এবার AI এর সাহায্যে ছাগলের গর্ভধারণ করা হবে, জেনে নিন কীভাবে কাজ করবে এই প্রযুক্তি শীতকালে মাছ চাষ: জল ব্যবস্থাপনা এবং মাছের সঠিক যত্ন নেওয়া শিখুন! বাগমাল গুর্জরের সাফল্যের গল্প
Updated on: 14 January, 2021 4:05 PM IST
Fish Diseases (Image Credit - Google)

বিগত দশ বছরেরও অধিক সময় ধরে আমাদের রাজ্য তথা পশ্চিমবঙ্গ মৎস্য- উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে। কিন্তু তার পাশাপাশি আমাদের রাজ্যের জনসংখ্যার চাপও পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে। তাই মৎস্য উৎপাদন বাড়ানোর চাহিদা রয়েই যাচ্ছে। শুধু মাত্র মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে নয়, আমাদের রাজ্য মাছের চারা উৎপাদনের ক্ষেত্রেও এগিয়ে আছে। রাজ্যের মোট মৎস্য উৎপাদনের ৭৫% পশ্চিমবঙ্গ থেকেই আসে

মৎস্য চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন এমন চাষিদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আর চাষ লাভ করতে হলে মাছের বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে আমাদের চাষিভাইদের অবগত হতে হবে।

মাছের বিভিন্ন রোগ, লক্ষণ তার ও তার প্রতিকার (Types & Symptoms Of Fish Diseases)

পুকুরের মিষ্টি জলের মাছের বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকারের ব্যবস্থপনা নিয়ে আলোচনা

রোগ:

ফুলকা পচা (ছত্রাক ঘটিত রোগ)

লক্ষণ:

ফুলকার রঙ ক্রমশ সাদা হতে থাকে। মাছের শ্বাসকষ্ট হয় ও জলে ভাসতে থাকে।

প্রতিকার (Curement) :

  • জলের গভীরতা কমলে চলবে না।

  • ১০০ লি. জলে ৩ কেজি লবন বা ২০০ লি জলে ১ গ্রাম পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট গুলে আক্রান্ত মাছকে ৫-১০ মিনিট ডুবিয়ে ছেড়ে দিতে হবে।

রোগ :

লেজ ও পাখনা পচা (ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ)

লক্ষণ:

মাছের লেজ ও পাখনায় পচন ধরে ও খসে পরে।

প্রতিকার :

মাছের খাদ্যের সাথে বিঘা প্রতি ১০০ মিলি গ্রাম টেরামাইসিন বা সালফাডায়াস্কিন পর পর ৭ দিন দিতে হবে।

রোগ :

ড্রপসি বা উদরী রোগ (ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ)

লক্ষণ :

মাছের পেটে জল জমে যায় এবং আঁশ সামান্য খাঁড়া হয়ে থাকে।

প্রতিকার :

  • আক্রান্ত মাছকে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।

  • বিঘা প্রতি জলে ১-১.৫ কেজি পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট অল্প অল্প করে জলে গুলে পুকুরের জল শোধন করতে হবে।

  • সম্ভব হলে পুকুরের জল শুকিয়ে চুন প্রয়োগ করে পুকুর শোধন করতে হবে।

রোগ:

কাতলার চক্ষু রোগ  (ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ)

লক্ষণ :

প্রথমে চোখ ঘোলাটে হয়, পরে পচে গিয়ে সাদা হয়।

প্রতিকার :

লিটার প্রতি জলে ৮-১০ মিলিগ্রাম ক্লোরোমাইসেটিন মিশিয়ে মাছকে সেই জলে ১০ মিনিট ডুবিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। পর পর তিন দিন এই ভাবে চিকিৎসা করতে হবে।

রোগ :

মাছের উকুন (আরগুলাস নামের প্রানী)

লক্ষণ :

মাছ চঞ্চল হয়। পারে এসে গা ঘষতে থাকে, মাছের বৃদ্ধি কমে যায়।

প্রতিকার :

  • পুকুরের মাঝে বাঁশ পুতে দিলে সেগুলিতে গা ঘষে মাছ উকুন ঝেড়ে ফেলে।

  • বিঘা প্রতি জলে প্রতি মিটার গভীরতায় ৭৮০ গ্রাম গ্যামাক্সিন প্রয়োগ করে পুকুর শোধন করতে হবে।

  • বিঘা প্রতি জলে ২০ এম এল সাইপারমেথ্রিডিন সূর্যালোকের উপস্থিতিতে দিতে হবে।

রোগ :

সাদা গুটি ( মিক্সোস্পোরিডিয়াম নামে এক কোষি প্রাণী)

লক্ষণ :

মাছের গায়ে ও ফুলকায় সাদা গুটি দেখা যায়। মাছের বৃদ্ধি ব্যহত হয়। শিশু ও ছোট মাছে এই রোগ বেশী দেখা যায়।

প্রতিকার :

  • পুকুরে মাছের সংখ্যা কমাতে হবে।

  • তিন শতাংশ হারে লবন জলে মাছ ডুবিয়ে রেখে পুকুরে ছাড়তে হবে।

রোগ :

ক্ষত রোগ (এক্টিনোমাইসিস ব্যাকটেরিয়া)

লক্ষণ:

বর্ষার  শেষে মাছের গায়ে লাল লাল দাগ দেখা যায়। ক্রমে তা ক্ষত সৃষ্টি করে ও মাংশ পেশীতে পচন ধরে

প্রতিকার :

  • বিঘা প্রতি জলে ১৫-২০ কেজি চুন দিতে হবে।

  • জল শোধনের জন্য বিঘা প্রতি জলে প্রতি মিটার গভীরতায় ১২-১৩ গ্রাম মিথিলিন ব্লু দিতে হবে।

  • বিঘা প্রতি ২ কেজি চুন দিতে হবে।

রোগ :

মাছের কৃমি: (গাইরোডেক্টাইলাস ও ডেক্টাইলোগাইরাস নামের চ্যাপ্টা কৃমি)

লক্ষণ :

আক্রান্ত মাছ নিস্তেজ হয়ে পরে, উজ্জ্বলতা হারায় ও শেষে মারা যায়।

প্রতিকার :

তিন শতাংশ হারে লবন জলে পর পর কয়েকদিন ডুবিয়ে পুকুরে ছাড়তে হবে।

আরও পড়ুন - সুস্বাদু মাছ হিসেবে বাজারে বাড়ছে সরপুঁটি মাছের চাহিদা, বাড়ছে মাছ চাষিদের আয় (Sarputi Fish Farming)

English Summary: Types & symptoms of fish diseases and its curement
Published on: 14 January 2021, 04:05 IST