আমরা প্রত্যেকেই জানি একটি শুয়ো পোকা কীভাবে রুপ বদলে প্রজাপতিতে পরিণত হয়। অবাক বিষয় হল একটি শুঁয়োপোকার ছবি তুলতে কেউ আগ্রহ দেখায় না। কিন্তু শুঁয়োপোকা যখন প্রজাপতিতে রুপান্তরিত হয় তখন ছবি তুলতে ছোটাছুটি করেন বিশ্বের খ্যাতিমান ফটোগ্রাফাররাও। কারন একাধিক রঙ নিয়ে সেজে ওঠে প্রজাপতি। আপনাদের মনে কখনও প্রশ্ন জেগেছে, যে প্রজাপতি এত রঙের অধিকারী হল কীভাবে? বা সব প্রজাপতি একই রঙের হল না কেনো? জেনে নেব এই প্রশ্নের কি উত্তরে বিজ্ঞান কি বলছে।
বিজ্ঞানের মতে, প্রজাপতির একাধিক রঙের পিছনে মূলত তিনটি কারন রয়েছে। ওই তিনটি কারন হল, পিগমেন্টেড, স্ট্রাকচারাল এবং কালার এক্সটোর্ট।
পিগমেন্টেডঃ এটি হল সাধারণ রঙ গঠনের পদ্ধতি। জেনে রাখা ভালো মানুষের চামড়ার রঙ গঠন নির্ভর করে মেলানিন নামের এক ধরণের রঞ্জক পদার্থের জন্য। মেলানিন শরীরে অত্যাধিক পরিমানে থাকলে চামড়ার রঙ কালো হয়। মাঝারী পরিমানে থাকলে বাদামী বর্ণের হয়। এবং খুব সামান্য পরিমানে থাকলে চামড়া ফর্সা হয়। প্রজাপতির শরীরেও কমবেশি মেলানিন পরিমাণ বজায় থাকে। প্রজাপতির ক্ষেত্রেও একই কাজ করে। বেশি পরিমানে মেলানিন থাকলে ডানার অংশ কালো হয়। মাঝারী পরিমানে থাকলে বাদামী বর্ণের হয়। সামান্য পরিমানে থাকলে হলুদ রঙের হয়।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদ্ভিদের সন্ধান! আয়তনে প্রায় ২০,০০০ ফুটবল মাঠের সমান
স্ট্রাকচারালঃ শুধু মেলেনিন পদ্ধতিতে প্রজাপতির রঙ নির্ণয় হয় না। স্ট্রাকচারাল পদ্ধতিতেও রঙের আধিক্য লক্ষ্য করা হয়। প্রতিটি প্রজাপতির ডানা হাজার হাজার আঁশ দ্বারা আবৃত। আঁশগুলি দুটি তিনটি স্তরে সাজানো থাকে। আর এই প্রত্যেকটি স্তরের মাঝখান বায়ু দ্বারা পূর্ণ থাকে। সূর্য রশ্মি যখন প্রজাপতির ডানায় পড়ে, তখন ওই স্তরগুলির দ্বারা আলোর প্রতিসরণ ও প্রতিফলন ঘটে আমাদের চোখে এসে পড়ে। তাই বিভিন্ন শোভা পরিলক্ষিত হয়।
কালার এক্সটোর্টঃ এটা হল এক প্রকার রঙ শোষণ পদ্ধতি। বিভিন্ন জাতের প্রজাপ্রতি রঙ শোষণের ক্ষমতা আছে। ধরুন যে প্রজাপ্রতির রঙ লালা বর্ণের হয় ওই প্রজাপ্রতি লাল বর্ণ বাদে সূর্যের বাকি রঙ শোষণ করে নেয়। যখন এই তিনটি পদ্ধতি একই সময় ঘটে তখনই তাদের রঙের বাহার দেখতে পাওয়া যায়। তবে হ্যাঁ এই তিনটি পদ্ধতি যে একই সাথে কাজ করবে এমন কোনো কথা নেই। যদি একই সাথে কাজ করতো তাহলে সব প্রজাপতিকে একই রঙের দেখাতো।