পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যে প্রায় ৪৬ লক্ষ কৃষক ফসল বীমা প্রকল্প (বাংলা শস্য বিমা) প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। এই প্রকল্পটি সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য সরকারের আনুমানিক ব্যয়ের পরিমাণ ৪৫০ কোটি টাকা। রাজ্য কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় ২১ লক্ষ হেক্টর আবাদযোগ্য জমি ইতিমধ্যে ফসল বীমা প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বীমাকৃত প্রধান শস্য হল আমন ধান, আউশ ধান, পাট এবং ভুট্টা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুসরণ করে ২০১৮ সালের জুনে এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছিল। এটি রাজ্যের কৃষকদের জন্য অত্যন্ত উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। সরকার সম্পূর্ণ প্রিমিয়াম প্রদান করায় এই প্রকল্পটি কৃষকদের জন্য বিনামূল্যে এবছর করা হচ্ছে। কৃষকদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে এবং বাজারে অস্থিতিশীল দামের ক্ষেত্রে অবিচ্ছিন্ন আয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভারতের কৃষি বীমা সংস্থা (AIC) এর সহযোগিতায় ‘শস্য বীমা’ বীমা প্রকল্প প্রচলন করা হয়েছিল।
কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং অন্যান্য কারণে কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে গেলে তার ক্ষতিপূরণের উদ্দেশ্যে এই বীমার প্রচলন করেছে সরকার। এই প্রকল্পটি রোপণ, চাষাবাদ এবং ফসল সংগ্রহ পরবর্তী সময়ে ফসলের ক্ষেতে পড়ে থাকা এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত করে। অনেক কৃষকই তাদের ফসলের বীমা করিয়েছেন, কিন্তু দরকার পড়লে এই বীমার অর্থ কীভাবে আবেদন করবেন জানেন কী? দেখে নিন কৃষকবন্ধুরা প্রয়োজন পড়লে কীভাবে আপনাদের এই বীমার অর্থের জন্য আবেদন করতে হবে।
২০১৯-২০ বর্ষ থেকে বাংলা শস্য বীমা যোজনায় যে নতুন বিষয়গুলির সংযোজন ঘটেছে (That new things have been added from 2019-20) -
- কেসিসি (Kisan Credit Card) থাকলে লোণ এবং বীমা দুটির জন্য আবেদন করাই সহজ হবে। তবে নতুন নির্দেশিকা অনুসারে কেসিসি না থাকলেও এই বীমা করা যাবে।
- ২০১৯-২০ বর্ষেই বাঁকুড়া জেলার রবি মরসুমে বোরো ধান, গম, মুসুর, সরিষা, তিল, চীনাবাদাম এবং আলু- এই শস্যগুলি বীমার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
- রবি মরসুমে বোরো ধান, গম, মুসুর, সরিষা, তিল, চীনাবাদাম- এই শস্যগুলি বীমার প্রিমিয়ামের সম্পূর্ণ অর্থ পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিবহন করছে।
- শুধুমাত্র আলু এবং আখ এই দুটি বাণিজ্যিক ফসলের জন্য কৃষককে সর্বাধিক ৪.৮৫% প্রিমিয়াম জমা দিতে হবে। অবশিষ্ট প্রিমিয়াম রাজ্য সরকার বহন করবে।
এছাড়া রবি মৌসুমের গম, ভুট্টা, বেঙ্গল ছোলা, মসুর, সরিষা, আলু এবং আখের ফসল, এবং গ্রীষ্মকালীন ফসলের বোরো ধান, ভুট্টা, মুগ, তিল এবং বাদামের বীমা করা যেতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা ফসল বীমার জন্য ক্লিক করুন - (‘Bangla Shasya Bima Yojana’ free crop insurance) ‘বাংলা শস্য বীমা যোজনা’ – সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কৃষকদের জন্য ফসল বীমা, কৃষকবন্ধুরা আজই আবেদন করুন আর ফসলের সুরক্ষা সম্পর্কে নিশ্চিন্ত থাকুন
বীমার অর্থ দাবির আবেদন (Insurance claiming process) –
ফসলের ক্ষতি হলে আবেদনকারীকে/কৃষককে ৭২ ঘন্টার মধ্যে বীমাকৃত শস্যের তথ্য সরবরাহ করতে হবে। জরিপ নম্বর অনুসারে বীমাকৃত শস্য এবং আবাদ প্রভাবিত ক্ষেত্রের বিশদ থাকতে হবে। কৃষকের সকল তথ্য যাচাইয়ের পরে বীমার অর্থ প্রদান করা হবে।
এ বছর খারিফ শস্যের জন্য ইনসিওরেন্স কোম্পানি Agriculture Insurance Company of India Ltd এবং এর টোল ফ্রি নম্বর ১৮০০৫৭২০২৫৮।
অধিক জানতে লগ ইন করুন https://banglashasyabima.net/
বিশদ তথ্যের জন্য, আবেদনকারী অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টর অফ এগ্রিকালচার অফিসে (ADA) অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন বা টোল ফ্রি নাম্বার ১৮০০-১০৩-১১০০ –এ কল করতে পারেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য - আমন ধান-এর বীমা করার শেষ তারিখ – ৩১/০৮/২০২০।
Image Source - Google
Related link - (Crop protection) আরও চারটি প্রধান ফসল এখন পিএমএফবিওয়াই-এর আওতায়, ফসল বীমার মাধ্যমে এই মরসুমে শস্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন