো,পেটের দিক ঝোলানো চিতল মাছের দেহের দু-পাশে পৃষ্ঠদেশের উপর বারো থেকে পনেরোটি রুপালী দাগ আছে লেজের নিচের দিকে পাঁচ থেকে আটটি কালো গোল দাগ থাকে । এ মাছটির মাথার পেছনে পৃষ্ঠদেশ ধনুকের মত বেঁকে উপরে উঠে গেছে । 

পরিষ্কার জলে পুকুরে তলদেশে গর্তে, তালপাতা, কলাপাতার নিচে বা পুকুরের ঝোপঝাড়ে থাকতে পছন্দ করে। চিতল মাছ জলজ আগাছার গোড়ায়, জীবিত বা মৃত ডালপালা দিয়ে নির্মিত বাসায় ডিম পাড়ে। অনেক সময় এরা কাঠ জাতীয় অবকাঠামোতেও ডিম দিয়ে থাকে। এদের ডিম আঠালো হওয়ায় ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার আগে  পর্যন্ত ডিমগুলো বাসার অবলম্বনের সাথে আটকে থাকে। ডিম পাহারা দেয় পুরুষ চিতল। আর লেজের সাহায্যে জল নেড়ে, ডিমে অক্সিজেন সরবরাহ করে রেণু পোনার জন্ম দেয়।

চিতল মাছ সাধারণত এপ্রিলের শেষ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত অমাবস্যা বা পূর্ণিমার রাতে ডিম দিয়ে থাকে। তাই এ সময়ে পুকুরে পাম্প মেশিন দিয়ে জলের প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। এতে চিতল মাছের ডিম পাড়া তরান্বিত হবে। ডিম সংগ্রহের জন্য কাঠের ফ্রেম পুকুরে ডুবিয়ে রাখতে হবে, চিতল মাছ এখানে ডিম দিয়ে থাকে।

এপ্রিলের আগেই এটি সম্পন্ন করে রাখতে হবেমে মাস থেকে চিতল ডিম পাড়তে শুরু করে। অমাবস্যা বা পূর্ণিমার ২-৩ দিন পর কাঠ দিয়ে বানানো ফ্রেমটিকে তুলে দেখতে হবে ডিম দিয়েছে কিনা। ফ্রেমে যদি ডিম দেখা যায়,তাহলে ডিমসহ ফ্রেমটিকে নার্সারি পুকুরে স্থানান্তরিত করতে হবে। 

ডিমসহ কাঠের ফ্রেমটি নার্সারি পুকুরে সতর্কতার সঙ্গে দ্রুত ডুবিয়ে রাখতে হবে। ডিম ফুটতে প্রায় ১৫ দিন লাগে। জল পরিষ্কার না হলে ডিমে ফাঙ্গাস পড়তে পারে। নার্সারিতে নেওয়ার পর তাপমাত্রাভেদে ১২-১৫ দিনের মধ্যেই ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়। 

চিতলের লাভজনক মিশ্র চাষ করা যায়। তবে চিতল একটি রাক্ষুসে স্বভাবের মাছ। জীবন্ত ছোট মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে  তাই বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। তেলাপিয়ার সঙ্গে চিতল মাছের চাষ করলে এই সমস্যা মেটানো যায়। কারণ, তেলাপিয়া মাছ প্রলিফিক ব্রিডার। অজস্র বাচ্চা দেয়, যা চিতল মাছের খাবার হিসেবে কাজ করে। তেলাপিয়ার সঙ্গে চিতল চাষ করলে চিতলের যেমন খাবার কম পড়ে না,তেমনই তেলাপিয়ারও অসুবিধা হয় না। আবার চিতলের বাচ্চার চেয়ে বড় সাইজের রুই, কাতলা কার্প জাতীয় মাছকে একসাথেই চাষ করা যায়। রাক্ষুসে চিতলের পেট তেলাপিয়ার ছোট বাচ্চায় ভরে যায়। তাই সহজেই রুই, কাতলা মাছের সাথে চিতল মাছ চাষ করা যায় একটি চিতল এর বিপরীতে ছয় থেকে সাতটি তেলাপিয়া মাছের ব্রুড ছাড়তে হয় প্রতি ডেসিম্যালে ৫-৬ টি চিতল মাছ ছাড়লে এর জন্য পয়ত্রিশ থেকে চল্লিশটি তেলাপিয়া মাছের ব্রুড ছাড়তে হয় তেলাপিয়া মাছে বাচ্চা দেবে আর চিতল মাছ সেই গুলো খাবে।  

চিতল মাছ চাষের জন্য সর্বদাই বড় পুকুর নির্বাচন করা উচিত কারণ, যত বড় জলাশয় হবে চিতল চাষে তত লাভ হবে বড় জায়গাতে চিতল মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং লাভ বেশি হয়। বড় জায়গাতে একটি চিতল মাছ ১ বছরে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ কেজি ওজনের হয়।

যদি ১ একরের একটি জলাশয়ে কার্প জাতীয় মাছের সাথে চিতল মাছ চাষ করতে চান, তাহলে প্রতি ডেসিম্যালে ৬ টি করে চিতলের পোনা ছাড়তে হবে মোট ৬০০ টি ৬০০ টি মাছ ছাড়লে ১ বছর পরে ৫০০-৫৫০ টি চিতল মাছ পাওয়া যাবে যদি ৫০০ টি চিতল মাছ পাওয়া যায় এবং প্রতিটির ওজন ২ কেজির ওপর হয় এবংপ্রতি কেজি ৬০০ টাকা হারে চিতল মাছ বিক্রয় করা যায়, তাহলে প্রতি কেজি চিতল মোট বিক্রয় হবে (১০০০×৬০০) = ৬,০০,০০০ (ছয় লক্ষ টাকা) 

শুধু চিতল চাষ করেই এই পরিমাণ টাকা আয় করা যাবে এর সাথে কার্প জাতীয় ও তেলাপিয়া মাছ বিক্রয় করে লাভ আরো বেশি হবে এইরকম পদ্ধতি অবলম্বন করে চিতল মাছের লাভজনক মিশ্র চাষ করা যায় আবার চিতল মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি, তাই মিশ্র চাষে রোগ বালাই নেই বললেই চলে চিতল মাছের বাজার দর অনেক ভালো। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় এবং সরবরাহ তুলনামূলক কম থাকায় চিতল মাছ চাষ বেশ লাভজনক। চিতল সহ বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষের জন্য, মাছ চাষীদের প্রতিটি ব্লকে ফিশারী এক্সটেনশান অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। কিংবা জেলার মীন ভবনের মৎস্য আধিকারিকদের সহায়তা নিতে পারেন। 

তথ্যসূত্র - ড. সুমন কুমার সাহু , মৎস্য সপ্রসারন আধিকারিক, হলদিয়া

English Summary: The importance of clown knife fish is increasing in modern commercial fish farming
Published on: 21 October 2019, 08:35 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)